টেনেসির ম্যাডিসন কাউন্টির একটি পেট্রোল পাম্পে চুরির ঘটনায় ব্যবহার করা হয়েছে সাপ! সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, চারজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি চুরির আগে ক্যাশিয়ারকে বিভ্রান্ত করতে দুটি বল পাইথন ব্যবহার করেছেন।
ফুটেজে দেখা যায়, এক পুরুষ সন্দেহভাজন কাউন্টারে একটি সাপ রেখে দেন, আর এক নারী ক্যাশিয়ারের সামনে আরেকটি সাপ ঝুলিয়ে দেন। ক্যাশিয়ার যখন হতভম্ব হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, তখনই তারা ৪০০ ডলার মূল্যের সিবিডি তেল নিয়ে পালিয়ে যান।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় অলাভজনক সংস্থা ৭৩১ ক্রাইম স্টপার্স সিসিটিভি ফুটেজ অনলাইনে প্রকাশ করে অপরাধীদের সন্ধানে পুলিশের সহযোগিতা চায়। সন্দেহভাজনরা একটি কালো সেলুন গাড়িতে পালিয়ে যান, যা বুটটি বাঞ্জি কর্ড দিয়ে বাঁধা ছিল।
চুরি হওয়া সিবিডি (ক্যানাবিডিওল) তেল সাধারণত উদ্বেগ ও মৃগীরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। তবে এই চুরির ঘটনায় সাপের ব্যবহার বিষয়টিকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে। পুলিশ এখন অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে, আর ঘটনাটি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
উর্দু ও ফার্সি ভাষায় পন্ডিত হাকিম হাফেজ আবদুল মজিদের আগ্রহ ছিল চিকিৎসা শাস্ত্রে। ইউনানি বিদ্যায় দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। ব্রিটিশ ভারতের যে সময়টায় তিনি কাজ করতেন তখন পানিশূন্যতা, হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়াতে মারা যেত মানুষ। কোরআনে হাফেজ এই ভদ্রলোককে বিষয়টি বেশ পীড়া দিত। ১৯০৬ সালে দিল্লিতে নিজ এলাকায় তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন ‘হামদর্দ।’ ফার্সি এ শব্দের বাংলা হচ্ছে সহানুভূতি।
একশো বছরেরও বেশি সময় পরেও হাকিম হাফেজ আবদুল মজিদকে মনে রেখেছে উপমহাদেশের মানুষ। কারণ ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশে তুমুল জনপ্রিয় শরবত ‘রুহ আফজা’ তাঁরই আবিষ্কার। প্রচণ্ড গরমে তো বটেই, রমজান মাস এলেই রুহ আফজা এই তিন দেশেই দারুণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। রুহ আফজা ছাড়া ইফতারটা কোনো ভাবেই যেন পরিপূর্ণ হয় না।
১৯০৬ সালে রুহ আফজা তৈরি করেন আবদুল মজিদ। উদ্দেশ্য ছিল প্রচন্ড গরম থেকে মানুষের শরীরকে কিছুটা রক্ষা করা। নিজের মেধা ও পাণ্ডিত্য দিয়ে মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর এ পানীয়টি তৈরি করতে বেশ কষ্টও করেছেন তিনি। হাকিম এমন একটা কিছু তৈরি করতে চেয়েছিলেন যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। একটি মুসলিম দাওয়াখানা থেকে উদ্ভব এই পানীয় কিন্তু হয়ে ওঠে সর্বভারতীয় পানীয়।
মেধাবী এই হাকিম ১৯২২ সালে মাত্র ৪০ বছর বয়সে মারা যান। এরপর তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা হাল ধরেন হামদর্দ এর।
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের আঁচ লাগে রুহ আফজাতেও। আবদুল মজিদের বড় ছেলে ভারতেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন। ছোট ছেলে হাকিম মোহাম্মদ সাইদ পাকিস্তানে চলে যান। সেখানে হামদর্দ গড়ে তোলেন। যা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানেও কাজ করত। হাকিম মোহাম্মদ সাইদের মেয়ে সাদিয়া রশিদ জানান, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পূর্ব পাকিস্তানের হামদর্দ অংশটি বাংলাদেশের মানুষের জন্য উপহার দেন তিনি।
তিন দেশেই গৌরব ও আবেগের সাথে মানুষে ঘরে ঠাঁই নিয়েছে হাকিম হাফেজ আবদুল মজিদের এই অমর সৃষ্টি। রুহ আফজা নিয়ে রীতিমত গর্বিত ভারত। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে রুহ আফজার বিস্তৃতি নানা ভাবে তুলে ধরে দেশটি। এখন পাকিস্তান-বাংলাদেশে পৌঁছে গেলেও দিল্লির হাউজ কাজী এলাকায় শুরু হয়েছিল পানীয়টির যাত্রা। যা এখনো চলছে। চলছে না কেবল শরবতের রাজ্যে রাজত্ব করছে।
