নারী দিবস ঘিরে তিন তারকার ভাবনা
-
-
|

ঐশী, নওশাবা ও কোনাল
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীদের অধিকার ও মর্যাদা উদযাপনে শতাধিক বছর ধরে দিনটি পালিত হয়ে আসছে। বিশেষ এই দিনে দেশ যে বিশেষ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তাতে কেমন আছেন শোবিজের নারীরা? এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় তিন নারী তারকা
সোমনুর মনির কোনাল
সোমনুর মনির কোনাল
সঙ্গীতশিল্পী
নারী দিবস নিয়ে কিছু বলতে আমার লজ্জা হচ্ছে। কী বলব? এই ছোট্ট একটা শিশু ধর্ষিত হলো নিজের বোনের বাড়িতে গিয়ে। একজন মানুষ হিসেবেও কিছু বলার মুখ আছে আমাদের? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আঙিনায় এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তা কিংবা মাগুরায় নিজের বোনের বাড়িতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশু; এসব ঘটনা সাধারণ মনে যেমন আতঙ্ক তৈরি করছে, তেমনি শঙ্কিত হচ্ছেন শোবিজের নারীরাও। তার ওপর গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন একাধিক অভিনেত্রী। পণ্ড করে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এসব নিয়ে অল্পবিস্তর প্রতিবাদও হয়েছে। তবে এসব ভেবে যখন ‘কেমন আছি’র জবাব দিতে হয়, তখন উত্তর আলাদাই হয়।
কাজী নওশাবা আহমেদ
কাজী নওশাবা আহমেদ
অভিনেত্রী
আমি তো ব্যক্তিজীবনে কারো মা, বোন, সন্তান। সে দিক থেকে একজন মানুষ হিসেবে খুব ব্যথিত এবং শঙ্কিত। মাগুরায় যে ঘটনা (শিশু ধর্ষণ) ঘটল, ঝিনাইদহে মাদরাসার এক ছাত্র কমলা খাওয়ায় যে প্রহারের শিকার হলো; এসব শুনে বা দেখে ভালো থাকার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। আমার মেয়েটা ভালো আছে, এখন রমজান চলছে, সামনে ঈদ, এসব ভেবে হয়তো ভালো আছি। কিন্তু আশপাশের পরিস্থিতি দেখে ভালো থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন আয়োজনে অভিনেত্রীদের প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হচ্ছে। এটা মোটেও ভালো ঘটনা না। আমরা তো সংস্কৃতির ধারক। আমাদের সঙ্গে এ রকম হওয়া তো উচিত নয়। এই যে মন্দ দিকের কথা বলছি, সেই সঙ্গে ভালোটাও বলতে হবে। যেমন আমরা রংপুরে পথনাটকের উৎসব করে এলাম। উপচেপড়া ভিড় ছিল মানুষের। হাউসফুল শো। সেটার কথাও তো সামনে আসা দরকার। এটা ঠিক যে চারপাশের নানা ঘটনায় আমরা ট্রমাটাইজড হয়ে আছি। তার মানে কিন্তু এই নয় যে দর্শক আসছেন না। দর্শক তৈরি করাও তো আমাদেরই দায়িত্ব। আমি মনে করি, বাঙালি সাহসী জাতি, কখনো দমে যায়নি। নারীরা, সংস্কৃতিকর্মীরা কখনো দমে যায়নি, যাবে না।
ফাতিমা তুয-যাহরা ঐশী
ফাতিমা তুয-যাহরা ঐশী
সঙ্গীতশিল্পী
আমি ভালো আছি। নারী হিসেবে বলব না, মানুষ হিসেবে ভালো আছি। সৃষ্টিকর্তা নারী-পুরুষ আলাদা করে বানিয়েছেন বটে, তবে আমরা বেঁচে থাকি তো মানুষ হিসেবে। আর কিছু ঘটনার কথা তো কানে আসছে। সেটা নিয়ে বলব, আমরা সবাই চাই সুন্দরভাবে নিজেদের কাজ করে যেতে। দেখুন, দেশ ভালো থাকে কখন? যখন প্রত্যেকে যার যার কাজ সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে করতে পারেন। সুতরাং যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে, সেগুলো আর না ঘটুক, এটাই প্রত্যাশা আমার।