গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি শিল্প খাতে বিপর্যয় ডেকে আনবে

  • ডেস্ক রিপোর্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশের শিল্প খাত নানা কারণে আজ গভীর সংকটে নিমজ্জিত। প্রধানতম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট। গ্যাসের অভাবে ব্যাপকভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সুদের হার অনেক বেশি। রয়েছে ডলার সংকট। কমছে ঋণপত্র খোলা এবং নিষ্পত্তির হার। এর মধ্যে কয়েক শ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ধুঁকছে অনেক কারখানা।

অনেক কারখানা নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে পারছে না। ফলে বাড়ছে শ্রম অসন্তোষ। এমন পরিস্থিতিতে সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। গত রবিবার রাজধানীতে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, শিল্প খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করলে বিনিয়োগ কমবে, অন্যদিকে বাড়বে আমদানিনির্ভরতা।

বিজ্ঞাপন

এতে চাপে পড়বে দেশের অর্থনীতি। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মূল প্রবন্ধে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, বর্তমান চ্যালেঞ্জিং সময়ে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ বাড়ানো হলে উৎপাদনমুখী খাতে পণ্য উৎপাদনে ব্যয় বাড়বে। এতে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমবে। নতুন বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একই সঙ্গে সিমেন্ট, ইস্পাত ও সিরামিক খাতে নতুন করে আমদানিনির্ভরতা বাড়বে।

আর্থিক খাতের ওপর চাপ পড়বে। অনেক শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে। ব্যাংকে মন্দ ঋণ বাড়তে থাকবে। বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার শিল্পে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। ব্যাংকে সুদের হার বেশি। গ্যাসের দামও বাড়তি। এর পরও চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস দিতে পারছে না সরকার। এ অবস্থায় ‘সরকার নতুন শিল্পের জন্য ১৫০ শতাংশ এবং সম্প্রসারণ শিল্পের জন্য ৫০ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। আমরা আর কেউ শিল্প করতে চাই না। তবে বর্তমান শিল্পকে সহায়তা করবেন না, এটা হতে পারে না। দেশের অর্থনীতি ধরে রাখতে হলে গ্যাসের দাম বর্তমানের চেয়ে কমানো দরকার।’

বিজ্ঞাপন

প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনসংখ্যা, বাড়ছে কর্মসংস্থানের চাহিদা। কিন্তু সেই অনুযায়ী বাড়ছে না শিল্প-কারখানা, বাড়ছে না কর্মসংস্থানের সুযোগ। বরং উল্টোটাই দেখা যাচ্ছে। বিদ্যমান শিল্পগুলোও ধুঁকতে ধুঁকতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে দ্রুত বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার কর্মসংস্থান হবে কিভাবে?

ব্যবসায়ীদের মতে, বর্তমানে শিল্পঘন এলাকাগুলোতে, বিশেষ করে গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারে অবস্থিত কারখানাগুলোতে গ্যাসসংকটের কারণে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ হারে উৎপাদন কমে গেছে। ফলে কারখানাগুলোর প্রডাকশন শিডিউল ও সরবরাহ চেইন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গ্যাসের দাম এভাবে বাড়ানো হলে তা দেশের শিল্প খাতকে আরো বিপর্যস্ত করবে। আমরা মনে করি, দেশের শিল্প খাতের উন্নয়নে পরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে। এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না, যা শিল্প খাতে বিপর্যয় ডেকে আনে। কালের কণ্ঠ’র সৌজন্যে