প্রাকৃতিকভাবে গর্ভধারণ ক্ষমতা বাড়াতে জীবনধারা
-
-
|

গর্ভবতী মায়ের যত্ন / ছবি: সংগৃহীত
সন্তান জন্মদানের অনুভূতি একইসঙ্গে পৃথিবীর সবচেয়ে পীড়াদায়ক এবং আনন্দঘন অনুভব। মাসের পর মাস শরীরের ভেতরে একটি প্রাণের বেড়ে ওঠা, তাকে কোলে তুলে নেওয়ার দিনটির জন্য অপেক্ষা করা প্রতিটি নারীর স্বপ্ন। একটি শিশুর জন্মদানের ঘটনাটি খুব সাধারণ হলেও সহজ নয়। অনেক নারী বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা করে যান একটি প্রাণের সঞ্চারের অপেক্ষায়। অনেকের এই সাধারণ স্বপ্নটিও অধরা থেকে যায় আজীবনের জন্য!
দীর্ঘদিন গর্ভধারণের চেষ্টা করে যাওয়ার পরও যখন ফলাফল নেতিবাচক হয়, তখন হতাশার গভীরতা গ্রাস করতে শুরু করে। বিশ্বজুড়ে অনেক নারী সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে নানা ছোট-বড় অসুবিধার সম্মুখীন হন। দেখা যায় এখন এটি একটি সাধারণ সমস্যার পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আগের তুলনায় বন্ধ্যাত্বের হার এখন বিশ্বব্যাপী অনেক বেড়েছে।

কারো ক্ষেত্রে সমস্যা অনেক গুরুতর এবং দুরারোগ্য। আবার অনেকের সমস্যা চিকিৎসার মাধ্যমে সমাধান করে গর্ভধারণের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করা সম্ভব। তবে সাবধানতার মার নেই। জীবন যাপনের যে অভ্যাসগুলো ধরণ গর্ভধারণের উর্বরতা কমানোর ক্ষেত্রে প্রভাব প্রভাব ফেলতে পারে, সেসব ত্যাগ করা উচিত। পাশাপাশি প্রাকৃতিকভাবে গর্ভধারণের উর্বরতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। ভারতীয় চিকিৎসক হিতেশা রমনানি রোহিরা এই ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন।
ওজন: অতিরিক্ত ওজন বা কম ওজন শরীরের জন্য ঠিক নয়। অন্যান্য সমস্যার সঙ্গে নারীদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রেও অনিয়ন্ত্রিত ওজন সমস্যা করতে পারে। যেমন সঠিক ওজন না থাকলে অনিয়মিত মাসিক চক্রের সমস্যা হয়।
অ্যালকোহল: মদ্যপানের অভ্যাস শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অনেক অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্থ করার পাশাপাাশি বন্ধ্যাত্বর জন্যও দায়ী হতে পারে। তাই কোনো নারীর মদ্যপানের অভ্যাস থাকা ভালো নয়। যদি অভ্যাস থাকেও, গর্ভধারণ কালীন সময় অ্যালকোহল পান করা বন্ধ করুন। নয়তো গর্ভজাত শিশুর ক্ষতি হয়।
ধূমপান: মদ্যপানের মতো ধূমপানও শিশু জন্মদানের প্রকি্রয়া ব্যাহত করতে পারে। নারীদের ধূমপানের ফলে ডিম্বাশয়ের রিজার্ভ কমে যায়, ডিম্বাণুর গুণমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস করে এবং শুক্রাণুর গুণমানকেও প্রভাবিত করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র্যাডিকেল নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করে। যা মূলত পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে যথাক্রমে শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু উভয় কোষকেই ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই গর্ভধারনের প্রস্তুতিকালে প্রতিদিনের খাবারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বাড়াতে পারেন। সেক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় আরও ফল, শাকসবজি, বাদাম এবং শস্যজাতীয় অর্থাৎ ফাইবারজাতীয় খাবারের আধিক্য রাখুন।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড খান: চর্বি এমন একজাতীয় খাবার, যার ব্যাপারে খুব সচেতন থাকা জরুরি। কেননা অতিরিক্ত চর্বি যেমন শরীরে জমে অযাচিত ওজনবৃদি্ধর কারণ হয়; অপরদিকে স্বাস্থ্যকর চর্বি খাওয়া শরীরে তাপ উৎপাদন এবং সুস্বাসবথ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মাতৃত্ব উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে। চর্বিযুক্ত মাছ, আখরোট এবং চিয়া বীজে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে ।
ক্যাফেইন: প্রতিদিন ২০০ মিলিগ্রামের কম ক্যাফেইন পান করা বেশি ক্ষতিকর নয়। দিনে এক বা দুই কাপ কফিতেই সাধারণত ২০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। এর বেশি পান করলে তা গর্ভধারণের ক্ষমতা কমিয়ে ফেলতে পারে।
তথ্যসূত্র: নিউজ১৮