পবিত্র রমজান মাসে রাস্তা অবরোধ করে সভা-সমাবেশ না করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
রোববার (১৬ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর সমাগত। এ উৎসবের প্রস্তুতির পাশাপাশি রমজান মাসের এ সময়ে নগরীর সড়কসমূহে যানবাহনে পর্যাপ্ত মানুষ যাতায়াত করে।
কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ের নামে কথায় কথায় রাস্তা অবরোধ করে নগরবাসীর জীবনযাত্রা কঠিন করে তুলছে। এর ফলে ট্রাফিক পুলিশকেও নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
এমতাবস্থায়, নগরবাসীর সুবিধার্থে মাহে রমজানের বাকি সময়গুলোতে রাস্তা-ঘাট অবরোধ করে অহেতুক জনভোগান্তি তৈরি না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানা এলাকার বাশপট্রি বেড়ীবাঁধ, জোলাপট্রি, কিল্লার মোড় এলাকার চিহ্নিত চাদাবাজ মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ওরফে নান্নু ফকির (৪৫) ও তার ছেলে মো. আসাদকে (২২) আটক করেছে আজিমপুর সেনাক্যাম্পের সদস্যরা।
রোববার (১৬ মার্চ) রাতে চকবাজারের বাশপট্রি এলাকায় চাদাবাজি করা কালিন সময়ে হাতে নাতে আটক করা হয় নান্নু ও তার ছেলেকে। রাতেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৪৬ বিগ্রেডের আজিমপুর ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা।
এ সময় তার কাছে চাঁদাবাজির ১৮ হাজার ৭০০ টাকা পাওয়া যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পতিত শেখ হাসিনার শাসনামলেও নান্নু এলাকার বিভিন্ন রিক্সার গ্যারেজ ও ফুটপাতের দোকানপাট থেকে চাঁদা আদায় করতো। পাঁচ আগস্টের পর নান্নু স্থানীয় এলাকার সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক এক নেতা ছত্রছায়ায় চাদাবাজি করে আসছিলো।
রোববার সন্ধ্য্যায় চাঁদা আদায় কালে সেনাসদস্যরা তাকে আটক করে। রাতেই তাকে চকবাজার থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে চাদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়।
বুফে ইফতার পেয়ে উচ্ছাসিত এতিম ও মাদ্রাসার ৯০ শিক্ষার্থী
আল মামুন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
|
ছবি: বার্তা২৪.কম
জাতীয়
দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করায় তারা যেতে পারে না বড় বড় বুফেতে। অনেকেই আবার বুফে খাবার কিভাবে নিতে হয় তাও জানে না তারা। নিম্ন আয়ের পরিবারের লোকজনের জন্য বুফে খাওয়া অনেকটাই ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য। মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যয়বহুল বুফে ইফতার খাওয়া স্বপ্নের মত। মাদ্রাসা ও এতিমখানার ৯০ জন শিক্ষার্থীকে এমন স্বপ্ন পূরন করে বুফের স্বাদ নেয়ার পরিবেশ করে দিয়েছে আশ্রয় বিদ্যাপীঠ ও আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় এক্স ষ্টুডেন্ট এসোসিয়েশন।
সোমবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের খোলা মাঠে আশ্রয় বিদ্যাপীঠ ও আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় এক্স ষ্টুডেন্ট এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে এই বুফে ইফতারের আয়োজন করা হয়। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৩ সালের ব্যাচ এতে অর্থ সহায়তা দেন। এতে অংশ নেন উপজেলার তিনটি মাদ্রাসা ও এতিমখানার ৯০ জন শিক্ষার্থী।