বেশ থলথলে দেহ। পাশাপাশি আঠালোও। গভীর জলের এই মাছের নাম ব্লব ফিশ। দেখতে অনেকেরই ভালো লাগে না বলে ২০১৩ সালে জুটেছিল বিশ্বের কুৎসিত প্রাণীর খেতাব। অবশেষে সেই ‘কুৎসিত’ প্রাণীর ভাগ্যেই জুটেছে বর্ষসেরা মাছ এর খেতাব। এ যেন মর্যাদা ফিরে পাওয়ার জয় ব্লব ফিশের।
ব্লব ফিশ এখন নিউজিল্যান্ডের বর্ষসেরা মৎস্য।
চলতি সপ্তাহে নিউজিল্যান্ডের একটি পরিবেশভিত্তিক সংগঠন ভোটাভুটির মাধ্যমে ব্লব ফিশকে বর্ষ সেরা মৎস্য হিসেবে ঘোষণা করে। সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে নিউজিল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ ও সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাউন্টেন টু সি কনজারভেশন ট্রাস্ট এই আয়োজন করে।
অনেক বেশি জেলাটিনসমৃদ্ধ মাছটি লম্বায় ত্রিশ সেন্টিমিটারের মত হয়। অস্ট্রেলিয়া ও তাসমানিয়া উপকূলের কাছে ব্লব ফিশের দেখা মেলে বেশি। তবে দুই হাজার থেকে চার হাজার ফুট পানির নিচে থাকতে এরা পছন্দ করে। শামুক ও সাগরের ছোট কীটের পাশাপাশি কাঁকড়া ও লবস্টারও ব্লব ফিশের প্রিয় খাবার।
আকৃতি, শরীরের গঠনে চিরচেনা মাছের মত নয় বলেই ‘কুৎসিত’ এর তকমা লেগেছিল ব্লব ফিশের কপালে। সেজন্যই কিনা ব্লব ফিশের প্রতি মায়ায় জড়ালো মানুষ। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় রেডিও শো গুলোতে রীতিমত ভোট প্রার্থনা করা হয়েছে মাছটির জন্য।
নিউজিল্যান্ডের ৫ হাজার ৫৮৩ জন ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন বর্ষসেরা মাছ। ব্লব ফিশ ১ হাজার ২৮৬ ভোট পেয়ে খেতাব জিতে নেয়।
মাউন্টেন টু সি কনজারভেশন ট্রাস্টের মতে, শীর্ষ ১০ মাছের মধ্যে নয়টি প্রজাতিই বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। আর এই ঝুঁকির তালিকায় আছে ব্লবফিশও।
ভারতের মাথুরা ও বৃন্দাবন শহর দুটি বানর আতঙ্কের জন্য বেশ সুপরিচিত। এখানে হরহামেশাই বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায় বানরদল। পরবর্তীতে খাবারের বিনিময়ে সেগুলো আবার ফিরিয়েও দেয়।
তেমনি ভাবে বৃন্দাবনে এক ব্যক্তির কাছ থেকে তার ব্যবহৃত ‘স্যামসাং এস২৫ আল্ট্রা’ মডেলের স্মার্টফোনটি নিয়ে নিয়েছিল একটি বানর। পরবর্তীতে একটি ফ্রুটির বিনিময়ে ফোনটি মালিকের কাছে দিয়ে দিয়েছেন বানরটি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে বেশ আলোচনার জন্ম দেয়।
রোববার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কার্তিক রাথৌডের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বানরটি একটি বারান্দায় বসে আছে, ফোনটি ধরে আছে। নীচে, তিনজন ব্যক্তি মরিয়া হয়ে ফ্রুটির একাধিক প্যাক অফার করে এর ফেরত নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছেন। তবে বানরটি নড়াচড়া করতে নারাজ ছিলল। এরপর হঠাৎ করে একটি ফ্রুটি বানরটি নাগালে চলে যাওয়ায় সেটি সে তার অধীনে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ফোনটিও ফেরত দিয়ে দেয় বানরটি।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশ আলোচনা তৈরি করেছে এই ঘটনা।অনেকেই বানরদের চতুর কৌশলে মজা প্রকাশ করে বলেছেন, যে তারা ফোন এবং চশমার মতো মূল্যবান জিনিস চুরি করার একটি ধূর্ত কৌশল তৈরি করেছে, শুধুমাত্র খাবারের বিনিময়ে সেগুলি ফেরত দেওয়ার জন্য।
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, "এই মুহুর্তে, আমি নিশ্চিত যে তারা শুধুমাত্র ইচ্ছাকৃতভাবে প্রাণী হিসাবে কাজ করে।" অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, "তিনি বিনিময় ব্যবস্থা জানেন।"
তৃতীয় একজন বলেছেন, "বানরটি তার সেরা জীবন যাপন করছে- চ্চ মূল্যের ব্যবসা এবং একটি বিনামূল্যে পানীয়।" চতুর্থ একজন যোগ করেছেন, "কল্পনা করুন আপনার বীমা কোম্পানিকে ব্যাখ্যা করছেন যে একটি বানর আপনার ফোন চুরি করেছে এবং এটি একটি জুসের বাক্সের জন্য ব্যবসা করেছে।"
দুবাইয়ে বাংলাদেশি প্রবাসীদের রমজান: শ্রম, সিয়াম ও সম্প্রীতির গল্প
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সংযুক্ত আরব আমিরাত
|
ছবিঃ বার্তা২৪
ফিচার
