মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার বিচার হবে: ড. ইউনূস
-
-
|

ছবি: স্কাই নিউজ/ কর্ডেলিয়া লিঞ্চ মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্কাই নিউজের এশিয়া সংবাদদাতা কর্ডেলিয়া লিঞ্চকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
বুধবার (৫ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে।
স্কাই নিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, বিচার হবে। শুধু তার (হাসিনা) নয়, তার সঙ্গে জড়িত সকল লোক- তার পরিবারের সদস্য, তার ক্লায়েন্ট বা সহযোগীদেরও।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বর্তমানে ভারতে পালিয়ে আছেন শেখ হাসিনা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গোপন আটক কেন্দ্রের একটি নেটওয়ার্ক তত্ত্বাবধান করেছিলেন। যেখানে রাজনৈতিক বিরোধীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধরে আনা হতো, নির্যাতন করা হতো এবং কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছিল। এ সবই হাসিনা করতেন ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ এর ব্যানারে।
বাংলাদেশ হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ হাসিনার গ্রেফতারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে কিন্তু নয়াদিল্লি থেকে কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাননি।
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে শারীরিকভাবে উপস্থিত হয়ে অথবা ভারতে অনুপস্থিতিতে আদালতের মুখোমুখি হবেন।
অধ্যাপক ইউনূস সম্প্রতি আয়নাঘর নামে পরিচিত কুখ্যাত গোপন কারাগারগুলোর মধ্যে একটি পরিদর্শন করেছেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি যা দেখেছেন তাতে তিনি হতবাক। এটি সবচেয়ে কুৎসিত জিনিস হিসেবে তিনি আখ্যায়িত করেছেন।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশকে ব্যবহার করে শত শত অ্যাক্টিভিস্টকে অপহরণ, নির্যাতন এবং হত্যা তদারকি করছেন।
যদিও হাসিনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, তাকে রাজনৈতিকভাবে নির্যাতিত করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা ৮০০টিরও বেশি গোপন কারাগারের নেটওয়ার্ক তদারকির অভিযোগে অভিযুক্ত। যাদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের সংখ্যা এবং পরিসর নিয়ে কাজ করতে সময় লাগছে বলে তিনি জানান।
ড. ইউনূস বলেন, সবাই এতে জড়িত ছিল। পুরো সরকার (হাসিনার সরকার) এতে জড়িত ছিল। তাই আপনি পার্থক্য করতে পারবেন না কারা এটি করছিল। কার আদেশে এটি করছিল এবং কেউ কেউ এসব সমর্থন করত না কিন্তু এই ধরণের কাজগুলো বাধ্য হয়ে করেছিল।
তিনি আরও বলেন, কিছু লোককে শাস্তি দেওয়া হবে। কিছু লোক তদন্তাধীন থাকবে। কিছু লোককে শনাক্ত করা যাবে না। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে এসব মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। বিচার কাজে কোন তাড়াহুড়ো করা হবে না। অপরাধের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেই শাস্তি পাবে।