সরকারের বেঁধে দেয়া দাম মানছেন না ডিম ব্যবসায়ীরা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পাইকারি আড়তে ডিম বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। ছবি- বার্তা২৪.কম

পাইকারি আড়তে ডিম বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। ছবি- বার্তা২৪.কম

বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের অবস্থা যখন নাভিশ্বাস তখন ডিম তৈরি করেছে বাড়তি চাপ। বিভিন্ন পর্যায়ে ডিমের বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি সরকার। আজও ডিমের পাইকারি আড়তে ডিম বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে।

সরেজমিনে (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত পাইকারি বাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এদিন পোল্ট্রি মুরগির একশো ডিম ১ হাজার ২১০ থেকে ১ হাজার ২৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা যায়। সে হিসেবে প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ে ১২ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৩০ পয়সা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গতকাল ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান ডিম উৎপাদক এবং সরবরাহকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে যথাক্রমে উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দাম নির্ধারণ করে দেয়। যা আজ (বুধবার) থেকে কার্যকর কথা বলা হয়।

তবে সরকারের বেঁধে দেয়া এমন দামের প্রতিফলন পাইকারি বাজারের কোথাও দেখা যায়নি। বরং পাইকারি পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম ১১ টাকা ১ পয়সা বিক্রি করার কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছিলো ১২ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত।

বিজ্ঞাপন

এ নিয়ে শফিক ট্রেডার্স এর ডিম বিক্রেতা মোহাম্মদ কামাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ডিমের দাম গতকাল থেকে কমেছে। গতকাল আমরা প্রতি একশো ডিম বিক্রি করেছি ১৪০০ টাকার বেশি। সেখান থেকে এক দিনের মধ্যেই দুইশো টাকা কমে গেছে।

আল-আমিন ট্রেডার্সের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্রেতা বলেন, একদিনে একশো ডিমে দুইশো টাকা কমে গেছে, আর কত কমবে? ডিমের দাম এইভাবে কমলে তো আমরাও বাঁচতে পারবো না, ডিমের যারা উৎপাদক তারাও বাঁচতে পারবে না।  আজকে আমাদের কোনো ব্যবসা (লাভ) নাই।

সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বেশি দামে কেনো ডিম বিক্রি করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এইটা বলতে পারি না। আমরা যেমন দামে কিনে আনছি, বিক্রি করতেছি। ডিমের দাম কমলে যারা ডিম উৎপাদন করে তারা বাঁচবে কিভাবে?

ডিমের দাম তো কখনোই এতো বেশি ছিলো না তাহলে সে সময় কিভাবে ব্যবসা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আর কিছু বলতে চাই না। আমরা ব্যবসা করি, আমরা বুঝি কি অবস্থায় আছি।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি দেশে হয়ে যাওয়া বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে কমে গেছে ডিমের উৎপাদন। প্রতিদিন যেখানে চাহিদা সাড়ে ৪ কোটি থেকে ৫ কোটি ডিমের সেখানে এখানে উৎপাদন হচ্ছে সাড়ে ৩ লাখ ডিম। ফলে এর প্রভাব এসে পড়ে বাজারে, বেড়ে যায় দাম।

এই অবস্থা থেকে জনগণকে স্বস্তি দিতে সরকার প্রায় ৪ কোটি ডিমের আমদানির অনুমতি দিলেও সেখানে মাত্র কয়েক লাখ ডিম আমদানি হয়েছে। তাই সংকট কাটছে না বাজারে।

এর আগেও সরকার ডিমের দাম প্রায় ১২ টাকা বেঁধে দিলেও তা এক মাসেও কার্যকর করতে পারেনি। উল্টো সরকারের অভিযান পরিচালনার জন্য ব্যবসায়ীরা ডিম বিক্রি বন্ধ করে দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।