বর্তমানে দেশ ও জাতি একটা কঠিন সময় অতিবাহিত করছে। এর থেকে উত্তরন এখনকার বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) হোটেল রেডিসনে কূটনৈতিক ও রাজনীতিবীদদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবছর রমজানে এই আয়োজন করে আসছে।
তিনি আরও বলেন, ঐক্য বাংলাদেশের জন্য সবসময়ই শক্তি। বাঙ্গালী তাদের সকল আন্দোলন সংগ্রামে চরম সফলতা পেয়েছে যখন সমগ্রজাতি ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছে। কিন্তু এখন আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি অহেতুক দ্বন্দ্ব ঐক্য বিনষ্ট করছে। এমন বিভাজন দেখছি যা সমাজকে ক্ষত বিক্ষত করছে। এমন কার্যকলাপ চোখে পড়ছে যা আমাদের সমৃদ্ধ ও সহনশীল ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমরা যে বাংলাদেশকে চিনি এবং ভালবাসি সেখানে এমন ঘটনা অনভিপ্রেত।
জিএম কাদের বলেন, আমাদের জনগণ সর্বদা শান্তি, সম্প্রীতি এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার মূল্য দিয়েছে। আমাদের অবশ্যই ঐক্যের পথকে নতুন করে আবিষ্কার করতে হবে। এই যাত্রা শুরু করার জন্য পবিত্র রমজান মাসের চেয়ে আর কি ভালো সময় হতে পারে? আসুন রমজান অনুপ্রানিত করে, এমন সহানুভূতির, সমঝোতার, বন্ধুত্বের চেতনাকে আমরা আলিঙ্গন করি। আসুন আমরা একসাথে হাতে হাত মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটি উজ্জল ভবিষ্যৎ গড়তে কাজ করি। এমন একটি ভবিষ্যৎ যেখানে শান্তি ও সম্প্রীতি বিরাজ করবে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সহনশীল হব। জাতি হিসেবে বাংলাদেশ সবসময়ই 'সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বিদ্বেষ নয়' নীতি লালন করেছে। এটি হল সেই পথপ্রদর্শক আলো, যা আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের পথকে আলোকিত করে। এটি অবশ্যই নিজস্ব সীমানার মধ্যেও আমাদের আলিঙ্গন করতে হবে।
তিনি বলেন, রমজান শুধু খাবার এবং পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকার মাস নয়। এই মাস আমাদের সংযম শেখায় সহমর্মিতা শিক্ষা দেয়। একজন মানুষ যখন রোজা রাখে তখন সে বুঝতে পারে, না খেয়ে থাকার কষ্ট কেমন। এই মাস আমাদের নতুনভাবে নিজেকে পরিশুদ্ধ হবার তাগিদ দেয়। মানুষের প্রতি সহানুভুতিশীল হওয়ার ও মমত্ববোধের শিক্ষা দেয়।
ইফতার মাহফিলে রাজনীতিবীদদের মধ্যে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
কূটনৈতিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রনয় কুমার ভার্মা, বৃটিশ হাইকমিশনার সারা কুক, চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, রাষ্ট্রবাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ে রাষ্ট্রদূত, রাশিয়ার উপ রাষ্ট্রদূত, নেপালের ফাস্ট সেক্রেটারি, যুক্তরাষ্ট্র, অষ্ট্রেলিয়া, সুইডেন, জার্মানি, ইইউ, ইরান, কসোভো, ইতালি, আর্জেন্টিনা, ভ্যাটিকান সিটির প্রতিনিধিগণ অংশ নেন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো- চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ।