আফটার স্কুল মাকতাবের উদ্যোগে স্কুল শিক্ষার্থীদের কোরআন উৎসব
-
-
|

আফটার স্কুল মাকতাবের উদ্যোগে স্কুল শিক্ষার্থীদের কোরআন উৎসব, ছবি: সংগৃহীত
আফটার স্কুল মাকতাব বাংলাদেশের উদ্যোগে দারুল আরকাম ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে নতুন শিক্ষার্থীদের কোরআনে কারিমের সবক প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (৮ মার্চ) আফটার স্কুল মাকতাবের ২৫০ জন শিক্ষার্থীকে কোরআনে কারিমের সবক প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে কোরআন খতমকারী এবং সূরা ইয়াসিন, ফজিলতের সূরা ও কোরআনে কারিমের বিশেষ পারার হেফজ করায় ৬৫ জন স্কুল শিক্ষার্থীকে প্রদান করা হয় বিশেষ সম্মাননা ও সনদ।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আফটার স্কুল মাকতাব বাংলাদেশের প্রধান কার্যালয় দারুল আরকাম ইনস্টিটিউট।
দারুল আরকাম ইনস্টিটিউট ২০০৯ সাল থেকে প্রায় দেড়যুগ ধরে মাকতাব শিক্ষা নিয়ে কাজ করে আসছে।
মুসলমানদের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাকতাব শিক্ষাকে যুগ চাহিদার প্রেক্ষিতে সংস্কার করে একাডেমিক পদ্ধতিতে স্কুল শিক্ষার্থীদের কাছে কোরআন ও ইসলামের মৌলিক শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দারুল আরকাম ইনস্টিটিউট কিশোরগঞ্জসহ সারাদেশে পরিচালনা করছে আফটার স্কুল মাকতাব কার্যক্রম।
এ প্রসঙ্গে দারুল আরকাম ইনস্টিটিউট ও আফটার স্কুল মাকতাব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম বিশেষত স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের কাছে ঈমান- আকিদা ও কোরআনি শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা ২০০৯ থেকে কাজ করে যাচ্ছি। একটি আদর্শ, নীতিবান, দায়িত্ব সচেতন ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন প্রজন্ম গঠনের ক্ষেত্রে কোরআনি ও ধর্মীয় শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রজন্মের ঈমান-আকিদা, ধর্মীয় চেতনা ও মূল্যবোধ রক্ষা করা আমাদের ঈমানি ও জাতীয় দায়িত্ব। এই দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা দেশব্যাপী পরিচালনা করছি আফটার স্কুল মাকতাব কার্যক্রম। আমরা নতুন প্রজন্মকে কোরআনের আলোয় আলোকিত করতে চাই। ধর্মীয় চেতনা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়ে তাদেরকে নৈতিক পদস্খলন, অন্ধকার জগত ও ধর্মহীন কর্মকাণ্ড থেকে রক্ষা করে আদর্শ মুসলিম নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তাই আফটার স্কুল মাকতাব শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি তাদের মাঝে দ্বীনি ও কোরাআনি কালচার প্রতিষ্ঠার লক্ষে আমাদের এই আয়োজন। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের এই উদ্যোগ ও আয়োজন নতুন প্রজন্মকে সুস্থ ও সুন্দর আগামীর পথে পরিচালিত করবে- ইনশাআল্লাহ।
প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা জানান, দারুল আরকাম ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য পরিচালিত হচ্ছে দুইটি বিভাগ। এক. আফটার স্কুল মাকতাব বিভাগ। এই বিভাগে স্কুল শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন মাত্র এক ঘণ্টা সময় দিয়ে কোরআন, সুন্নাহ, ইসলামি আকিদা, ফিকহ ও ইসলামি শিষ্টাচার ইত্যাদি দ্বীনের মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জ্ঞানার্জন করছে।
দুই. আফটার স্কুল হিফজ বিভাগ। আফটার স্কুল মাকতাবের নির্দিষ্ট সিলেবাস সম্পন্নকারী মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে আফটার স্কুল হিফজ কার্যক্রম। ইতিমধ্যে পাঁচজন শিক্ষার্থী স্কুলে নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি আফটার স্কুল হেফজ বিভাগ থেকে কোরআনে কারিমের হেফজ সম্পন্ন করেছে।
এ বিষয়ে এক অভিভাবক বলেন, আমরা চাই আমাদের সন্তানরা স্কুল শিক্ষার পাশাপাশি কোরআন ও ধর্মীয় শিক্ষা গুরুত্বের সঙ্গে অর্জন করুক। দারুল আরকাম ইনস্টিটিউট আফটার স্কুল মাকতাবের যে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তা খুবই উপকারী। আমরা আমাদের সন্তানদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করছি, বিশেষত তাদের আদব-আখলাক ও ব্যবহার অনেক উন্নত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের কোরআনে কারিমের সবক প্রদান করে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক নদভী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, দারুল আরকাম ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত আফটার স্কুল মাকতাবের বিভিন্ন শাখার দায়িত্বশীল ও উস্তাদবৃন্দ এবং কিশোরগঞ্জের স্থানীয় উলামায়ে কেরাম।
দিনব্যাপী এ আয়োজনে ছিল আফটার স্কুল মাকতাবের শিক্ষার্থীদের নানা শিক্ষামূলক প্রদর্শনী, কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামি সঙ্গীত।
দারুল আরকাম ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত আফটার স্কুল মাকতাব কার্যক্রমের মাধ্যমে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় মূল্যবোধে সমৃদ্ধ হয়ে গড়ে উঠবে আমাদের নতুন প্রজন্ম এমনটাই প্রত্যাশা অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টদের।