জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নির্বাচন কমিশনেই থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
নাসির উদ্দিন বলেন, সরকার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা না করে ইসি থেকে এনআইডি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেবে না বলে বিশ্বাস করে কমিশন।
তিনি বলেন, কেন ইসিতে এনআইডি রাখা দরকার সে ব্যাপারে সরকারকে লিখিতভাবে জানাবে কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, যেখানে ভোটার হালনাগাদের কার্যক্রম চলছে, এমন সময় সরকার তাড়াহুড়ো করে এনআইডি স্থানান্তরে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে-সেটা মনে করে না কমিশন।
এদিন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মনির হোসেন বলেন, সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশ উপেক্ষা করে তাদের একটি প্রস্তাব ছিল এনআইডি স্থানান্তর। সেটা এখন হচ্ছে। একটি সুবিধাবাদী গ্রুপ এটা করতে প্রভাবিত করছে। আমরা সিইসিকে বলেছি, এনআইডি নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখতে হবে। না হয় ইসির সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছ থেকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি) সেবা সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ সেবার জন্য তৈরি করা হচ্ছে সিভিল রেজিস্ট্রেশন নামে আলাদা কমিশন। ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ’, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকের আলোচনা অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।
সোমবার উপদেষ্টা পরিষদের নির্দেশনার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া’ পর্যালোচনার লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সভা করে।
উপদেষ্টা পরিষদের নির্দেশনায় বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া প্রণয়ন সময়োপযোগী। তবে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন না রেখে সম্পূর্ণ স্বাধীন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালনা করা সমীচীন।
সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্মনিবন্ধন সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে এনআইডি এবং এনআইডির ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় অনাবশ্যক জটিলতা এবং জনদুর্ভোগ পরিহার করা আবশ্যক। এই উদ্দেশ্যে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রস্তাবিত অধ্যাদেশ পরিমার্জন করে উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে উপস্থাপন করতে পারে।