শিশু ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
-
-
|

ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোছাম্মৎ রোকশানা বেগম হেপীর আদালত আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাকে আরও ৬ মাস কারাভোগ করতে হবে।
রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন, দুই হাত, পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুজে, মুখ বেঁধে, ঘাড় মটকিয়ে যেভাবে একটি সাত বছরে ছোট নিরপরাধ শিশুকে নৃশংস ও পৈশাচিকভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করেছে তার এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার এবং পৃথিবীর আলো-বাতাস গ্রহণের কোন অধিকার নেই। কারণ তার নিকট কোন নারী ও শিশু নিরাপদ নয়। তাকে এই শান্তির মাধ্যমে এই ট্রাইব্যুনাল সমাজের সকলের মাঝে এই দৃষ্টান্ত ও সংবাদ পৌঁছে দিতে চান যে নারী ও শিশুদের প্রতি এই জাতীয় নৃশংস অপরাধের বিচার হয় এবং হবে।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. সাজ্জাদ হোসেন (সবুজ) সাজার বিষয় নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামি রফিকুল ইসলাম কারাগারে ছিলেন। রায় ঘোষণার আগে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১ অক্টোবর ভোর ৬ টার দিকে ভিকটিম রুম থেকে বাথরুমে যায়। সাড়ে ৬ টায় ভিকটিম বাথরুম থেকে ফিরে না আসায় পরিবাররে সদস্যরা তাকে খুঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার পার্শ্ববর্তী ভাড়াটিয়া আসামি মো. রফিকুল ইসলাম (১৯) তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে একাধিকবার কল করে ভিকটিমের পরিবারকে জানায় তার মেয়ে কোথায় আছে সে তা জানে। এই বিষয়ে তাকে একাধিকবার কল করা হলে আসামি ফোন কল কেটে দেন এবং তার বাসা তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরবর্তীতে পুলিশ সহযোগিতায় আসামির রুমের তালা খুলে ভেতরে গিয়ে সাত বছরের শিশু মৃতদেহ কম্বল দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় দেখতে পান।
ঘটনার একদিন পরে আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর আসামি সাক্ষীদের উপস্থিতিতে দোষ স্বীকার বলেন, ভিকটিম বাথরুম থেকে বের হওয়ার পথে ঘরে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে তার মুখে কাপড় গুজে দেয় এবং হাত ও মুখ বেঁধে শ্বাসরূদ্ধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মৃতদেহ কম্বল দিয়ে পেঁচায় এবং লুঙ্গি দিয়ে কম্বল পেঁচিয়ে সানসেটে লুকিয়ে রেখে ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা যাত্রাবাড়ি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল রফিকুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। পরের বছরে ১৪ মে আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক এই রায় দিলেন।