বলা হয়ে থাকে ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট ম্যাচের উত্তেজনা কেবলমাত্র রাজনৈতিক কারণেই। ভারতের থেকে অনেকটাই দুর্বল পাকিস্তান ক্রিকেট দল। কথাটা সত্য বটে! ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে পাকিস্তান শেষ ম্যাচ জিতেছিল ৮ বছর আগে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে সেবার ভারতকে হারিয়েছিল তারা। তবে এবার আর ভারতের কাছে পাত্তাই পেল না পাকিস্তান।
বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। এ নিয়ে ভারতের বিপক্ষে টানা ৭ ম্যাচে জয়হীন পাকিস্তান।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৪ ওভারে ২৪১ রানেই অলআউট হয় পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৪২.৩ ওভারেই ৪ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় ভারত।
২৪২ রানের ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই পাকিস্তানের বোলাদের উপর চড়াও ভারতীয় ব্যাটাররা। দলীয় ৩১ রানের মাথায় শাহিন আফ্রিদির বলে ২০ রান করে রোহিত ফিরে যান রোহিত। এরপর শুভমান গিল ও বিরাট কোহলি গড়েন ৬৯ রানের জুটি। প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরির পর, এ ম্যাচেও রান পেয়েছেন ওপেনার শুভমান গিল। আবরার আহমেদের দুর্দান্ত বলে আউট হওয়ার আগে ৫২ বলে করেছেন ৪৬ রান।
অনেক ধরেই ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না কোহলিও। তবে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাকিস্তানকে পেলে যেন জ্বলে ওঠেন তিনি। এদিন অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন শ্রীয়াস আইয়ারও। সাজঘরে ফেরার আগে আইয়ারের ব্যাট থেকে আসে ৬৭ বলে ৫৬ রান। কোহলি তুলে নেন তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫১ তম সেঞ্চুরি। আর তাতেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে সহজ জয় পায় ভারত।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই পেয়েছিল পাকিস্তান। তবে সে ভালো শুরুকে লম্বা হতে দেননি হার্দিক পান্ডেয়া। নবম ওভার বল করতে এসে দলীয় ৪১ রানের মাথায় বাবর আজমের উইকেট তুলে নেন এই পেস অলরাউন্ডার। বাবর ফিরে যান ২৬ বলে ২৩ রান করে। আগের ম্যাচে চোট পাওয়া ফখর জামানের বদলি হয়ে নামা ইমাম-উল-হককে ফিরতে হয়েছে অক্ষর প্যাটেলের ডিরেক্ট থ্রোতে রান আউট হয়ে। ইমামের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১০ রান। পাওয়ারপ্লেতে ৫২ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। এরপর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সৌদ শাকিল। দুজনে মিলে গড়েন ১০৪ রানের জুটি। তাদের জুটি ভাঙে দলীয় ১৫১ রানের মাথায় রিজওয়ান আউট হয়ে ফিরে গেলে। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান।
রিজওয়ানের বিদায়ের পর আর বড় কোনো জুটি গড়তে পারেনি পাকিস্তানি ব্যাটাররা। পরের ওভারে শাকিলও ফিরে যান ৬২ রান করে। এরপর নিয়মিত বিরতি উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান। শেষে খুশদিল শাহ এর ৩৮ রানে ভর করে ১০ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করতে সক্ষম হয় রিজওয়ানের দল।
এ ম্যাচ হারের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের। টানা দুই ম্যাচ হারার পর সেমি ফাইনালে ওঠার সুযোগ নেই বললেই চলে রিজওয়ানের দলের। আগামীকাল বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড জিতলে আসর থেকে বিদায় নিতে হবে গতবারের চ্যাম্পিয়নদের। আর টানা দুই ম্যাচ জিতে সেমিতে এক পা দিয়ে রাখলো ভারত।