‘ধর্ষণের বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবে ছাত্রদল’
-
-
|

ছবি: বার্তা২৪.কম
ধর্ষণের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
তিনি বলেন, আমাদের বোন আছিয়াকে যারা ধর্ষণ করেছে, তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে। অতি দ্রুত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার (১০ মার্চ) হাইকোর্ট গেইটের সামনের সড়কে ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন। মানববন্ধনে রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিভার্সিটি থেকে আসা প্রায় হাজারখানেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, দিনের পর দিন নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা গতানুগতিক ধারার বক্তব্য শুনতে পাচ্ছি। সরকারের স্বদিচ্ছার অভাব আমরা স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করছি৷
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনরা ধর্ষণের বিচারের দাবিতে রাজ পথে নেমে এসেছে। তারা ক্লাস বর্জন করেছে। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমরা তাদেরকে সর্বাত্মক সমর্থন জানাচ্ছি। আমাদের বোন আছিয়ার ধর্ষকদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে। অতি দ্রুত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
ছাত্রদলের সভাপতি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরের সমাজ ব্যবস্থা যে পরিমাণে ধ্বংস হয়েছে, আমরা সেটির পরিবর্তন চাই। আমরা বিশ্বাস করি, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যদি আমিতে কোন সরকার গঠিত হয়, তাহলে সেই সরকার নারী নির্যাতন বন্ধ করবে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা যতদিন রয়েছেন, দয়া করে আজ থেকে আপনারা আরও বেশি সচেষ্ট হন। প্রতিটি ধর্ষণ, নিপীড়নের ঘটনার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে সুনিশ্চিত করেন। এছাড়াও অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে না পারলে আমরা আপনাদের উপর আঙ্গুল তুলতে বাধ্য হবো।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল সরকার। এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ দেশের সব মানুষ সমর্থন দেওয়ার পরেও তারা কিন্তু আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তারা উন্নতি করতে পারেনি। আপনারা দেখেছেন মাগুরাতে আট বছরের শিশুকে কীভাবে ধর্ষন করা হয়েছে। কিন্তু এ দেশের কিছু মানুষ নারীদের পোশাক নিয়ে বার বার কথা বলে। নারীদের পোশাক যদি সমস্যা হতো তাহলে কীভাবে আমার আট বছরের বোন ধর্ষনের শিকার হয়, ছাত্রদল প্রশ্ন রাখতে চায়। বাংলাদেশের গত ১৫ বছরে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে ওঠেছে সেজন্য গত সাত বা আট মাস ধরে নারীর প্রতি যে সহিংসতা যে নির্যাতন সেগুলো কিন্তু ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে ধর্ষনের শাস্তি হিসেবে মৃত্যদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় ধর্ষণের কার্যক্রম বেড়েই চলেছে। ছাত্রদল আহ্বান জানাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই আইন-আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি কঠোর করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন, গত কয়েকদিন আগে নারীর প্রতি যে সহিংসতা হয়েছে, যে সহিংসতা করেছে, পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিবিরের সভাপতি যে ধর্ষক বা নিপিড়ীরকারী তাকে তদবির করে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়েছিল। আমরা দেখেছি নতুন যে ছাত্রসংগঠন গঠিত হয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের একজন কেন্দ্রীয় নেতা যে ইতিমধ্যে নারী নির্যাতনকারী হিসেবে ঘোষিত হয়েছে, তাকে কিন্তু কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সার্বিকভাবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে স্টেকহোল্ডার দুই একজন গুপ্তসংগঠনের নেতারা যারা এখনো নকরী নিপীড়নের পক্ষে তদবির করছে, সে বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।