আন্তর্জাতিক বাজারে ঠাকুরগাঁওয়ের আলু
-
-
|

ছবি: বার্তা২৪.কম
উত্তরবঙ্গের কৃষিনির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও বরাবরই আলু উৎপাদনে সমৃদ্ধ। এবার সেই আলু দেশের সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে। কৃষকদের পরিশ্রম আর আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে মানসম্মত আলু উৎপাদিত হওয়ায় বিদেশি ক্রেতাদের নজর কেড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের এই কৃষিপণ্য।
ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশে এখানকার আলুর রফতানি শুরু হয়েছে। জেলার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা এখন উচ্চমানের আলু উৎপাদনে আরও বেশি উৎসাহী হয়ে উঠছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে ২৬ হাজার ১৬৮ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছিল। ভালো লাভ হওয়ায় চলতি মৌসুমে আবাদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার ৫০০ হেক্টরে। এর মধ্যে আগাম আলু চাষ হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ হেক্টরে।
বর্তমানে স্থানীয় বাজারে আলুর দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ১২ টাকার মধ্যে থাকলেও বিদেশে রফতানির ফলে প্রতি কেজিতে ১৫ থেকে ১৭ টাকা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে কৃষকরা কিছুটা হলেও লাভবান হচ্ছেন। তবে প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে গড়ে ২০ টাকা খরচ হচ্ছে, যা এখনো কৃষকদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল বলেন,আমরা এতদিন শুধু দেশীয় বাজারে আলু বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন বিদেশেও রফতানি হচ্ছে শুনে আমরা খুবই খুশি। এতে ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাবে, আর আমাদের উৎপাদনও বাড়বে।
একই এলাকার আরেক কৃষক নজরুল বলেন,আমাদের উৎপাদিত আলু যদি ভালো দামে বিদেশে যায়, তাহলে আমরা আরও বেশি আলু চাষে আগ্রহী হবো। তবে উৎপাদন খরচ যদি কমানো যায়, তাহলে লাভ আরও বেশি হবে।
দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও থেকে আলু রফতানির কাজে যুক্ত নাঈম এগ্রোর সিইও আল ইমরান বলেন, আমাদের কৃষকদের উৎপাদিত আলুর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ ঠাকুরগাঁওয়ের জন্য বড় সুখবর। আমরা কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করছি, যাতে তারা ভালো দাম পান এবং রফতানির জন্য মানসম্মত আলু সরবরাহ নিশ্চিত হয়।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসিরুল আলম বলেন, জেলার কৃষকেরা এখন আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আলু উৎপাদন করছেন। এতে মান বজায় থাকছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে। কৃষকরা যাতে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ পান, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে।