বৃষ্টি উপেক্ষা করে মণ্ডপমুখী উৎসবমুখর বাঙালি
-
-
|

সোনার দুর্গা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকের ছন্দে দুর্গোৎসবে মাতোয়ারা কলকাতাবাসী। তবে আশ্বিনের এই উৎসবের মৌসুমে বৃষ্টি যেন কিছুতেই পিছু ছাড়তে চাইছে না। সপ্তমীর সকাল থেকেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি শুরু হয়েছে কলকাতাসহ রাজ্যর বিভিন্ন জেলায়। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে। তার দোসর হয়েছে ভ্যাপসা গরম।
কিন্তু এসব নিয়ে ভাবতে নারাজ কলকাতাবাসী। রাজ্যের প্রধান উৎসব বলে কথা। বারেবারে তো আসেনা না। বছর মাত্র তিনটে দিন। ফলে প্রকৃতির খামখেয়ালীপনা হেলায় উপেক্ষা করে মণ্ডপমুখী হয়েছেন হাজার হাজার উৎসবমুখর বাঙালি। ছোট থেকে বড় সকলেই ভিড় করেছেন মণ্ডপে মণ্ডপে। ফলে কলকাতার রাজপথ থেকে অলিগলিতে ছিলো দর্শনার্থীদের ঢল। নতুন জামাকাপড়, খাওয়াদাওয়া, আড্ডা, প্যান্ডেল হপিং আর সেলফি সবই চলছে পুরোদমে।
রাজপথের দুইধার দিয়ে কাতার কাতারে লোক হাঁটছে। এক ট্যাক্সি চালকের উক্তি, আজই এই অবস্থা, এখনও বাকি দুইদিন। তখন কী হবে, কে জানে! রাস্তার দু'ধারে বাঁশের ব্যারিকেড করে দেওয়ায় কেউ আর রাস্তায় নামতে পারছেন না। তবে গাড়ী চলাতে বিঘ্ন ঘটছে না এমনটা নয়। কোনো কোনো রাস্তায় ২০ মিনিটের রাস্তা ১ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে গাড়ীতে।
কর্তব্যরত পুলিশ কর্তারা তাঁদের ওয়াকিটকিতে অনবরত ভিড়ের আপডেট নিচ্ছেন অন্যান্য রুটের। ‘এগিয়ে যান এগিয়ে যান, দাঁড়াবেন না’ বলে চিৎকার করছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সেলফি তোলার হিড়িকে থমকে যাচ্ছে ভিড়। ফলে কখনও কখনও বিরক্ত হয়ে সেলফি প্রেমীদের ধমক দিতেও দেখা গেল পুলিশদের।
ভিড় কোনো সময়ে বেশি হচ্ছে, এক নিরাপত্তারক্ষীকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বলেন, উৎসবমুখর কলকাতায় ভিড় সারাক্ষণই। তবে দুপুরের পর ভিড় বেড়েছে। সন্ধ্যার পর আরও বেড়েছে, রাত যত ভিড় তত। শহরের নামী মণ্ডপ গুলোয় রাতের সময় মানুষ চলাচল প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার। গত কয়েকদিন অন্তত এমনই ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে। মণ্ডপে দুর্গা দর্শনের পর ভিড় গিয়ে উপচে পড়েছে খাবারের স্টল গুলোয়। মুঘল থেকে চাইনিজ সহ ভারতীয় নানা রাজ্যের খাবার দেদার বিক্রি হচ্ছে ফুডস্টলগুলোয়।
তারই মধ্যে শনিবার সপ্তমীর সন্ধ্যায় ঠাকুর দেখার ফাঁকে অনেকেই আকাশের মন বোঝার চেষ্টা করছে। সেই বুঝেই পরের মণ্ডপের দিকে এগোনোর পরিকল্পনা। অসুর বৃষ্টিকে আর দুটোদিন রুখে দিক মা দুর্গা এই প্রত্যাশায় পথে নেমেছে কলকাতার উৎসবমুখর বাঙালীরা।