সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে: জিএম কাদের
-
-
|

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের
কর্তৃত্ববাদী সরকারের সামনে প্রশাসন বা সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো অসহায় হয়ে পড়ে। তাই কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি।
শনিবার (২০ মে) দুপুরে জাপার বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোকিত মানুষ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাজমিন সুলতানা তুলির নেতৃত্বে একদল নারী উদ্যোক্তা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের হাতে ফুল দিয়ে দলটিতে যোগ দেন।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ইতিমধ্যেই সরকার প্রধান ঘোষণা করেছেন আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। সবগুলো আসনে ইভিএম-এ ভোট গ্রহণ না করলেও, যে সকল আসনে সরকার দলীয় প্রার্থীরা প্রকাশ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না সেখানে হয়তো ইভিএম-এ ভোট গ্রহণ চলবে। জাতীয় পার্টি প্রহসনের নির্বাচন চায় না। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য ডাকা হলে, আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংলাপে অংশ নেবো।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশে উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করেছে। উপনিবেশিক আমলে মানুষকে শোষণ করতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হতো। প্রশাসকদের জবাবদিহিতা থাকতো শুধু সরকারের কাছে, কারণ সাধারণ মানুষের কাছে প্রশাসকদের কোন জবাবদিহিতা থাকে না। বর্তমানে দেশে গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও নেই। সকল ক্ষেত্রে প্রসাশক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, রাজনীতিবিদদের কোন কর্তৃত্ব নেই। তাই দেশের জনগণের কাছে কারো জবাবদিহিতা নেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আদর্শগত পার্থক্য থাকলেও, চরিত্রগত কোন পার্থক্য নেই। দল দুটি দুর্নীতি, দুঃশাসন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দলবাজি করে মানুষের মাঝে বিভেদ তৈরি করেছে। তারা বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। দেশের মানুষের কোন অধিকার নেই, দেশের মানুষের নিরাপত্তা নেই। হাসপাতালের জন্য বড় বড় ভবন তৈরি হচ্ছে, কিন্তু হাসপাতালে ডাক্তার নেই, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা হচ্ছে, কিন্তু সেখানে লেখাপড়া নেই, ছাত্রদের শুধু পাশ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আবার মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোন উদ্যোগ নেই। অভিযোগ আছে জাতিকে ধ্বংস করতে মাদক বিস্তারে ক্ষমতাশীনরা জড়িত।
জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। গেলো তিন বছরে মানুষের ব্যয় বেড়েছে ৪০ শতাংশ, কিন্তু আয় বাড়েনি। আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কারণে দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় না। মন্ত্রীরা যা বলেন, তা সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেন না। মন্ত্রীরা দেশের মানুষকে সম্মান দিয়ে কথা বলতে জানেন না। আবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বিএনপিকেও বিশ্বাস করেন না সাধারণ মানুষ। দুটি দলের বিকল্প হিসেবে জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় দেশের মানুষ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, এডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের এমপি, নাজনীন সুলাতানা, মাসরুর মওলা, ভাইস চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ শফি, মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, আব্দুল হামিদ ভাসানী, মো. বেলাল হোসেন, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এনাম জয়নাল আবেদীন, হুমায়ুন খান প্রমুখ।