নারীদের নাক ও কান ফোঁড়ানো প্রসঙ্গে ইসলাম
নারীদের নাক ও কান ফোঁড়ানো নিয়ে নানা কথা শোনা যায়। অনেকে এটাকে আল্লাহতায়ালার সৃষ্টির পরিবতর্ন বলে তা করতে নিষেধ করেন। অনেকে আবারা বলেন, নারীদের অলংকার পরিধানের জন্য নাক বা কান ফোঁড়ানো সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তনের নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন নয়। বরং নারীদের নাক ও কানে অলংকার পরিধানের জন্য নাক ও কান ফোঁড়ানো জায়েজ।
হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ থেকে নারীদের নাক-কান ফোঁড়ানোর কথা পাওয়া যায়। এ বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা কোনো হাদিসে বর্ণিত হয়নি। হজরত আবদুর রহমান ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। আমি এক ব্যক্তিকে ইবনে আব্বাস (রা.)-এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনেছি যে, আপনি আজহা বা ফিতরের কোনো ঈদে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন? তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ। অবশ্য তার সঙ্গে আমার এত ঘনিষ্ঠতা না থাকলে স্বল্প বয়সের কারণে আমি তার সঙ্গে উপস্থিত হতে পারতাম না। তিনি আরও বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বের হলেন। তারপর নামাজ আদায় করলেন, এরপর খুতবা দিলেন। ইবনে আব্বাস (রা.) আজান ও ইকামতের কথা উল্লেখ করেননি। এরপর তিনি মহিলাদের কাছে এলেন এবং তাদেরকে ওয়াজ-নসিহত করলেন। তাদেরকে দান-সদকা করার আদেশ দিলেন। আমি দেখলাম, তারা তাদের কান ও গলার দিকে হাত প্রসারিত করে (কান ও গলায় পরিহিত গয়নাগুলো) হজরত বিলাল (রা.)-এর কাছে দিচ্ছে। এর পর হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) হজরত বিলাল (রা.)-এর গৃহে গমন করলেন। -সহিহ বোখারি: ৫২৪৯
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। এর পূর্বে ও পরে কোনো নামাজ আদায় করেননি। তারপর তিনি নারীদের কাছে আসলেন। সঙ্গে ছিল হজরত বেলাল (রা.)। তারপর তিনি নারীদের দান করতে আদেশ দিলেন। তখন নারীরা তাদের কানের দুল ও গলার হার দান করতে লাগল। -সহিহ বোখারি: ৯৬৪
আরেকটি দীর্ঘ হাদিসের একাংশে এসেছে, … একাদশতম নারী বলল, আমার স্বামী আবু যারা। তার কথা আমি কী বলবো? সে আমাকে এত অধিক গহনা দিয়েছে যে, আমার কান ভারী হয়ে গেছে। ... হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, আবু যারা তার স্ত্রী উম্মে যারার জন্য যেমন আমিও তোমার প্রতি তেমন। ‘ –সহিহ বোখারি: ৫১৮৯
তবে নাক-কান ফোঁড়ানোর পর খেয়াল রাখতে রাখতে হবে, ফরজ গোসল ও অজুর সময় যেন অলংকার ভেদ করে চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছায়। না হলে তার অজু-েগোসল কোনোটাই হবে না।