আয়োজকেরা জানান, ২০১৯ সাল থেকে হতদরীদ্র, অসহায় পরিবার ও পথশিশুদের পড়াশুনার জন্য ভ্রাম্যমান একটি স্কুল দিয়ে যাত্রা শুরু করে আশ্রয় বিদ্যাপীঠ নামে একটি সামাজিক সংগঠন। এর পরে করোনাকালীন সময়ে তারা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কাজে এগিয়ে আসে। এছাড়াও রক্তদান, রমজানজুড়ে ইফতার বিতরণ ও কোরবানির ঈদে মাংস সংগ্রহ করে তা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়াসহ নানান সামাজিক কাজে এগিয়ে আসায় উপজেলাজুড়ে তাদের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় এক্স ষ্টুডেন্ট এসোসিয়েশনও তাদের সাথে একাত্মতা পোষন করে কাজ করতে থাকে। তাদের আয়েজনে থাকে ব্যতিক্রমতা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের খোলা মাঠে মাদ্রাসা ও এতিমখানার ৯০ জন শিক্ষার্থীদের জন্য বুফে ইফতারের আয়োজন করা হয়। ব্যতিক্রম আয়োজনে খেজুর, ফ্রাইড রাইস, চিকেন ফ্রাই, কোল্ড ড্রিংকস, ডিম চম, আলুর চপ, পিয়াজু, বেগুনি, তরমুজ, মাল্টা, আঙুর, বড়ই, শরবত ও পানিসহ ১৪ রকমের ইফতার তৃপ্তিসহ নিজের মত করে নিতে পেরে খুশি বাচ্চারা। এমন আয়েজনে কখনো দেখেনি উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আগে কখনো এমনভাবে বুফ ইফতার খাইনি। বুফে খেতে পেরে আমাদের অনেক ভাল লাগছে। পাশাপাশি এমন আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখার ইচ্ছা পোষন করেছে আয়োজকেরা।
শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান উচ্ছাস প্রকাশ করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, লাইনে দাড়িয়ে নিজ হাতে যতটুকু দরকার ইফতার নিতে পেরেছি। অনেক ভাল লাগছে। এমনভাবে আমরা আগে কখনো খাইনি।
আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় এক্স ষ্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াসি উদ্দিন নাসিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রতি বছর আশ্রয় বিদ্যাপীঠ ও আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় এক্স স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে হতদরিদ্র ও আশ্রয়হীন লোকজনের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এই রমজানে এতিমখানা ও কয়েকটি মাদ্রাসার দরিদ্র শিক্ষাদের বুফে ইফতারের আয়োজন করা হয়। বুফে ইফতারে ১৪ ধরনের খাবার দেয়া ছিল। শিক্ষাথীরা তাদের পছন্দমত বিভিন্ন খাবার নিয়ে খোলা মাঠে বসে খেয়েছে। নিজ হাতে নিয়ে এই খাবার খাওয়ায় তারা তৃপ্তি পেয়েছে।
আশ্রয় বিদ্যাপীঠের উপদেষ্টা মো. জাফর আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ব্যতিক্রম আয়োজন নিয়ে আমরা প্রতিবছরই অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাড়িানোর চেষ্টা করি। এবারও সেটাই করেছি। ভবিষ্যতে আমাদের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সিবিএ এর সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক বলেন, কোরআনের হাফেজ হবেন যে বাচ্চারা তাদের সাথে খোলা মাঠে ইফতার করার মজাটাই আলাদা। মানসিক একটা তৃপ্তি এখানে। এই আয়োজন যারা করেছে তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।
ভোলার মনপুরায় এক নারীকে ৪ যুবক মিলে রাতভর গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতভর উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের পূর্বপাশে নতুন বেড়ীর পাশে খেজুর গাছের নিচে রাতভর এই গণধর্ষণের ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
শনিবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০টায় ওই ধর্ষিতা নারী গণধর্ষণের অভিযোগে ৪ যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। পরে সকাল ১১ টায় মনপুরা থানার ওসি আহসান কবিরের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ২ যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। অপর ২ যুবক পলাতক থাকায় আটক করতে পারেনি পুলিশ।
আটকৃত দুই যুবক হলেন, উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নসু মাঝির ছেলে মোঃ শরীফ (২১), অপরজন হলেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানার পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুদল বারেক হাওলাদারের ছেলে মোঃ আকবর আলী (৩২)। মামলায় পলাতক অপর আসামীরা হলেন, রায়হান ও আল-আমিন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০ টায় উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ছাত্তার মিয়ার বাড়ির নতুন বেড়ীর বাঁধের পূর্বপাশে খেজুর গাছের নিচে ৪ যুবক মিলে রাতভর গণধর্ষণ করে এক নারীকে। পরদিন শনিবার সকাল ১০ টায় ওই নারী মনপুরা থানায় গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ এনে চার যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দুই আসামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। অপর দুই আসামী পলাতক থাকায় পুলিশ ধরতে পারেনি।
