না পারলে ছেড়ে দেন, ড. ইউনুসকে দুদু
-
-
|

ছবি: বার্তা২৪.কম
‘শিশু ধর্ষণ হচ্ছে। রাস্তায় যাকে খুশি, যাকে পাচ্ছে কোপাচ্ছে। এইজন্য কি গণঅভ্যুত্থান হয়েছে? এর জন্য কি আপনি ( ইউনুস) রাষ্ট্রক্ষমতা এসেছেন? না পারলে ক্ষমতা ছেড়ে দিবেন। ছেড়ে দেওয়ার মূল কাজটা হচ্ছে নির্বাচন দিবেন। ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের পরে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হয়েছে। এ দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে রয়েছে।’
বাংলাদেশের সামসময়িক প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশ্যে কড়া মন্তব্য করেছেন বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু
সোমবার (১০) মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে ইন্ডিপেন্ডেন্ট মুসলিম পার্টির উদ্যোগে সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা অবনতি, সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীন এবং জনগণ ভোট চায় শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় দুদু বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বয়স সাত মাস শেষে ৮ মাস চলছে। ড. ইউনুস ক্ষমতায় আসার পরে কিছু কাজ তিনি দ্রুত করেছেন। সেজন্যে আমি ওনাকে ধন্যবাদ জানাই। সেই কাজগুলো হলো তিনি তার নিজের মামলা গুলো দ্রুত প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তিনি তো গণআন্দোলনে ছিলেন না। কোন গণআন্দোলনের কারণে তার নামে মামলা হয়নি। কি কারনে হয়েছিল সেটা আর না বলি। তবে তার মামলা গুলো দ্রুত প্রত্যাহার করে নিয়েছে। শেখ হাসিনা নামলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে যে ঝামেলা ছিল, মামলা মোকাদ্দামা নিয়ে সমস্যা ছিল সেগুলো প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এবং তার প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় ৬ বছর কোন কর দেওয়া লাগবে না। আমি এই জন্যেও তাকে ধন্যবাদ জানাই।
ড. ইউনুস এর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজের ভালো পাগলেও বুঝে। আপনি সেই পথ অবলম্বন করেছেন। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি যে আন্দোলন করেছে যার কারণে ৬০ লক্ষ বিএনপি নেতা কর্মীর নামে আড়াই লক্ষ মামলা হয়েছে। এগুলো প্রত্যাহার করেন নাই।
ড. ইউনূসের উদ্দেশ্যে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি আরও বলেন, আপনার বিরুদ্ধে কথা বলতে আমার খারাপ লাগছে এই কারণে যে আপনাকে আমরাই ক্ষমতায় রেখেছি। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যেসব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছিল তারাই আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছি। আমরা যেটা প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু আপনি আপনারটা বাদে অন্য কিছু চিন্তা করতে পারছেন না। আপনার সাথে ফায়সালা এখনো করিনি। সেজন্য রাস্তায়ও নামি নাই। আমরা রাস্তায় নামলে আপনাদের কি অবস্থা হবে। সেটা আমরাও জানি আপনারাও জানেন দেশবাসীও যানে।
নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা আপনি প্রথম না। এর আগে শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামল রয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনামল রয়েছে। এরশাদের রয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রয়েছে। আপনার একজন মহিলা উপদেষ্টা বলেছেন ৫১ বছরে কি হয়েছে। ৫১ বছরে বাংলাদেশ হয়েছে। বাকশালকে কবর দেওয়া হয়েছে। ৯০ এর গণপত্থান হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে চাল রপ্তানি করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের আমলে মিল কলকারখানা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের আমলে বিদেশের শ্রমিক পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে। বিদেশ থেকে যে রেমিটেন্স এখন পাচ্ছেন না। যে রেমিটেন্স নিয়ে বড়াই করছে সেই বৈদেশিক শ্রমশক্তি জিয়াউর রহমানের আমলেই হয়েছে। আর আপনারা তো খাল খনন না খাল পরিষ্কার করতেও লাল কার্পেট বিছাতে হয়।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, হাসিনার বিচার তিন, চার, ছয় মাসের মধ্যেই হতে পারতো। কিন্তু বিচারের নামে এখন যা হচ্ছে মানুষ ভুলতে বসেছে আদৌ বিচার হবে কিনা। তরুণরা বলেছে বিচারের আগে নির্বাচন হবে না। বিচার তো মনে হয় হবে না । তাই বলে কি নির্বাচনও হবে না? ভালো খেলা শুরু করেছেন। বিচার প্রক্রিয়াধীন পরীক্ষা চলে নির্বাচন চলে সবকিছু চলে বিচার চলতে থাকে। যদি ভালো উদ্যোগী হন তাহলে এক বছরের বিচারকার্য তিন মাসে করতে পারবেন। সেইজন্যে নির্বাচনকে আড়াল করার জন্য যুক্তি তর্ক সামনে আনা ঠিক হবে না। আপনি সাধারণ মানুষের পেটে ভাত না দিতে পারেন ভোটের অধিকার টা দিতে পারেন। শেখ হাসিনা তিন ট্রাম মানুষের ভোটের অধিকার দেয় না। আপনারা তো সেই একই পথে হাঁটছেন। মানুষ ভোটের অধিকার চায়।
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান মোঃ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম শুভ'র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান ইরান,ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সভাপতি মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম,কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাডভোকেট আজমেরী বেগম ছন্দা,এস কে সাদি, কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন, আমির হোসেন বাদশা, খোকন চন্দ্র দাস, আবদুল আহাদ নূর, সাংবাদিক নেতা রাজু আহমেদ প্রমূখ।