কাজের কথা বলে ভারতে পাচারের শিকার ২১ বাংলাদেশি শিশুকে উদ্ধারের পর ট্রাভেল পারমিটে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিকাল ৫ টায় ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বেনাপোল চেকপোষ্টে তাদের হস্তান্তর করা হয়।
বিজ্ঞাপন
ফেরত আসা নারী,শিশুরা নড়াইল,সাতক্ষীরা,পটুয়াখালি, খুলনা,ঢাকা,কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। এদের কাউকে চাকুরি, কাউকে বাসাবাড়িতে কাজের কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্ত প্রতারণা করে জোরপূর্বক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে বাধ্য করা হত তাদের। এরপর অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় পুলিশ তাদের আটক করে আদালতে পাঠায়।
পুলিশের আইনি কার্যক্রম শেষে আইনি সহায়তার জন্য রাইটস যশোর এনজিও সংস্থা তাদের গ্রহণ করেছে।
বিজ্ঞাপন
রাইটস যশোরের তথ্য ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা তৌফকুজ্জামান জানান,সংসারে অভাব অনটনের সুযোগ নিয়ে ভালো কাজের কথা বলে দালাল চক্র দুই থেকে ৭ বছর আগে তাদের সীমান্ত পথে ভারতে নেয়। পরে তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ফেলে চলে আসে। এসময় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় পুলিশ তাদের আটক করে আদালতে পাঠায়। সেখান থেকে ভারতীয় মানবাধিকার কর্মীরা তাদের ছাড়িয়ে বিভিন্ন সেল্টার হোমে রেখে দেয়। পরে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় সহায়তায় ট্রাভেল পারমিটে তারা দেশে ফেরার সুযোগ পায়। পাচারকারীদের আস্তানা থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরতে পেরে খুশি উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিরা।
বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ওসি রাসেল মিয়া জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে ফেরত আসা বাংলাদেশিদেরকে পোর্টথানা থেকে আইনি সহায়তা ও কর্মসংস্থান সুবিধা দিতে গ্রহণ করেছে এনজিও প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে প্রশাসনের স্বচ্ছতা পরীক্ষা হয়ে যাক: হাসনাত আবদুল্লাহ
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
|
ছবিঃ বার্তা২৪
জাতীয়
নির্বাচনি ফায়দা নেয়ার জন্য আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসনের জন্য কিছু রাজনৈতিক দল কূটনীতিতে যুক্ত হচ্ছে মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আপনাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে যাই, আমরা যে আওয়ামী লীগকে ছাত্র-নাগরিক রাস্তায় তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করেছি, আজকে সেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
বুধবার (১৯ মার্চ) কুমিল্লার শাসনগাছায় জাতীয় নাগরিক পার্টি কুমিল্লার আয়োজনে হাসনাত আবদুল্লাহ ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ’২৪ এর শহীদ ও আহত গাজীদের স্মরণে গণইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নাগরিক পার্টিও যুগ্ম সদস্য রিফাত রশিদ।
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, গত যে তিনটি নির্বাচন হয়েছে তাতে জনগণ ভোট দিতে পারে নাই। ভোট দিয়েছে প্রশাসন, নির্বাচন পরিচালনা করেছে প্রশাসন। একটি স্বচ্ছ ও ফ্রি এন্ড ফেয়ার নির্বাচন করার কোন দক্ষতা আওয়ামী প্রশাসনের নেই। এই প্রশাসন সংস্কার না করা পর্যন্ত, আমরা যতক্ষণ না নিশ্চিত হই এই প্রশাসন একটি ফ্রি এন্ড ফেয়ার নির্বাচন করাতে পারে- আমরা ততক্ষণ আশ্বস্ত হচ্ছি না। এজন্য আমরা চাই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই প্রশাসনের স্বচ্ছতার পরীক্ষা হয়ে যাক। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করুন। প্রয়োজনে ধাপে ধাপে যতগুলো উপজেলা রয়েছে সেগুলো- ৫/৬টি ধাপে নির্বাচন দিয়ে এই প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করুন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনি ফায়দা নেয়ার জন্য আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসনের জন্য কূটনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন। আমরা আপনাদের সতর্ক করে দিতে চাই- এই ছাত্র নাগরিকের হারানোর কিছুই নাই। এক খাপে দুই তলোয়ার যেভাবে থাকতে পারে না, ঠিক একই একই ভাবে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে একইভাবে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এবং এনসিপি থাকতে পারবে না। যদি কেউ আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসন করতে চায়, ৫ আগষ্ট গণভবন এবং বঙ্গভবনের যে পরিণতি হয়েছে-তাদেরও সে পরিণতি হবে।
পবিত্র ঈদুল ফিতরে ৩ দিন ছুটি পাবেন সংবাদপত্রের কর্মীরা। ফলে এই সময় প্রকাশিত হবে না কোনো পত্রিকা।
বুধবার (১৯ মার্চ) নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) সভাপতি একে আজাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সংবাদপত্র ৩ দিন বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ ৩০ ও ৩১ মার্চ এবং ১ এপ্রিল ছুটি থাকবে। এসময় কোনো পত্রিকা প্রকাশ করা হবে না।
তবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদুল ফিতর ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হলে সেক্ষেত্রে পরদিন ২ এপ্রিল সংবাদপত্র বন্ধ থাকবে।
দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত-সমালোচিত সশস্ত্র রোহিঙ্গা সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)-র প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি অবশেষে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। তার গ্রেপ্তারের খবরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।
পাকিস্তানে জন্ম, তালেবানের প্রশিক্ষণ
আতাউল্লাহর জন্ম পাকিস্তানে হলেও তার শৈশব কেটেছে সৌদি আরবে। সেখানে কিছু সময় কাটানোর পর তিনি তালেবান সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন এবং সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। কথিত আছে, সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় তিনি রোহিঙ্গাদের কিছু পরিবার দ্বারা প্রভাবিত হন এবং তাদের সহায়তায় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করেন।
