ভারতীয় ট্রাকের পাথর কুড়িয়ে সংসার চালান সোলোকি বেগম
-
-
|

রাস্তায় ঝাড়ু দিয়ে পাথর কুড়াচ্ছেন সোলোকি বেগম, ছবি- বার্তা২৪.কম
ঝাঁড়ু হাতে সকাল সকাল নাতনীকে নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের জিরো লাইনে গৃহবধূ সোলোকি বেগম (৩৪)। এরপর নেমে পড়েন সড়কে পড়ে থাকা পাথর জড়ো করতে। ঝাঁড়ু দিয়ে সড়কে পড়ে থাকা পাথর কুড়িয়ে জমা করছেন নাতনী ও সোলোকি বেগম। এভাবে পাথর কুড়িয়ে সংসার চলে তার। স্বামী মোহাম্মদ আলী কোন কাজ না করায় গত প্রায় ৬-৭ বছর ধরে এভাবেই পাথর কুড়িয়ে সংসার চালান সোলোকি বেগম।
শনিবার (০৮ মার্চ) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরের জিরো লাইনে তাকে পাথর কুড়াতে দেখা যায়।
সেলোকি বেগমের বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলা শাহবাজপুর ইউনিয়নের বালিয়াদিঘী গণকরব সংলগ্ন এলাকায়। তার স্বামী মোহাম্মদ আলী কোন কাজকর্ম না করায় গত ৬-৭ বছর আগে থেকে কাজ শুরু করেন পাথর কুড়ানোর।
জানা যায়, দুই মেয়ে রয়েছে সোলোকি বেগমের। এরমধ্যে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। আরেক মেয়েকে নিয়েই পাথর কুড়ানোর কাজ করেন তিনি। ভারত থেকে আসা পাথরের ট্রাক থেকে রাস্তায় পড়ে যাওয়া পাথর কুড়ান সোলোকি বেগম। প্রত্যেকদিন পাথর কুড়িয়ে জমা করেন। এক টিলার পাথর হতে লাগে অন্তত ১০-১২ দিন। এসব পাথর বিক্রি করেন ২৮০০-৩০০০ টাকায়। এই টাকা দিয়েই সংসার চালান সোলোকি বেগম।
প্রতিবেশি আরকেশা বেগম বার্তা২৪.কমকে বলেন, তার (সোলোকি বেগম) স্বামী কোন কাজকর্ম করেনা। বেকার বাড়িতে অলস হয়ে বসে থাকে। তাই সংসার চালানোর তাগিদে নিজেই নেমে পড়েছেন কাজে। ভারত থেকে আসা ট্রাকের পড়ে যাওয়া পাথর কুড়িয়েই তার সংসার চলে। এমনকি এই কাজ করে এক মেয়ের বিয়েও দিয়েছে সোলোকি বেগম।
তিনি আরও বলেন, সোলোকি বেগমের বাবা-মা কেউই নাই। আমরা যতদূর জানি, ছোট বয়সেই বাবা-মাকে হারিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে সে। তার বাবা-মা ভারতে বসবাস করলেও কোন যোগাযোগ নেই। অনেকদিন আগেই ভারত থেকে এসে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের বালিয়াদিঘী গ্রামেই এখন বসবাস করে।
সোলোকি বেগম বার্তা২৪.কমকে বলেন সংসার চালানোর তাগিদে বাধ্য হয়েই কাজ করতে হয়। সীমান্ত এলাকায় বাসা হওয়ায় ভারতীয় ট্রাক থেকে রাস্তায় পড়ে থাকা পাথর কুড়িয়ে তা বিক্রি করে সংসার চলছে। এখানে আমার মতো আরও কয়েকজন নারীও এখানে পাথর কুড়ানোর কাজ করছে। ফলে আগের মতো আর তেমন লাভ হয়না। কোনক্রমে সংসার চালানোর মতো টাকা পাওয়া যায় কুড়িয়ে পাওয়া পাথর বিক্রি করে। এনিয়েই চলছে আমাদের।
সোলোকি বেগমের মতো আরও অন্তত ৭-৮ জন নারী সোনামসজিদ স্থলবন্দরে পাথর কুড়ানোর কাজ করে বলে জানান স্থানীয়রা। তারা প্রত্যেকেই একেক এলাকা থেকে সড়কের পাথর কুড়ায়।