‘রমজানে বাজারে কারসাজি রোধে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা দরকার’
-
-
|

রমজানে বাজারে কারসাজি রোধে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা দরকার
ভ্যাট বৃদ্ধি, ডলার সংকট ও মজুদের ঘাটতির অজুহাতে রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির প্রতিবাদে চট্টগ্রামে নাগরিক পদযাত্রার আয়োজন করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম ও যুব ক্যাব চট্টগ্রাম।
শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে চকবাজারের অলি খাঁ মসজিদ চত্বরে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। পরে জামালখান প্রেসক্লাব অভিমুখে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংহতি জানান ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।
যুব ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় পদযাত্রায় আরও বক্তব্য দেন ক্যাব মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, সদরঘাটের সভাপতি শাহীন চৌধুরী, চকবাজারের সভাপতি আবদুল আলীম ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, চান্দগাঁও থানার সভাপতি মোহাম্মদ জানে আলম, বোয়ালখালী ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির সাবেক সভাপতি নুর মোহাম্মদ, পাচলাইশের সভাপতি সায়মা হক ও সাধারণ সম্পাদক এম এ আওয়ালসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, রমজান সংযম ও নাজাতের মাস হলেও একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী মজুতদারি ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করছে। ভ্যাট বৃদ্ধি, ডলার সংকট, মজুদ ঘাটতির মতো নানা অজুহাতে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। অথচ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরব ভূমিকা পালন করছে।
তারা আরও বলেন, মানুষ কষ্টে আছে, অথচ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সব কিছু ঠিক আছে বলে প্রতিবেদন দিচ্ছে, যা সরকারকেও বিভ্রান্ত করছে। বিপুল আমদানি ও মজুত থাকার পরও সয়াবিন তেল উধাও, টাকা দিয়েও তেল পাওয়া যাচ্ছে না।
নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট ও কালোবাজারি বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, দেশে আইন থাকলেও এর বাস্তব প্রয়োগ নেই। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা একবার সয়াবিন, একবার পেঁয়াজ, একবার ডাল—এভাবে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটছে।
তারা আরও বলেন, সাধারণ মানুষ রমজানে যেন ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য কিনতে পারে, সেজন্য কেবল প্রশাসনিক পদক্ষেপই নয়, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
বাজারে মূল্য তালিকা না থাকলে কিংবা অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি হলে অভিযোগ করতে ভোক্তা অধিদপ্তরের হটলাইন ১৬১২১ নম্বরে ফোন করার অনুরোধ জানানো হয়।
রমজানে দরিদ্রদের সহায়তায় ইফতার সামগ্রী বিতরণের পরিবর্তে নগদ অর্থ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক বা সুনাম অর্জনের জন্য এক দিনের ইফতার বিতরণের পরিবর্তে পুরো রমজানজুড়ে দরিদ্র মানুষের জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। নগদ অর্থ দিলে তারা নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী কেনাকাটা করতে পারবেন।
তারা আরও বলেন, প্রতিযোগিতামূলক ইফতার বিতরণের নামে এক দিনের জন্য খাবার পেলেও পুরো রমজানজুড়ে দরিদ্রদের সংকট থেকেই যাচ্ছে। তাই ইফতার সামগ্রী বিতরণের বদলে নিত্যপণ্য কেনার জন্য সহায়তা করাই হবে উত্তম উদ্যোগ।
বক্তারা আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা ভ্যাট বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যবৃদ্ধি, ডলার সংকটসহ নানা অজুহাত দেখালেও বাস্তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর সত্যতা পাওয়া যায় না। অধিক মুনাফার লোভে তারা সিন্ডিকেট করে বাজার অস্থিতিশীল করছে।
তারা বলেন, এখন অতিমুনাফা নেওয়া একটি সামাজিক সংক্রমণে পরিণত হয়েছে। ব্যবসায়ীদের একাংশ প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। প্রশাসনের শক্তিশালী মনিটরিং ছাড়া এই অবস্থার উন্নতি সম্ভব নয়।