প্রার্থনা আর আনুষ্ঠানিকতায় বিশ্বজুড়ে নববর্ষ উদযাপন

  • ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নববর্ষের প্রার্থনা

নববর্ষের প্রার্থনা

প্রার্থনা আর আনুষ্ঠানিকতায় বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে। বর্ষবরণ উপলক্ষে নানা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় স্থানগুলোতে আয়োজন করা হয়েছিল আলোকসজ্জার ব্যবস্থা। বিশ্বের মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ কিরিবাতির বাসিন্দারা প্রথম নতুন বছরকে বরণ করে নেন।

বরাবরের মতো, হংকং, সিডনি এবং দুবাইতে মনোমুগ্ধকর আতশবাজির প্রদর্শন ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনিরো এবং নিউইয়র্ক সিটিতে সবচেয়ে বড় উদযাপন হয়েছে। ব্রাজিলের কোপাকাবানা সমুদ্র সৈকতে ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার মূর্তির সামনে নতুন বছরের উদযাপনের সময় আতশবাজি পোড়ানো হয়। এসময় পুরো রিও ডি জেনিরোর আকাশ আলোকিত হয়ে যায়। কোপাকাবানা সমুদ্র সৈকতে প্রতি বছর আনুমানিক দুই মিলিয়ন লোক আসে।

বিজ্ঞাপন

বার্লিনের ব্র্যান্ডেনবার্গ গেট এবং প্যারিসের আর্ক ডি ট্রায়ম্ফেসহ ইউরোপজুড়ে, ২০২৪ সালকে বরণ করতে তাদের আইকনিক ল্যান্ডমার্কগুলোতে জড়ো হোন। নতুন বছরের শুরুতে আতশবাজি দেখতে হাজার হাজার মানুষ লন্ডন এবং এডিনবার্গের রাস্তায় জড়ো হয়েছিলেন। নাইজেরিয়ার লাগোসে নতুন বছর উদযাপন উপলক্ষে ক্লাবে কনসার্ট করেছে।

প্যারিস গেটে জমকালো আয়োজন আর বর্ণিল আতশবাজি

নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ারে জড়ো হওয়া দর্শনার্থীদের প্রায় সবাই হাতে বেলুন নেড়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে। নববর্ষের সময়ে আইকনিক বল ড্রপের সুন্দর দৃশ্য দেখতে এখানে প্রতি বছর কয়েক লাখ লোক টাইম স্কয়ারে জড়ো হয়। দীর্ঘ প্রতীক্ষা করে এবং প্রিয়জনের জন্য ভালো জায়গা রাখতে সেখানে অনেককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবস্থান করতেও দেখা যায়।

বিজ্ঞাপন

টাইমস স্কয়ারে ঘুরতে আসা মিশিগানের মাইক গ্যালারোভিক সিবিসি নিউজকে বলেন, তার অন্তত সাতবার এখানে আসার অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি স্কটল্যান্ডে গিয়েছি, অস্ট্রিয়ায় ছিলাম, গত বছর এস্তোনিয়ায় ছিলাম কিন্তু নতুন বছরের জন্য আমি সবসময় টাইমস স্কয়ারে ফিরে আসি। আজ রাতে এটি সত্যিই পৃথিবীর কেন্দ্র।

নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে বর্ণিল আতশবাজি

দক্ষিণ আমেরিকার অন্য দেশগুলোর মতো চিলির আকাশেও প্রদর্শিত হয়েছে ব্যাপক আতশবাজি। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া, পুয়ের্তো রিকো এবং কানাডার নোভা স্কোটিয়া অনেক দেরিতে ২০২৪ সালে প্রবেশ করেছে এবং কানাডার পূর্বে নিউফাউন্ডল্যান্ড ও ল্যাব্রাডরে আরও পরে আসে নববর্ষ।

