‘গণপরিষদের কথা বলা মানেই গণতন্ত্রকে দীর্ঘায়িত করার ষড়যন্ত্র’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহম্মেদ বলেছেন, যারা গণপরিষদের কথা সামনে আনছে, যারা সেকেন্ড রিপাবলিকের কথা সামনে আনছে হয় তারা বুঝে না, অথবা বুঝে আমাদের এই রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে আরও দীর্ঘায়িত একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র আছে।

শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে 'গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ত্যাগ ও নেতৃত্ব' শীর্ষক আলোচনা সভা ও নন্দিত নেত্রী খালেদা জিয়া বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউটের (আইডিইবি) মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এনআরএফ) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিজ্ঞাপন

ঘোষণাপত্রে জাতীয় নাগরিক পার্টির অন্যতম লক্ষ সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠায় গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র এবং ঘোষণাপত্র থাকবে, কেউ সমাজতন্ত্র চায়, কেউ অন্য কিছু চায়। আমি নতুন বন্ধুদের বলতে চাই, সেকেন্ড রিপাবলিক, আমাদের বর্তমান রিপাবলিক কি অসুস্থ হয়ে গেছে? সেকেন্ড রিপাবলিক কখন হয়? এর অর্থ কি? রিপাবলিক হচ্ছে যেখানে তার নির্বাচিত প্রতিনিধিরা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, তাদের নমিনাল অথবা ইলেক্টেড হেড অফ দ্যা স্টেট থাকবে৷ সেটা কি আমাদের নেই?

তিনি বলেন, নতুন সংবিধানের জন্য আপনারা কথা বলছেন, নতুন সংবিধান যেটা হবে সেটা সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যাপক সংশোধনী প্রস্তাব আপনারাও তো দিয়েছেন সংস্কার কমিশনে, আমরাও দিয়েছি। প্রয়োজনীয় গণতান্ত্রিক সংস্কার, বর্তমান গণআকাঙ্খা এবং ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের যে প্রত্যাশা এবং আকাঙ্খা নিয়ে আমাদের সন্তানরা রক্ত দিয়েছে, সে আকাঙ্খা কে তুলে ধরেই, প্রত্যাশাকে তুলে ধরে আমাদের সংশোধনীগুলো সাজিয়েছি নতুন বাংলাদেশে তরুণদের যে চাহিদা সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, নতুন সংবিধানের নাম যদি আপনারা নতুন সংবিধান দেন ঠিক আছে কিন্তু গণপরিষদ কেন বললেন, আমরা বুঝলাম না। গণপরিষদের ইংরেজি নাম হচ্ছে কন্সটিটিউশনাল এসেম্বলি, এটা ইংরেজিতে বলে ইনসেপশনাল ইন এনি ইনডিপেনডেন্ট কান্ট্রি। যে সময় দেশে কোন সংবিধান রচিত থাকে না, কোন একটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবার পর তখন গণপরিষদের প্রয়োজন হয়। গণপরিষদের সদস্যরা সংবিধান প্রণয়ন করেন, সে সংবিধানের ভিত্তিতে পরে সংসদ নির্বাচন হয়।

আমাদের এখানে গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য নতুন করে কী কোন স্বাধীন রাষ্ট্র হয়েছি? রাষ্ট্র ত আমাদের আছে। আমরা হচ্ছি স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আমাদের যেভাবেই হউক একটা সংবিধান আছে, যে সংবিধানটাকে আমরা এখন পুরোপুরি অউন করি না বলেই ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে সংবিধানটাকে শেখ হাসিনা দলীয়করণ করে গণতন্ত্রের বিপক্ষে, নিজেদের পক্ষে সাজিয়েছিলেন সেদিনই বলেছি এটার সংস্কার দরকার। কিন্তু গণপরিষদ কেন হবে? এর মধ্যে ত আরও একটি উদ্দেশ্য আছে। যারা গণপরিষদের কথা সামনে আনছে, যারা সেকেন্ড রিপাবলিকের কথা সামনে আনছে হয় তারা বুঝে না, অথবা বুঝে আমাদের এই রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে আরও দীর্ঘায়িত একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র আছে।

যারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছে সংসদীয় নির্বাচনের আগে, তাদের একটি মতলব আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কারণ ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান কি মেম্বার-চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য হয়েছিলো, দেশে পৌরসভা, উপজেলা নির্বাচনের জন্য হয়েছিলো? তাহলে তারা কেন মেম্বার-চেয়ারম্যান নির্বাচন আগে হবে, আগে হবে এই দাবি তুলছে? একটা বিষয় আছে, সেটা হচ্ছে যত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের পথটা যত দীর্ঘায়িত করা যায় ততই তাদের লাভ। কারও ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হবে আর কারও মনোবাসনা পূর্ণ হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক ড. আনোরুল্লাহ চৌধরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহা-সচিব রুহুল কবির রিজভী, বিশিষ্ঠ রসায়ন বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, ছাত্র সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন রুনু, ভারপ্রাপ্ত চেয়্যারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসিম, সহ স্বেচ্ছা সেবক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজেড সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।