সড়ক অব্যবস্থাপনার কারণে ভোগান্তিতে হেমায়েতপুরবাসী

  • মো.কামরুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক অব্যবস্থাপনার কারণে ভোগান্তিতে হেমায়েতপুরবাসী, ছবি: বার্তা২৪.কম

সড়ক অব্যবস্থাপনার কারণে ভোগান্তিতে হেমায়েতপুরবাসী, ছবি: বার্তা২৪.কম

সড়ক অব্যবস্থাপনার কারণে ভোগান্তিতে সাভারের হেমায়েতপুরবাসী। ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা বাজার এবং সড়কে চলাচলরত অটোরিকশার কারণে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, নষ্ট হচ্ছে শ্রমঘণ্টা। জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর দাবি স্থানীয়দের। হাইওয়ে পুলিশ বলছে, ভোগান্তি লাঘবে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সবার সমন্বিত উদ্যোগ।

ঢাকা আরিচা মহাসড়কের সাভারের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা। এখানকার সড়ক দুই ভাগে বিভক্ত। একটি চলে গেছে সাভার-ধামরাই হয়ে মানিকগঞ্জ, অপরটি ব্যবহার হয় সাভার চামড়া শিল্প নগরী এবং মানিকগঞ্জের সিংগাইর যাবার পথ হিসাবে। সাভারগামী সড়কটিতে শৃঙ্খলা থাকলেও চামড়া শিল্প নগরীগামী সড়কটি যেন ভোগন্তির আরেক নাম। সড়কের বেশ কিছু অংশে সৃষ্টি হয়েছে খানা-খন্দ। অটোরিককশার দৌরাত্ম্য আর উল্টোপথে যানচলাচল যেন নিয়মিত বিষয়।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাস্তায় বেশি যানজট, আইন শৃঙ্খলা বলতে কিছু নাই, রোডে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে পরে থাকতে হয়। রাস্তা ভাঙা, এই রোডেই অটোতে চলতে হয়। বিকল্প কোনো রাস্তা নাই। রাস্তা ঘাটে মালপত্র রাখা, কর্তৃপক্ষ বা সরকার ব্যবস্থা নিলে আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে পরে থাকতে হয় না।

তিনি আরও বলেন, আবার সড়কের পাশের ফুটপাথ দখল করে গড়ে ওঠেছে ছোট-বড় নানা অবৈধ স্থাপনা ও বাজার। কিছু কিছু স্থানে দোকান বসেছে সড়কের ওপর। সব মিলিয়ে এ যেন এক ভোগান্তির নগর।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বার্তা২৪.কমকে বলেন, যারা ফুটপাতে ব্যবসা করে, তারা ময়লা আবর্জনা রাস্তার পাশে স্তুপ আকারে ফেলে রাখে, এর ফলে রাস্তা অনেক চিপা হয়ে যায়। যানজটের কারণে দেখা যায় পাঁচ মিনিটের রাস্তা প্রায় এক ঘণ্টা লেগে যায়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে আমি বাসায় যেতে পারবো এমন কোনো গ্যারান্টি নাই। যেমন আমি ১০ মিনিটের মধ্যে বাসায় যেতে পারবো কিনা অথচ আমার বাসা পাচ মিনিটের দূরত্ব।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু এই জায়গা গুলো এখন আর কারও আন্ডারে নাই সেহেতু যে যার মতো পারছে সে তার মতো দোকান তুলছে। এলাকায় যারা প্রভাবশালী আছে তারা চাঁদা, টাকা নিয়ে দোকান বসতে দিচ্ছে।

মহাসড়কে চলাচলরত অটোরিকশার কারণে ভোগান্তিতে বাস ও ট্রাক চালকরা। ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জ গামী ট্রাক চালক মো. সুমন শেখ বার্তা২৪.কমকে বলেন, চারদিকে অনেক অটো থাকার কারণে আমাদের অনেক ভোগান্তি হয়। অনেক সময় অনেক বিপদের সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। সঠিক সময় আমরা যেতে পারি না। এছাড়াও নানা সমস্যা হয়। অটোরিকশা সঠিক পথে না গিয়ে ভুল পথে যায় এর কারণে অনেক ঝামেলার সৃষ্টি হয়। মহাসড়কটা যদি ক্লিয়ার হয় তাহলে আমরা অনেক শান্তি পাই।

এদিকে মহাসড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও শৃঙ্খলা ফেরাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে সাভার হাইওয়ে পুলিশ। ইতোমধ্যে মহাসড়কের পাশের অন্তত ৫ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে জানিয়ে হাইওয়ে পুলিশ বলছে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ।

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সওগাতুল আলম বলেন, মহাসড়কে যেসব অবৈধ দোকানপাট, হাটবাজার বা অবৈধ অটোরিকশা, সেগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ প্রতিনিয়ত অভিযান করে যাচ্ছে, আমরা প্রতিদিনই কাজ করছি। মহাসড়কে বিভিন্ন অরগানাইজেশন বিভিন্ন দায়িত্বে থাকে। যেমন- ট্রাফিক শৃঙ্খলা বা মহাসড়কের গাড়ি চলাচল বা ফুটপাত কেউ দখল করে, মহাসড়কের ওপর হাটবাজার বসায়। এই জন্য হাইওয়ে পুলিশ যেমন দায়িত্বে আছে, তেমনি এখানে অনেক অরগানাইজেশন আছে যাদের এইগুলো দেখভাল করার জন্য দায়িত্ব দেয়া আছে। সবগুলো অরগানাইজেশন বা সবগুলো সেক্টর যদি সমন্বিতভাবে কাজটা করি তাহলেই এই কাজটা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, যাত্রী সচেতনতা সবার আগে হতে হবে। দেখা যায়, ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে পার হবার কথা কিন্তু ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে পার না হয়ে লাফ দিয়ে তিনি উঁচু ডিভাইডার পার হয়ে যাচ্ছেন। রাস্তার ওপরে তিনি অকারণে দাঁড়িয়ে থাকেন। এর জন্য সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। স্থানীয়ভাবে এই মনিটরিং যেন জোরদার করা যায়, সেরকম একটা চিন্তাভাবনা আছে আমাদের। এরকম একটা পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি।

গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তৎপড়তায় ফিরে আসবে শৃঙ্খলা, কমবে ভোগান্তি এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।