মেক্সিকো সিটিতে ২০২৪ সালের শুরু উদযাপন করতে হাজার হাজার লোক জড়ো হয়। এসময় তারা রিফর্মা অ্যাভিনিউতে ভিড় করে এবং মধ্যরাত পর্যন্ত আতশবাজি প্রদর্শন এবং রাস্তার কনসার্ট উপভোগ করে।

নববর্ষে বিশ্বজুড়ে আলোর ঝলকানি


 

লাস ভেগাসে ২০২৪ সালের শুরু ধাক্কা দিয়ে উদযাপন করছে। আতশবাজি দিয়ে স্বাগত জানানোর বিশাল প্রদর্শন দেখতে লাখ লাখ মানুষ স্ট্রিপ বরাবর জড়ো হয়েছিল। শহরটির কর্তৃপক্ষ বলেছে, নববর্ষের উদযাপনে ৪ লাখেরও বেশি লোকের সমাগম হয়েছিল।

মেয়রের কার্যালয় থেকে জানান হয়েছে, লন্ডনের শো'তে ২০০০ আতশবাজি, ৬০০টি ড্রোন, ৪৩০টি লাইট এবং গানের বিভিন্ন সাউন্ডট্র্যাক ও ভয়েস-ওভার ক্লিপ ব্যবহার করা হয়েছে।

একে টেমস নদীর ওপর সর্বকালের সবচেয়ে বড় আতশবাজি, আলো এবং ড্রোন শো" বলে অভিহিত করা হয়েছে। এসময় একটি রেকর্ড করা বার্তা সম্প্রচার করা হয়। এতে বলা হয়, লন্ডনে বছরের সবচেয়ে বড় রাত্রি আমাদের সমাজের বৈচিত্র্য উদযাপন করে আমাদের নতুন রাজা মহারাজ তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।

নববর্ষ বরণে অংশ নিয়েছে লাখো মানুষ

মেয়র সাদিক খান একে লন্ডনের এখন পর্যন্ত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্ববৃহৎ উদযাপন বলে অভিহিত করে বলেছেন, এটি একটি বার্তা, কেন লন্ডন বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ শহর।

শো'টির ডিজাইন করেছিলো কেমব্রিজশায়ার ভিত্তিক পাইরোটেকনিক ফার্ম টাইটানিয়াম ফায়ারওয়ার্কস।

এদিকে প্যারিস আর্ক ডি ট্রায়মফের ওপরে একটি বিস্ময়কর আতশবাজি প্রদর্শনের মাধ্যমে ২০২৪ সালকে স্বাগত জানিয়েছে। এছাড়াও প্যারিসের চ্যাম্পস এলিসিস এভিনিউতে আনুমানিক ১৫ লাখ লোক নববর্ষের উৎসবের জন্য জড়ো হয়েছিল। ফ্রান্স এই বছর তার উদযাপনের জন্য নিরাপত্তা জোরদার করতে সারা দেশে ৯০ হাজারের বেশি আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা মোতায়েন করেছে। যার মধ্যে ৬ হাজার শুধু রাজধানীতেই ছিল।

আতশবাজির উৎসব

শুধু পার্টি নয় প্রার্থনার মাধ্যমেও ২০২৪ সালকে স্বাগত জানানো হয়েছে। আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার লাগোসে গির্জায় উপাসকরা নববর্ষের শুরুতে একটি উপাসনায় যোগ দেন। এদিকে জাপানের টোকিওর পূর্বে নারিতাতে লক্ষাধিক লোক নতুন বছরের প্রার্থনার জন্য জড়ো হয়েছিলেন। থাইল্যান্ডের পাথুম থানি প্রদেশের ওয়াট ফ্রা ধম্মকায়া মন্দিরে নতুন বছরের সূচনা উপলক্ষে সকালে ভিক্ষা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। কেনিয়ার নাইরোবির কিবেরায় নববর্ষের শুরুতে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। নতুন বছর উপলক্ষে প্রার্থনা করা হয়েছে- ভ্যাটিকান সিটি এবং ব্যাংককের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মধ্যেও।