কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদবঞ্চিতদের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। তাদেরকে গুরুতর অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার (১৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, আজ রোববার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদবঞ্চিতদের একটি অংশ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বর্তমান কমিটির নেতাকর্মী এবং নাগরিক কমিটির কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কমিটিতে ছাত্রলীগ কর্মীদের পদ দেয়া হয়েছে দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের ঈদগাহপাড়া থেকে। মিছিলটি কুষ্টিয়া কাটাইখানা মোড়স্থ সমবায় মার্কেটের সামনে পৌছলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ তাদের ধাওয়া করে। এসময় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়ার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতালেও হামলার ঘটনা ঘটে।
এদিকে হাসপাতালে উভয় গ্রুপের হামলা হলেও কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশকে নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকতে দেখা গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদবঞ্চিদের পক্ষে অবস্থান নেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব সুজন মাহমুদ জানান, আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির লোকজন। আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সুলতান মারুফ তালহা, মুজাহিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম জহির, সদস্য সচিব রেদোয়ান আফ্রিদি, কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আহ্বায়ক জুবায়ের, ইব্রাহীম, নয়ন হোসেন প্রমুখ। তারা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীরা বলেন, রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আয়াস, আকাশ, রাসেলসহ তাদের লোকজন এ হামলা করেছে। এতে ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক সায়াদ ইসলাম শ্রেষ্ঠ, হুমাইরা কবির সাদিয়া, মুখ্য সংগঠক এম ডি বেলাল হোসেন বাঁধনসহ শতশত নেতাকর্মী। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফেসবুক লাইভে জানান, কিছু সন্ত্রাসী আমাদের কাটাইখানা মোড়ে লাইব্রেরীর সামনে এসে হুমকি ধামকি দেয় এবং পরে কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ মাঠে আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে তাদেরকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানান তিনি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক অফিসার (আরএমও) ডা. হোসেন ইমাম বলেন, ‘বেশ কয়েকজন আহত অবস্থান হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তাদের চিকিৎসা সেবা চলছে।’
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।’