আল-ইয়াকিন থেকে আরসা গঠন
মিয়ানমারে প্রবেশের পর তিনি আল-ইয়াকিন নামে একটি গোষ্ঠী গড়ে তোলেন, যা পরে আরসা নামে পরিচিত হয়। শুরুতে তারা স্থানীয় ধর্মীয় নেতা, শিক্ষক এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের টার্গেট করে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নির্যাতন চালায়। ভারী অস্ত্র হাতে ছবি তুলে রোহিঙ্গা তরুণদের সংগঠনে যোগ দিতে বাধ্য করত তারা। একসময় সংগঠনটি বড় আকার ধারণ করে এবং মিয়ানমারের নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে হামলা চালায়।
নিজ সংগঠনের সদস্যদের সাথে আতাউল্লাহ
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের সন্দেহ
২০১৭ সালে যখন আরসা মিয়ানমারের পুলিশের চেকপোস্টে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখনই প্রশ্ন ওঠে—কেন মিয়ানমার সেনাবাহিনী আগেভাগে এ হামলা প্রতিহত করেনি? অনেকেই সন্দেহ করেন, আতাউল্লাহ হয়ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গোপন চর হিসেবে কাজ করছিল। তার এই কর্মকাণ্ডের জের ধরে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন শুরু করে, যার ফলে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে, যা এখন বেড়ে ১২ লাখেরও বেশি।
ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মুহিবল্লাহ হত্যার অভিযোগ
আতাউল্লাহর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা মাস্টার মুহিবুল্লাহকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। যিনি আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও দেখা করেন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এছাড়া রোহিঙ্গা মানবাধিকারকর্মী ও মাঝিদের হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
মাদক, অপহরণ ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ
আরসার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই মাদক পাচার, অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং নারী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে তার সংগঠন নানাভাবে সহিংসতা চালিয়ে এসেছে।
বাংলাদেশে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যা
সর্বশেষ, আতাউল্লাহ ও তার সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের এক ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনার পরই বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আরও কঠোর হয় এবং অবশেষে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।
আটকের পর স্বস্তি
আতাউল্লাহর গ্রেপ্তারের পর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্যে স্বস্তির আবহ বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা সহিংসতা, ভয়ভীতি এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে মুক্তি পেতে তারা আশাবাদী।
মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি আতাউল্লাহ গ্রেফতারের খবরে মুহিবুল্লাহর এক নিকট আত্মীয় বাংলাদেশ সরকারের কাছে প্রত্যাশা করেন অচিরেই মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের বিচার করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুহিবুল্লাহ'র আরেক সহকর্মী বলেন, " জুনুনিই সরাসরি মাস্টার মুহিবুল্লাহকে হুমকি দিয়েছিলো। তার নির্দেশে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সে মুহিবুল্লাহকে মাথাব্যথার কারণ হিসেবে দেখতো।" আরসার হাতে গুমের শিকার হয়েছিলেন ১২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মোহাম্মদ আমিন, প্রায় ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরলে এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন নির্যাতনের চিহ্ন। আমিন বলেন, " আতাউল্লাহ রোহিঙ্গাদের মাথা বিক্রি করেছে, তার গ্রেফতারে আমরা খুশি হয়েছি। আশা করছি তাকে বাংলাদেশ কঠোর শাস্তি দিবে।" এদিকে বাংলাদেশ সরকার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, কোনো অপরাধীই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে অবৈধভাবে ইউরিয়া সার গুদামজাতকরণের দায়ে বিএনপি নেতাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে ভেজাল ডিএপি (DAP) সার তৈরির অভিযোগে আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুরে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন জয়ের মালিকানাধীন মেসার্স করিম এন্টারপ্রাইজের গুদামে এ অভিযান চালানো হয়। এসময় গুদামে অনেক নষ্ট সার পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মুনতাহা তাসনিম মৌ এর নেতৃত্বে অভিযানে অংশ নেন সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শরিফুল ইসলাম ও সৈকত ভট্টাচার্য। এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের সহকারী উপপরিচালক সারমিন জুই, আশুগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হাসিব আব্দুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মুনতাহা তাসনিম মৌ জানান, কামাল হোসেন জয় ভেজাল ডিএপি (DAP) সার তৈরি করে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করে বলে অভিযোগ পেয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। যদিও অভিযানে ভেজাল ডিএপি (DAP) সার তৈরির কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তবে অবৈধভাবে ইউরিয়া সার গুদামজাতকরণের দায়ে সার ব্যবস্থাপনা আইন ২০০৬ এর ১২(১) ধারায় অভিযুক্ত বিএনপি নেতাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি জানান, অভিযুক্তকে এক সপ্তাহের মধ্যে সারের কাগজপত্র দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া সারের মান ঠিক আছে কিনা পরীক্ষার জন্য গুদামে সংরক্ষিত সারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিকে অভিযান পরিচালনাকালে সরেজমিনে দেখা যায়, গুদামে ছাই ও গোবরের স্তূপ এবং বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির ইউরিয়া নষ্ট সারের বস্তা এলোমেলোভাবে পড়ে রয়েছে।