সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করে নিতে হবে: জিএম কাদের
-
-
|

ছবি: সংগৃহীত
সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারের সদিচ্ছা নেই, তারা জানে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সরকার পার পাবে না। তাই, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায় করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) জাপার বনানী কার্যালয়ে এক যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশের ভবিষ্যত অন্ধকার। যত ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হোক সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হবে না। গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচন কমিশন ভোটের বুথে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়, কিন্তু সেগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছিলো।
তিনি বলেন, দেশে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার কোন পরিবেশ নাই। সরকার সমর্থকরা জোর করে ভোট কেন্দ্র দখল করছে, বিরোধী পক্ষ নির্বাচনী এজেন্টদেরকে বের করে দিচ্ছে। জনগণকে সরাসরি নির্বাচনে ভোট দিতে দিচ্ছে না। এটা হল বর্তমান বাস্তবতা। বিএনপি যখন নির্বাচন বর্জন করলো তখন শুধু জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এমন বাস্তবতায় সরকার সমর্থকরা বিনাপ্রতিদ্বন্দিতায় জিততে জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের হুমকী ও হয়রানী শুরু করছে। এভাবেই সরকার সমর্থকরা জোর করে নির্বাচনে জিতছে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, তৃণমূলের রাজনীতি গলাটিপে হত্যা করা হচ্ছে। শাসক শ্রেনী ও তাদের দল রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এটাকেই বলা হয় একনায়কতন্ত্র। স্বৈরশাসন হলে জনগণের কথা মতো দেশ চলে না। এখন দেশের মানুষ স্বৈরশাসনে নিষ্পেষিত। তিনি বলেন, দেশের রাজনীতি কুক্ষিগত করা হয়েছে। আমরা এই পরিস্থতি থেকে উদ্ধার চাই। দেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে, তাহলে জনগণের অধিকার থাকে না। জনগণের কাছে কারো জবাবদিহিতা থাকে না। এ কারনেই দুর্ণীতিতে ছেয়ে যায় দেশ। আর দুর্নীতি বেড়ে গেলে দেশে বৈষম্য সৃষ্টি হয়।
জিএম কাদের বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ আর করোনার দোহাই দিয়ে অর্থনৈতিক মন্দার কথা বলা হয়। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, গণতন্ত্রহীনতার কারণে দেশে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে একটি শ্রেণি দিন দিন আরো ধনী হচ্ছে। তারা বিদেশে সম্পদের পাহাড় সৃষ্টি করেছে। আর একটি শ্রেণি প্রতিদিন আরো গরীব হচ্ছে। তারা তিন বেলা ঠিকমত খেতে পারছে না। রিজার্ভ সংকট হয়েছে, টাকার অব মূল্যায়ন হচ্ছে। ডলারের দাম বেড়ে গেছে। ডলার যেখানে ৮০ টাকা ছিল এখন তাই ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। দেশে ডলার সংকট চলছে। ডলারের অভাবের জন্য আমাদের কোন এলসি বিদেশ নিচ্ছে না। এই ডলার সংকটের কারণে এখন বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। বিদ্যুতের ক্যাপাসিটি তৈরি করেছে বিশ হাজার মেগাওয়াট। আমাদের দরকার মাত্র ১৪ হাজার মেগাওয়াট। এখন উৎপাদন হচ্ছে নয় হাজার এর চেয়েও কম। বিদ্যুতের বিভ্রাটের কারণে কৃষি কাজের জন্য মানুষ সেচ দিতে পারছে না এবং রিজার্ভের অভাবে বিদেশ থেকে সার কিনতে পারছে না। এই কারণে আগামী দিনগুলোতে ভয়াবহ রকমের খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলছেন খারাপ দিন আসছে, তাই সবাই খাদ্য উৎপাদন করুন। এ কথাতো সবাই জানে, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন পরামর্শ দরকার হয় না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন হচ্ছে, কেন তেল কিনতে পারছে না সরকার? রিজার্ভের টাকা কোথায় গেলো?
জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি যে অত্যাচার করেছে জাতীয় পার্টির ওপর এখন তারা ফিরে পাচ্ছে। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হাত থেকে পরিত্রাণ চায়।
তিনি বলেন, বেগম রওশন এরশাদকে কিছু মানুষ ভুল বুঝিয়ে ঝামালে পাকাতে চায়। জাতীয় পার্টি জিএম কাদের এর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছে। পার্টি থেকে দু’একজন চলে গেলে জাতীয় পার্টির কোন ক্ষতি হবে না।
বক্তব্য রাখেন কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, আলমগীর সিকদার লোটন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু।
মুন্সিগঞ্জ জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন ফারুক আহমেদ, মোঃ মোশাররফ হোসেন, আলহাজ্ব মোঃ শাহাদৎ হোসেন, মোঃ জাকির হোসেন, এমদাদুল হক পলাশ, রফিকউল্ল্যাহ সেলিম, আবুল হোসেন দেওয়ান, ইঞ্জিনিয়া মুজিবুর রহমান, শফিক প্রধান।