বিত্তশালীদের নতুন ভূ-স্বর্গ হতে যাচ্ছে রাস আল খাইমা
-
-
|

বিত্তশালীদের নতুন ভূ-স্বর্গ হতে যাচ্ছে রাস আল খাইমা
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজ্য দুবাইকে কোটিপতিদের সব থেকে পছন্দের জায়গা মনে করা হয়। তবে খুব শিগগিরই বিত্তশালীদের পছন্দের শহর হয়ে উঠেছে আমিরাতের আরেক শহর রাস আল খাইমা। মনে করা হচ্ছে এটি হতে চলছে আরবের শেখ এবং বিত্তশালীদের নতুন ভূ-স্বর্গ। এর মধ্যেই চলছে নানা পরিকল্পনা।
কোটিপতিদের শহর দুবাইকে পেছনে ফেলে নতুন এক দুবাই মাথা তুলে দাঁড়াতে যাচ্ছে পারস্য উপসাগরের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে। বিত্তশালীদের শহর হিসেবে যে দুবাইয়ের খ্যাতি রয়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে সে দুবাইয়ের পরিবর্তে ধনকুবেরের নতুন ঠিকানা হতে যাচ্ছে রাস আল খাইমা। দুবাইয়ে বিশ্বের নামিদামি হোটেল, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, সাজানো গোছানো রাস্তাঘাট, নান্দনিক নির্মাণশৈলী। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং বুর্জ খলিফা, যার কারণে বিশ্বে দুবাই সুপরিচিত।

পারস্য উপসাগরের পশ্চিম প্রান্তে থাকা রাস আল খাইমা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বিলাশবহুল ইমারত তৈরি হয়েছে। আমেরিকার লাস ভেগাসের একটি সংস্থা ৩৯০ কেটি ডলার দিয়ে একটি বিশাল প্রকল্প চালু করেছে রাস আল খাইমা অঞ্চলে।
রাস আল খাইমার শাসক হলেন শেখ সৌদ বিন সাকর আল কাসিমি। আপাতত আমিরাতকে অর্থনৈতিকভাবে আরও সমৃদ্ধি করার দায়িত্ব তিনি তার মেয়ে আমনে আল কাসিমের ওপর দিয়েছেন। আমনের হাত ধরেই দ্রুত বদলে যাচ্ছে রাস আল খাইমা।

পর্যটন বিশেষজ্ঞদের দাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিনিয়োগের পরিবর্তে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রকল্পের কারণেও অনেক বিত্তশালী রাস আল খাইমাতে বিনিয়োগ করতে পারে। যার ফলে এই শহরটি খুব শিগগিরই আরবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরে পরিণত হবে। যা পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে টেক্কা দিতে পারে দুবাইকেও।
রাস আল খাইমা এক সময় বিশাল বিশাল পাহাড় এবং সিরামিকের জন্য বিখ্যাত ছিলো। এখন তা ধীরে ধীরে বিত্তশালীদের আশ্রয়স্থল এবং আমোদ কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। এখানে তৈরি করা হচ্ছে হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং রিসোর্ট। দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে রাস আল খাইমার দূরত্ব ৪৫ মিনিটের। মনোরম পরিবেশের জন্য অনেক দিন ধরে পর্যটকদের আকর্ষণের জায়গা এটি। রাস আল খাইমার কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে বিদেশি সংস্থাদের বিলাসবহুল হোটেল, শিল্প এবং পর্যটনের মতো ক্ষেত্র তৈরি করতে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। বিশ্বের উচ্চ বিত্তশালীদের বিনিয়োগ করার জন্য পরিকল্পনা চলছে।
আমিরাতের অন্যান্য শহরের তুলনায় আয়তনে রাস আল খাইমা ছোট হওয়ার কারণে বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে রাস আল খাইমার কর্তৃপক্ষকে।
এর আগে, বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে উদ্যোগী হলেও পরবর্তীতে তা বাতিল করতে হয়েছে। অনেক আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থান হিসেবে পছন্দের ছিলো রাস আল খাইমা। বর্তমান প্রশাসন আরও দৃঢ় প্রত্যয় যে পর্যটকদের উন্নতমানের জীবন যাত্রার পরিসেবা দেওয়া হলে সেখানে ব্যবসার প্রসার আরও বাড়বে। ভাবা হচ্ছে পশ্চিমা দেশের তুলনায় ২০৩০ সালের মধ্যে রাস আল খাইমায় বর্তমানের চেয়ে বার্ষিক পর্যটকদের সংখ্যা ৪ গুণ বাড়বে এবং সেই সঙ্গে বাড়বে জনসংখ্যাও।
রাস আল খাইমাহ নামের অর্থ ‘তাঁবুর মূলভূমি’। নৌ-চলাচলের সুবিধার্থে সেখানে একটি তাঁবু নির্মিত হওয়ার পরে এই শহরটির এবং এর মূল আমিরাহ'র এমন নামকরণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আমির-শাসিত রাস আল খাইমাহ সংযুক্ত আরব আমিরাতে যোগদান করে।