কৃত গোনাহ প্রকাশ করা কী ঠিক?
গোনাহ করার পর, সেই গোনাহের বিবরণ জনসম্মুখে বর্ণনা করা জায়েজ নয়। এভাবে বর্ণনা করার দ্বারা দু’টি খারাপ কাজ হচ্ছে।
এক হলো- গোনাহ করার পর সেটি প্রকাশ করে এক ধরণের ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করা হচ্ছে যে, আমি গোনাহ করেছি। অথচ বান্দা আল্লাহতায়ালার অনুগত থাকবে, এটাই ছিল তা স্বাভাবিক প্রকৃতি। কিন্তু সে গোনাহ করে যেমন আল্লাহতায়ালার বিধানের বিদ্রোহ করেছে, আবার তা জনসম্মুখে প্রকাশ করে বেপরোয়া মানসিকতা প্রকাশ করে আরও গোনাহের কাজ করল।
দ্বিতীয়তঃ তার এ বিবরণ দ্বারা অন্য কেউ প্রলুব্ধ হয়ে এমন গোনাহের কাজ করতে পারে। যা তার জন্য আরও ক্ষতিকর। কারণ, তার গোনাহের বিবরণ শুনে যত ব্যক্তি ওই গোনাহের কাজ করবে, এর পাপের দায়ভার ওই ব্যক্তির আমলনামায়ও জমা হবে।
তাই গোনাহের পর তা প্রকাশ নয়, বরং তা লুকিয়ে আল্লাহতায়ালার দরবারে কান্নাকাটি করে তওবা করা উচিত।
আল্লাহতায়ালা কোনো মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারেও প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ শ্রবণকারী, বিজ্ঞ। -সূরা নিসা: ১৪৮
যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতা প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না। -সূরা নূর: ১৯
সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, আমার সব উম্মতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোনো লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটালো যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার ওপর আল্লাহর দেওয়া আবরণ খুলে ফেলল। -সহিহ বোখারি: ৬০৬৯
সাহাবি হজরত জায়েদ বিন আসরম (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এখন সময় এসেছে, তোমরা আল্লাহর নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করা থেকে ফিরে আসো। যদি কেউ এরূপ (পাপ) কোনো কিছু করে বসে, তবে তাকে আল্লাহর পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকা উচিত। যে ব্যক্তি নিজ পর্দা উন্মোচন করবে তবে আমরা তার ওপর আল্লাহর কিতাবের নির্ধারিত শাস্তি জারি করব। -মুয়াত্তা মালিক: ১৭৬৯