ঘটনার বিষয়ে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান কবির জানান, চার যুবক মিলে এক নারীকে গণধর্ষণ করে। থানায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার ২ আসামীকে আটক করেছে। পলাতক অপর ২ আসামীকে ধরতে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করছে।
কুমিল্লা নগরীর একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নিহত ইমরান হোসেন (২১) কুমিল্লা নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ড ২য় মুরাদপুর এলাকার দুবাই প্রবাসী হুমায়ুন মিয়ার ছেলে।
রোববার (১৬ মার্চ) রাতে কুমিল্লা নগরীর নজরুল অ্যাভেনিউ এলাকার ট্রমা হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই নিহতের আত্মীয় স্বজনেরা ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে দাবি তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর করে।
নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, ইমরান হোসেন দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলো। পরে, কুমিল্লা নগরীর ট্রমা হাসপাতালে ডা. আতাউর রহমানের কাছে চিকিৎসা নিয়ে আসলে চিকিৎসক ইমরানকে সার্জারি করার পরামর্শ দেন। পরে, শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল আটটায় সার্জারি করার উদ্দেশ্যে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। চার ঘণ্টার অপারেশনের সময়ের কথা জানালেও অপারেশন সম্পন্ন হয় সাত ঘণ্টায়। পরে, রোগীর অবস্থায় অবস্থার অবনতি হলে রোগীকে ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। পরে, ঘটনার দিন রবিবার বিকালে রোগীর কোনো সাড়া শব্দ না পাওয়ায় রোগীর স্বজনরা রোগী মারা গেছে দাবি করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে লাইফ সাপোর্টে নেয়ার কথা বলে। বিকাল পার হয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলে নি। বরং রোগীকে আরো পরীক্ষা নিরিক্ষা ও ঔষধ আনায় রোগীর স্বজনদের দিয়ে।
নিহত ইমরানের চাচা জাকির হোসেন বলেন, আমার ভাতিজাকে তারা সামান্য অপারেশনের কথা বলেছিলো। কিন্তু, তারা সাত ঘণ্টা ওটি তে রেখেছিলো। পরে রোগীর সমস্যা হয়েছে এ কথা বলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার কথা বলে। আমরা রাজি হই। কিন্তু লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার পর প্রায় ৩ দিন হয়ে গেলেও তারা আমাদের রোগীকে দেখতে দেয় নি। পরে নানা অযুহাতে আইসিউতে ঢুকে দেখি যে আমাদের রোগী মৃত। কিন্তু তারপরেও তারা আমাদের কাছ থেকে মৃত রোগীর চিকিৎসা করানোর জন্য পরীক্ষা ফি ও ঔষধ কিনিয়েছে আমাদেরকে দিয়ে। তারা আমাদেরকে ২৫ হাজার টাকার অপারেশনের কথা বলে তারা আমাদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেয় ধাপে ধাপে। একজন রোগীর ৩ দিনে লাখ টাকার ঔষধ কিভাবে লাগে। তাদের গাফিলতির কারণে আমাদের রোগী মারা গেছে। আমরা এর বিচার চাই।
এদিকে, রোগী মারা যাওয়ার খবর জানাজানি হলে বিক্ষুদ্ধ স্বজনেরা হাসপাতাল ভাঙচুর করে। এ ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে ঘটনাস্থলের নিয়ন্ত্রণ নেন।
এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা ট্রমা হাসপাতালের পরিচালক আবদুল হককে একাধিকবার কল দিলেও তাকে পাওয়া যায় নি।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর মো. বশির আহমেদ বলেন, আমি এই বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে আমি এর তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।