বেতন-ভাতা ছাড়া ১০১ দিনের উপদেষ্টা হতে চান ‘দেশপ্রেমিক’ সিরাজ-উদ-দৌলা
-
-
|

ছবি: সংগৃহীত
বেতন-ভাতা ছাড়া ১০১ দিন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সুযোগ চেয়েছেন উত্তরাঞ্চলের মো. সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী নামের এক বাসিন্দা।
সোমবার (৩ মার্চ) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে সিরাজ-উদ-দৌলা বলেন, ‘আমাদের দেশ এখন উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তবে উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য সকল অঞ্চলের সঠিক প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল এবং এই অঞ্চলের জনগণের স্বার্থ ও সমস্যাগুলো নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী বলেন, “উত্তরাঞ্চল আমাদের দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেখানে শিক্ষা, কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। অথচ অবকাঠামো, দারিদ্র্যবিমোচন, স্বাস্থ্যসেবা, ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এ অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে রয়েছে। এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে হলে নীতিনির্ধারণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উত্তরাঞ্চলের একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রতিনিধি থাকা অত্যাবশ্যক। রংপুরে বাসন্তী এবং আবু সাঈদের ধাক্কা শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা সামাল দিতে পারেনি। মনে রাখবেন উত্তরবঙ্গে ভেড়া বাস করে না, বাস করে অনেক বড় বাঘ। শহিদ আবু সাঈদের প্রাণত্যাগ এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল সৌন্দর্য হল বৈষম্য দূরীকরণের দায়বদ্ধতা।”
তিনি আরও বলেন, “আমি প্রধান উপদেষ্টার প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, অবিলম্বে উত্তরাঞ্চলের একজন উপযুক্ত ও যোগ্য ব্যক্তিকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করুন। এতে কেবল উত্তরাঞ্চলের জনগণই উপকৃত হবে না। বরং এটি সুষম উন্নয়ন ও জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন ঘটাবে।”
তিনি বলেন, “দুঃখজনক হলেও সত্যি, এতদিনেও বৃহত্তর, রংপুর, দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গ থেকে একজন উপদেষ্টা হওয়ার মতো অথবা নেওয়ার মতো একজনও যোগ্য লোক যখন পাওয়া যায়নি, সেই মুহূর্তে আমি মহা. সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী নিজেকে একজন সিনিয়র উপদেষ্টা হওয়ার মতো যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে মনে করছি। তাই বেতন-ভাতা ছাড়াই একজন সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে আমাকে ১০১ দিনের জন্য কাজ করার সুযোগ দিন। আমি সিনিয়র উপদেষ্টা হলে অন্যান্য উপদেষ্টাদের চেয়ে অনেক ভালো কাজ করব ইনশাল্লাহ।”
আশা প্রকাশ করে সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী বলেন, ব্য“ক্তিগত জীবনে আমি কোনো দলের সাধারণ সদস্যপদ নেইনি। কিন্তু সিনিয়র রাজনীতিবিদদের সান্নিধ্যে থেকে রাজনীতিতে স্বশিক্ষিত হয়েছি। এই আত্মবিশ্বাস থেকে আমি বলতে পারি আমাকে উপদেষ্টা পরিষদের সিনিয়র সদস্য হিসেবে নিয়োগ দিলে উত্তরাঞ্চলকে সারা দেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে পারব। আমি আশা করি, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমার এই যৌক্তিক দাবিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন।”
মাত্র ২ সপ্তাহের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগ ঠিক করার কথা জানিয়ে সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী বলেন, “আমি সিনিয়র উপদেষ্টা হলে মাত্র দুই সপ্তাহে দেশের ‘ল’ অ্যান্ড অর্ডার ইনশাল্লাহ পুরোপুরি ঠিক করে দেব। উত্তরবঙ্গের মানুষের প্রতি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না দিয়ে দিল্লি যে অবিচার আমাদের প্রতি করছে, সেরকমই উত্তরবঙ্গের প্রতি উপদেষ্টা না দিয়ে চরম অবিচার করছে ঢাকা।”
তিনি বলেন, “আমি সিনিয়র উপদেষ্টা হলে গাভির কাছ থেকে যেভাবে গোয়াল দুধ দোহন করে সেভাবে ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আমি আদায় করব ইনশাআল্লাহ।”