সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ও অন্যান্য অপরাধে আরও ৭৬৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে শুরু করে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত ১৫ দিনে এ নিয়ে মোট ৮ হাজার ৭৯ জনকে গ্রেফতার করা হলো অপারেশন ডেভিল হান্টে।

শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানের আওতায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৬৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর অন্য মামলা ও ওয়ারেন্টের আওতায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৫৭২ জনকে। ২৪ ঘণ্টায় মোট গ্রেফতার হয়েছেন ১ হাজার ৩৪১ জন।

২৪ ঘণ্টায় অপারেশন ডেভিল হান্টে উদ্ধার যত অস্ত্র-

দেশে তৈরি একনলা বন্দুক একটি, কার্তুজ দুইটি, রামদা চারটি, চাপাতি দুইটি, ছুরি একটি, এলজি একটি ও একটি কেঁচি উদ্ধার হয় বলে জানান এআইজি ইনামুল হক সাগর।

ডেভিল অর্থ হচ্ছে ‘শয়তান’ আর হান্ট অর্থ ‘শিকার’। ডেভিল হান্ট, যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় ‘শয়তান শিকার’ করা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত ডেভিল হান্ট বলতে দেশবিরোধী চক্র, সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনা বোঝানো হয়েছে।

অপারেশন ডেভিল হান্ট একটি বিশেষ অভিযান, যা ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলা করে আওয়ামী লীগের সমর্থক সন্ত্রাসীরা। এই হামলায় নেতৃত্ব দেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। হামলার ফলে বেশ কয়েকজন হতাহত হন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।

ঘটনার পরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অপারেশন ডেভিল হান্ট নামক বিশেষ অভিযান শুরু হয়।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছেন, শেখ হাসিনা এদেশে দীর্ঘ ১৭ বছরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলা হামলা দিয়ে বাড়ি ছাড়া করেছে, দু'বেলা ভাত খেতে দেয়নি। শুধু তাই নয়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যে মামলা দিয়ে জেলে দিয়েছে। এমনসব আচণেরর কারনে এদেশের জনতা তাকে দেশছাড়া করেছে। এখন শেখ হাসিনা ভারতে বসেও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

নরসিংদী জেলা বিএনপি আয়োজিত দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধিসহনীয় পর্যায়ে রাখা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি ও পতিত ফ্যাসিবাদী চক্রান্ত মোকাবেলা এবং দ্রুত নির্বাচনী রোড ম্যাপ ঘোষনা সহ বিভিন্ন জন দাবীতে সমাবেশে এসব কথা বলেন।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে শহরের পৌর ঈদগাহে মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নরসিংদী জেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহা সচিব খায়রুল কবির খোকন।

নরসিংদী জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব মনজুর এলাহীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, নজরুল ইসলাম আজাদ, সাবেক এমপি সরদার সাকাওয়াত হোসেন বকুল, রোকেয়া আহমেদ লাকি, কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিসয়ক সম্পাদক জয়নাল আবদিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দীন বকুল, সহ স্বেচ্ছা বিষয়ক সম্পাদক আবদুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু,

জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক এড. আবদুল বাছেদ ভুইয়া, আবু সালেহ চৌধুরী, সদস্য রাসেদ ইকবাল খান, সাবেক ছাত্রনেতা ইকবাল হোসেন শ্যামল, জেলা বিএনপির হারুন অর রশিদ, ইলিয়াছ আলী ভূইয়া, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ।

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান অন্তভর্তী সরকারের ৭ মাসে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া বাজারের দ্রব্য মূল্য সহনীয় অবস্থায় না রাখায় সরকার সমালোচনার মধ্যে পরেছে।

তারা আরো বলেন, সরকারের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা একটি চক্র সংস্কারের নামে নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা শুরু করেছে। তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এদেশের জনগন চায় ভোটে গিয়ে নির্বাচিত সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে। কারন এখন যত সংস্কারই করা হোকনা কেনো পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার এসে যদি তা না মানে তাহলে এমন সংস্কার করেই লাভ কি। তাই দেশের মানুষ এখন নির্বাচন চায় কেননা দীর্ঘ ১৭ বছর দেশের মানুষ নির্বাচন কি জিনিস ভুলে গেছে।

সিংহাসনে থেকে কিংস পার্টি করতে চাইলে মানুষ মানবে না, বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের স‍দস‍্য অ‍্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, যে ছেলেরা বতর্মানে ক্ষমতায় আছে, তারা আমাদের সন্তান। বাবারা দল করতে চাইলে মাঠে এসে কর। সিংহাসনে থেকে কিংস পার্টি করতে চাইলে মানুষ মানবে না।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় উত্তর জেলা বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিগত ১৭ বছর বিএনপি ফ‍্যাসিষ্ট বিরোধী আন্দোলনের ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছিল দাবি করে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান আরও বলেন, ৫ আগষ্টের পর থেকে বিগত ৭ মাস ধরে বিএনপির প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। অথচ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে দুই তৃতীয়াংশ মেজরিটি পাবে বিএনপি। কিন্তু ইলেকশন যেন না হয় তা নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

এ সময় জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্যে এই প্রবীণ বিএনপি নেতা বলেন, ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করতে যাইয়েন না। নির্বাচনে দশ পার্সেন্ট ভোট পেলে স‍্যালুট দিব। আপনারা ব‍্যাংক দখল করে বিএনপিকে বলেন চাঁদাবাজ। কিন্তু জনগন কাকে ভালোবাসে প্রমাণ চাইলে নির্বাচন দিন। স্থানীয় নির্বাচনের জন্য স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন হয়নি, দেশের জনগণ অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন চায়।

নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় রাখা, আইনশৃংখলা পারিস্থিতির উন্নতি ও দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষনাসহ বিভিন্ন দাবিতে তারাকান্দা উপজেলার নতুন বাজার এলাকায় এ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে এদিন দুপুরের পর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে এসে সমাবেশ স্থলে জমায়েত হয়। এতে জনসমুদ্র তৈরী হয় সমাবেশস্থল এলাকা।

সমাবেশে উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক এনায়েত উল্লাহ কালামের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব মোতাহার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন ও আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস‍্য সচিব মোতাহার হোসেন তালুকদারসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে কলা বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় মহিউদ্দিন (৪৫) নামের এক স্কুল শিক্ষক নিহত হয়েছেন।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে উপজেলার বলুহর মৎস্য হ্যাচারি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মহিউদ্দিন উপজেলার রাজাপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ শিকদারের ছেলে। তিনি রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক মহিউদ্দিন কোটচাঁদপুর বাজার থেকে মোটরসাইকেল যোগে রাজাপুর তার নিজ বাসায় ফিরছিলেন। পথে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সাবদারপুর থেকে কোটচাঁদপুরগামী একটি কলা বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কোটচাঁদপুর মডেল থানার ওসি কবীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, ঘটনা শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্য পাঠানো হয়েছে।