খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম অর্ধেক, কমেছে ছোলা-চিনির দর

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকায় নেমেছে, আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। সরবরাহ বাড়ায় ছোলা, চিনি ও খেসারির দাম কমেছে, তবে করলা, ঢেঁড়স ও পটলের মতো কিছু সবজির দাম এখনো বেশি। অপরদিকে, মুরগির বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও দাম বেড়েছে, যা ভোক্তাদের কষ্ট বাড়াচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

দুই সপ্তাহ আগেও দেশি পেঁয়াজ ৩০-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ২০ টাকায় নেমেছে। ভারতীয় পেঁয়াজের দামও ১০-১৫ টাকা কমে ৪০ টাকায় স্থির হয়েছে।
এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. রফিক বলেন, দেশি পেঁয়াজের উৎপাদন বেশি হয়েছে, আর ভারত থেকেও প্রচুর পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। ফলে সরবরাহ বেশি থাকায় দাম কমছে।

এদিকে, ছোলার দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে এখন ৮৫ টাকায় নেমেছে, খেসারি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। চিনির দামও মনপ্রতি (৩৭.৩২ কেজি) ৭০ টাকা কমে ৪,১৩০ টাকা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, এখন বাজারে কোনো সংকট নেই। সব ধরনের পণ্য প্রচুর পরিমাণে মজুত আছে। কিন্তু মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম। এ কারণে পেঁয়াজ, ছোলা, চিনি, খেসারির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেছে।

সবজির বাজারে স্বস্তি, তবে কিছু পণ্যের দাম এখনো বেশি রমজান শুরুর পর থেকেই বাজারে সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। টমেটো, শিম, কাঁচা মরিচ, বেগুন, শসা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও গাজরের দাম গেল দুই সপ্তাহে ৫-১০ টাকা কমেছে।

নগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে টমেটো ১০-১৫ টাকা, শিম ৪০, কাঁচা মরিচ ৪৫-৫০, ছোট বেগুন ৩০-৪০, শসা ৪০-৫০, মিষ্টি কুমড়া, গাজর ও লাউ ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে করলা, ঢেঁড়স, পটল, বরবটি ও পেঁপের মতো বারোমাসি সবজির দাম এখনো চড়া। করলা ৯০, ঢেঁড়স ৮০, পটল ৭০, বরবটি ৬০ ও পেঁপে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

চকবাজারের সবজি বিক্রেতা সোহেল রানা বলেন, রমজানে কিছু সবজির চাহিদা কম থাকায় দাম কমেছে। তবে করলা, ঢেঁড়স, পটলের সরবরাহ কম, তাই এগুলোর দাম বেশি। তবে সামনে এসবের দাম কমতে পারে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে ২০৫ টাকায় উঠেছে। সোনালি মুরগির দামও ২০ টাকা বেড়ে ৩৩০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির দাম ছুঁয়েছে ৬০০ টাকা কেজি, আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৯৫০ টাকা দরে।

নগরীর বহদ্দারহাটে বাজার করতে আসা গৃহিণী তাসলিমা আক্তার বলেন, সবজির দাম কমলেও মাংস ও মুরগির দাম বেশি থাকায় বাজার খরচ কমছে না। বিশেষ করে মুরগির দাম প্রতিদিনই বাড়ছে, যা মধ্যবিত্তের জন্য কষ্টদায়ক।

অন্যদিকে, মাছের বাজার তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও কিছু মাছের দাম বেড়েছে।

অক্সিজেন বাজারের মাছ বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, তেলাপিয়া ও পাঙাসের দাম কিছুটা কমলেও পাবদা, রুই, কাতল, পোয়া ও মৃগেলের দাম বেশি রয়েছে। তবে সরবরাহ ঠিক থাকলে সামনে মাছের দাম কমতে পারে।

বাজারগুলোতে বর্তমানে তেলাপিয়া মাছ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, আর পাঙাসের দাম ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। পাবদা মাছের কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে।

রুই মাছের দাম ৩২০ টাকা কেজি, কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি দরে, আর পোয়া মাছের কেজি ২৬০ টাকা। লইট্টা মাছের দাম ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি, আর মৃগেল ২২০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে বেশ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম কমলেও মাংস ও মুরগির দাম বাড়তি থাকায় সাধারণ ভোক্তারা স্বস্তি পাচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ ঠিক থাকলে সামনে আরও কিছু পণ্যের দাম কমতে পারে।