কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে ওরিয়ন গ্রুপের ঢাকা ৬৩৫ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ (পরিবেশ প্রভাব সমীক্ষা) অনুমোদনের খবরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের দায়িত্বকালীন সময়ে এমন বিতর্কিত ইআইএ রিপোর্ট অনুমোদন কীভাবে সম্ভব; সে বিষয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
শনিবার (১ মার্চ) এক বিশেষ প্রচারাভিযান অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় জনসাধারণ, পরিবেশবাদী সংগঠন ও স্থানীয় জনগণের উপস্থিতিতে ঢাকা ৬৩৫ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটির পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ক্লিন, বিডাব্লিউজিইডি এবং স্থানীয় সংগঠনগুলোর উদ্যোগে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের দাবিতে একাধিক প্রচারাভিযান পরিচালিত হয়। একই সময়ে, উক্ত প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে গত ৩১ অক্টোবর খোলা চিঠি ও পাঠানো হয়। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
সংশপ্তকের ডিরেক্টর অগ্রদূত দাশগুপ্ত বলেন, এটি শুধুমাত্র পরিবেশগত অবহেলা নয়, বরং স্থানীয় জনগণের জীবিকা ও স্বাস্থ্যের জন্য চরম ঝুঁকির উদাহরণ। প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী নতুন কয়লা প্রকল্প অনুমোদনের কথা নয়, তবুও এই ক্ষতিকর প্রকল্প অনুমোদন পাওয়া দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন জনগণের আওয়াজ শুনে বৈজ্ঞানিক ও পরিবেশগত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়িত হলে মাতারবাড়ির জীববৈচিত্র্য, কৃষি, মৎস্যসম্পদ ও সামগ্রিক বাস্তুসংস্থান চরম হুমকির মুখে পড়বে। স্থানীয় জনগণ ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর দীর্ঘদিনের আন্দোলন থাকা সত্ত্বেও এই প্রকল্প কীভাবে অনুমোদন পেল, সেটি নিয়ে সংশপ্তক, ক্লিন, বিডাব্লিউজিইডি এবং মাতারবাড়ির জনগণ তীব্র অসন্তোষ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
ক্লিন, বিডাব্লিউজিইডি, সংশপ্তক ও অন্যান্য স্থানীয় সংগঠনগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর কাছে প্রকল্পটির ইআইএ অনুমোদনের পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ প্রকাশের দাবি জানায়। এছাড়া প্রকল্পটির অর্থায়ন ও বাস্তবায়নের বৈধতা পুনরায় পর্যালোচনা করার আহ্বান জানায় তারা ।