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রাণকেন্দ্র দুবাইয়ে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য রমজান এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে। ধর্মীয় অনুশাসন পালনের পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রম করেই তাদের দিন কাটে।
দুবাইয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশী প্রবাসীরা সাধারণত গড়ে ৮-১০ ঘণ্টা কাজ করেন। তবে রমজান মাসে সরকারি এবং কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মঘণ্টা কিছুটা কমানো হয়, যা প্রবাসীদের জন্য স্বস্তির বিষয়। অনেকেই নির্মাণশিল্প, রিটেইল, ডেলিভারি বা হসপিটালিটি সেক্টরে কাজ করেন, যেখানে রোজা রেখে দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রম করাটা চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে।
রমজানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন চ্যারিটি সংস্থার উদ্যোগে মসজিদ ও অভিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় ইফতার বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়। এসব ইফতার প্যাকেটে থাকে খেজুর, পানি, জুস, ফল, মাংস ও বিরিয়ানিসহ নানা জাতের ইফতার আইটেম। অনেক প্রবাসী কর্মব্যস্ততার কারণে বাসায় ইফতার তৈরির ঝামেলা এড়াতে এসব জায়গা থেকে ইফতার সংগ্রহ করেন। আসরের নামাজের পর স্থানীয় বাসিন্দাদেরও পথচারীদের মধ্যে ইফতার বিতরণ করতে দেখা যায়।
ইফতারের আগ মুহূর্তে এসব রেস্তোরাঁয় প্রচুর ভিড় জমে
বাংলাদেশী প্রবাসীদের মধ্যে ইফতার আয়োজনের প্রচলন বেশ পুরোনো। অনেকেই মসজিদ, কর্মস্থল বা বন্ধুবান্ধবদের সাথে মিলিত হয়ে ইফতার করেন। দুবাইয়ের বাংলাদেশি হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, জিলাপি ও হালিমসহ দেশীয় খাবারের বিশাল সমাহার থাকে। ইফতারের আগ মুহূর্তে এসব রেস্তোরাঁয় প্রচুর ভিড় জমে। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও ইফতার আয়োজন করা হয়।
রমজানের শেষ দশকে প্রবাসীরা ঈদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। নতুন জামা কেনা, পরিবার-পরিজনের জন্য উপহার পাঠানো এবং ঈদের ছুটিতে প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানোর পরিকল্পনা করেন তারা। কেউ কেউ ঈদের ছুটিতে দেশে ফেরার চেষ্টা করেন, তবে অনেকে কর্মব্যস্ততার কারণে ভিডিও কলের মাধ্যমেই স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেন।
প্রবাসীদের অভিমত অনুযায়ী, বাংলাদেশেও আরব দেশগুলোর মতো বিত্তবান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর উদ্যোগে সব শ্রেণির রোজাদারদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করা উচিত।
ফরিদ উদ্দিন, দুবাইয়ে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, “রমজানে কাজ করতে কষ্ট হলেও আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ শক্তি দেন। ইফতারির জন্য স্থানীয়রা প্রচুর সাহায্য করে। তাছাড়া, বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যেও একে অন্যকে সহযোগিতা করার মানসিকতা অনেক বেশি।”
বাংলাদেশী প্রবাসীদের মধ্যে ইফতার আয়োজনের প্রচলন বেশ পুরোনো
ফরহাদ আহমেদ, একজন রেস্টুরেন্ট কর্মী, বলেন, “দুবাইতে ইফতার আয়োজন খুব সুন্দরভাবে হয়। আমাদের রেস্টুরেন্টেও বিশেষ ইফতার মেনু থাকে, যা বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য বাড়তি আনন্দ নিয়ে আসে। দেশের খাবার খেয়ে মনে হয় যেন বাংলাদেশেই আছি।”
আসমা আক্তার, একটি অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তিনি বলেন, “রমজানে প্রবাসে এক ধরনের একাকিত্ব অনুভব হয়। তবে এখানে মসজিদগুলোতে পরিবেশ এত ভালো যে, ইবাদতে মন বসে। কাজের ব্যস্ততার মধ্যেও ইফতার ও নামাজের জন্য সময় বের করতে পারি, যা রমজানের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।”
দুবাইয়ে বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য রমজান শুধু ইবাদতের মাস নয়, এটি পারস্পরিক সহযোগিতা ও ঐক্যের প্রতীক হয়ে ওঠে। কর্মব্যস্ততার মাঝেও তারা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং সামাজিক সম্পর্ক বজায় রেখে রমজান উদ্যাপন করেন।