অধূমপায়ীরাও রয়েছেন ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকিতে

  • লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অধূমপায়ীদের ফুসফুস ক্যান্সার / ছবি: সংগৃহীত

অধূমপায়ীদের ফুসফুস ক্যান্সার / ছবি: সংগৃহীত

ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকিতে সাধারণত সিগারেট এবং তামাকজাত দ্রব্য সেবনকারী ব্যক্তিরা বেশি থাকেন। তবে ধূমপান ছাড়াও ফুসফুস ক্যান্সার হওয়ার আরও কিছু কারণ থাকতে পারে। বর্তমান সময়ে সঠিক জীবনযাপনের নিয়ম অবলম্বনকারী অনেকের ফুসফুস ক্যান্সার ধরা পড়ছে। জীবনে একবারও ধূমপান না করেও অনায়াসে তারা ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

সরাসরি ধূমপান না করলেও, ধূমপায়ীর আশেপাশে থাকা ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অধূমপায়ী ব্যক্তি পরিবার বা বন্ধুদের ধূমপায়ীদের কাছ থেকে নির্গত তামাকের ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসেন। এছাড়া যানবাহনের ধোঁয়া, শিল্প এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, ধুলা এবং কৃষিকাজের কারণে প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণ হচ্ছে। এসব কারণে সাধারণ মানুষেরও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

গ্যাসের অসম্পূর্ণ দহনের ফলে সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড, পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন, ফর্মালডিহাইড এবং ভারী ধাতু সহ গ্যাস নির্গত হয়। নির্গমনের সময় এগুলো সাধারণত মাইক্রোস্কোপিক বা অতিক্ষুদ্র কঠিন টুকনো বা তরল ফোঁটায় নির্গত হয়। একে পার্টিকুলেট ম্যাটার বলা হয়। এই কণাগুলো এত ছোট হয় যে সহজেই শ্বাসের সঙ্গে শরীরে চলে যেতে পারে। এই ক্ষুদ্র কণাগুলোই গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার মূল কারণ হতে পারে।

জ্বালানির ধোঁয়ার সংস্পর্শে এলে ক্যান্সার ছাড়াও নানান ক্ষতিকর রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেমন পালমোনারি, তীব্র শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণসহ ফুসফুস ও অন্যান্য বিভিন্ন ক্যান্সার হওয়া খুবই সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৯ সালে ‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ স্টাডি’ অনুমান করেছে, বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর যে মানুষরা ফুসফুস ক্যান্সারে মারা যান তাদের মধ্যে আড়াই লাখ মানুষের ফুসফুসে ক্যান্সার হয় বায়ু দূষণের কারণে। এছাড়া বিশেষজ্ঞদের মতে, মিটারপ্রতি প্রতি ১০ মাইক্রোগ্রাম মাইক্রোস্কোপিক কণা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে অধূমপায়ীদেরও ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ১৫ থেকে ৩৬ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।   

বিজ্ঞাপন
 ফুসফুস ক্যান্সার / ছবি: সংগৃহীত 

বায়ুদূষণ ছাড়াও দৈনন্দিন আরও কিছু কারণ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পথ সুগম করার জন্য দায়ী হতে পারে। দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস এবং অ্যালকোহল, অতিমাত্রায় মাংস খাওয়া, বিশেষভাবে ভাজা বা স্মোক করা লাল মাংস- এসব কারণেও ফুসফুস ক্যান্সার হতে পারে। অতি মাত্রায় কফি এবং অ্যালকোহল গ্রহণ তামাক সেবনের মতোই ক্ষতিকর হতে পারে। অপরদিকে শাক-সবজি এবং ফলমূল প্রতিদিন খেলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম থাকে।

ফুসফুস ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার আরও বেশি ঝুঁকিতে থাকেন খনিশ্রমিকরাও। পাথর কাটা, ঢালাই করখানার কর্মী, খনিজ গলানোর যন্ত্র, বিদ্যুৎ বিশ্লেষণ কর্মী,  ভারী খাদ প্রস্তুতকারক, অ্যাসবেস্টস, সিলিকা, রেডন, নিকেল, ক্রোমিয়াম উদ্ধারকরণ মতো পেশায় জড়িতদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার বাড়ছে।  এই পেশায় নিয়োজিত কর্মীদের মাস্ক পড়া এবং নিরাপত্তা সম্পর্কিত সতর্কতা  অবলম্বন করা উচিত।

এসব কারণে ফুসফুসে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। ক্যান্সার ছাড়াও হাঁপানি, ফুসফুসে যক্ষ্মা , সিওপিডি’র মতো মারাত্মক দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়তে পারে।  

তথ্যসূত্র: নিউজ১৮