গ্যাসের দাম বৃদ্ধির শুনানি বন্ধ করার দাবি ক্যাবের
-
-
|
গ্যাসের দাম বৃদ্ধির শুনানি বন্ধ করার দাবি ক্যাবের
শিল্প খাতের গ্যাসের দাম বৃদ্ধির শুনানি স্থাগিত করার দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। নতুন শিল্পে ৩০ টাকা থেকে দাম বাড়িয়ে ৭৫.৭২ টাকা করা প্রস্তাবের ওপর ২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির অপতৎপরতা বন্ধের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। দাম বাড়ানোর দিকে গেলে বিইআরসি গণশত্রুতে পরিণত হবে। তারা গণশত্রু হতে চাইবে না বলেই বিশ্বাস করতে চায় ভোক্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিইআরসি গত ১৫ বছর শুধু মূল্যহার নির্ধারণের কাজ করেছে। বর্তমানেও এ অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। লুণ্ঠনমূলক ব্যয় ও মূল্যহার কমানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিইআরসি। এখন তারা গ্যাসের মূল্যহার বৃদ্ধির কার্যক্রম শুরু করেছে।
মূল্যবৃদ্ধির আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অযৌক্তিক ব্যয়, লুণ্ঠনমূলক খরচের হিসাব বের করতে বিইআরসির কমিটি করা উচিত বলছে ক্যাব। সেটি করার পর তার ভিত্তিতে খরচ কমিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম কমানোর প্রস্তাব করতে পারে বিইআরসি। শেষ মুহূর্তে হলেও বিইআরসি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির শুনানি স্থগিত করবে বলেও আশা প্রকাশ করছেন ক্যাব নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিদ্যমান শিল্পে এক ধরণের দর, আবার নতুন শিল্পে আরেক ধরনের দর। এ উদ্যোগ জুলাই-আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যারা দাম বাড়ানোর এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, তাদের সবার প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
এক প্রশ্নের জবাবে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম বলেন, ‘বিইআরসি শুরুতেই গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির আবেদন খারিজ করে দিতে পারত। শুনানির আগে উন্মুক্ত সভা ডেকে যৌক্তিকতা বিচার করা যেত। এখন কোনো উন্মুক্ত সভা করা হয় না। এটি ভোক্তা স্বার্থের পরিপন্থী। বিইআরসির যেগুলো প্রতিরোধ করার দায়িত্ব, সেগুলোকে তারা সুরক্ষা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘অন্তবর্তীকালীন সরকারের আচরণ যদি আগের সরকারের মতো হয় তাহলে আন্দোলন শুরুতেই ব্যর্থ মনে হবে। ৬ মাসে সরকারের দাম বাড়ানো, রপ্তানি শিল্পকে অস্থির করে তোলাটা অশনিসংকেত মনে হয়। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা দরকার, এটা ক্যাব বিশ্বাস করে না।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ক্যাব গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া স্থগিত করার জন্য লিখিত চিঠি দিয়েছে বিইআরসিতে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, এলএনজি, এলপিজি, সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ সরবরাহে অন্যায় ও অযৌক্তিক ব্যয় কতটা সমন্বয় হয়েছে তার পরিমাণ বিআইরসি কর্তৃক নির্ধারিত হতে হবে। লুণ্ঠনমূলক ব্যয় ও মুনাফা রোধ করে এবং সরকারের রাজস্ব কমিয়ে বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানির মূল্যহার এবং ভর্তুকি কী পরিমাণ কমানো সম্ভব; তা বিইআরসির হিসাব করতে হবে। জ্বালানি–সংক্রান্ত অপরাধীদের বিচারের জন্য বিইআরসি আইনের আওতায় ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
শুভ কিবরিয়ার সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির ভুইয়া।