মানহানির মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম উর্মি।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি।
এরপর বেলা ১১টা ২৩ মিনিটের দিকে জামিন বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। উর্মির পক্ষের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে শুনানি করেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম এই জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পাঁচ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ৮ অক্টোবর শহীদ আবু সাঈদসহ অন্য শহীদদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মানহানির মামলার আবেদন করেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ। ওইদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে ২৮ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি গত ৫ অক্টোবর শহীদ আবু সাঈদ নয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা সত্ত্বেও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকার প্রধান নোবেল বিজয়ী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুক লিখেন। যার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধান সম্মতভাবে গঠিত একটি সরকার প্রধান সম্পর্কে বিষোদগার করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়।
গত ২৩জুন, রবিবার কলকাতার রবীন্দ্র সদন প্রেক্ষাগৃহে আমাদের প্রাণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্র চমৎকার একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের নাম 'অঞ্জলি লহ মোর'। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের ৩০০ জন শিল্পী এই নজরুল-প্রণামে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অনুষ্ঠান শুরু হয় ঠিক সকাল ৯টায়, শেষ হয় দুপুর ১টা। সমগ্র অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন ছায়ানট সভাপতি সোমঋতা মল্লিক। প্রভাতী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান এবং 'পুবের কলম' পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় বিদ্যাভবনের ডেপুটি ডিরেক্টর ড. সুজাতা ঘোষ এবং পাকড়াশি হারমোনিয়ামের কর্ণধার শ্রী শুভজিৎ পাকড়াশি।দলীয়ভাবে নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করেন গীতলেখা, গীতিলোক সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস, গানের সাথী, চারুশীলে, স্বরলিপি সঙ্গীত কেন্দ্র (হাওড়া), সপ্তসুর - এর শিল্পীবৃন্দ।
কাজী নজরুল ইসলামের প্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন
পুনশ্চ রবীন্দ্রানুসারী রবীন্দ্রসঙ্গীত শিক্ষাকেন্দ্র এবং কলাপী নিউটাউন - এর শিল্পীবৃন্দ। দলীয়ভাবে নজরুল কবিতা আবৃত্তি করেন উচ্চারণ, কাব্যাঙ্গন, শ্রুতিমন, ব্রততী পরম্পরা (বারাকপুর শাখা) - এর শিল্পীবৃন্দ। এককভাবে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা পাঠ করেন কল্লোল বসু, সুকন্যা রায়, দেবযানী বিশ্বাস, মিতালী ভট্টাচার্য্য, অপরাজিতা মল্লিক, শতানীক ভট্টাচার্য, সংঘমিত্রা ব্যানার্জী, অরণ্য স্পন্দন ভদ্র, মৌমিতা ঘোষ, ইন্দ্রাণী নাগ, ডাঃ সৌমিত্র নারায়ণ শূর, সোহালিয়া সিং, জয়িতা দত্ত এবং গোপা ভট্টাচার্য্য রায়।
একক নৃত্য পরিবেশনায় প্রিয়াঙ্কা কাশ্যপি এবং সায়নী দাস। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন মুদ্রা ডান্স আকাদেমি, ঠাকুরপুকুর চিদানন্দ ড্যান্স একাডেমি, আঙ্গিকম ডান্স একাডেমী - এর শিল্পীবৃন্দ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন অমিতাভ নাথ এবং তানিয়া চ্যাটার্জ্জী। সমগ্র অনুষ্ঠান নজরুলপ্রেমীদের উদ্দেশ্যেই নিবেদিত বলেই জানান কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্র - এর এবং ছায়ানট সভাপতি সোমঋতা মল্লিক। সকলের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠান সফল হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানের বিশেষ সহযোগিতায় ছিল ভারতীয় বিদ্যাভবন, পাকড়াশি হারমোনিয়াম এবং রিয়েল প্লাস্ট।
আমাদের প্রাণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছায়ানট (কলকাতা) অক্সফোর্ড বুকস্টোরে 'চেতনায় নজরুল' অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকেল ৫টায়। ছায়ানট (কলকাতা) - এর উদ্যোগে তৈরি নতুন অ্যালবাম 'নজরুলকে নিবেদিত পংক্তিমালা' অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান এবং 'পুবের কলম' পত্রিকার সম্পাদক জনাব আহমদ হাসান ইমরান।
কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন কবির কবিতা দিয়ে সাজানো হয়েছে এই অ্যালবাম। ভারত এবং বাংলাদেশ মিলে ৩৪ জন বাচিক শিল্পী কণ্ঠ দিয়েছেন এই অ্যালবামে। যাঁদের লেখা কবিতা স্থান পেয়েছে এই অ্যালবামে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম - কুমুদরঞ্জন মল্লিক, অন্নদাশঙ্কর রায়, নরেন্দ্র দেব, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, আশাপূর্ণা দেবী, ভবানীপ্রসাদ মজুমদার। মোট ৬৭ জন কবির ৭২টি কবিতা দিয়ে সাজানো হয়েছে এই অ্যালবাম। এছাড়াও ছিল নজরুল-কবিতা পাঠের আসর। সমগ্র অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ছায়ানটের সভাপতি সোমঋতা মল্লিক।
কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করেন সুকন্যা রায়, শ্রবণা ভট্টাচার্য, দেবযানী বিশ্বাস, ডাঃ সৌমিত্র নারায়ণ শূর, ইন্দ্রাণী নাগ, শতানীক ভট্টাচার্য্য, স্নেহাঙ্গনা ভট্টাচার্য, মিতালী ভট্টাচার্য্য, সুজল দত্ত, স্বপ্নিকা দাস রায়, স্বর্ণিকা দাস রায়, মহুয়া বসু, রাজশ্রী বসু, প্রাযুক্তা চক্রবর্তী, অপর্ণা চক্রবর্তী, চিত্রা সোম বাসু, পাপিয়া মুখার্জী, ব্রততী চক্রবর্তী, সন্দীপ ভট্টাচার্য, সীমা দাশগুপ্তা, মাধবী দে, তপন ঘোষ, সঞ্চয়িতা মিত্র, সুস্মিতা ঘোষ, আর্যদ্যুতি ঘোষ, অর্ঘ্যদ্যুতি ঘোষ এবং দিয়ান দাস।
দলীয় পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন কল্যাণী শ্রুতিকল্পর শিশুশিল্পীরা।
গত ৪ এবং ৫ এপ্রিল রবীন্দ্র সদন চত্বরে অবনীন্দ্র সভাগৃহে ছায়ানট (কলকাতা) - এর উদ্যোগে 'নজরুল কবিতা উৎসব ২০২৪' অনুষ্ঠিত হয়। দু দিনে শতাধিক শিল্পী একক/দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বিকেল ৫টা-রাত্রি ৯টা অনুষ্ঠিত হয় এই কবিতা উৎসব।
পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছায়ানটের সভাপতি সোমঋতা মল্লিক। নজরুল কবিতা উৎসবের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি এবং পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমির সভাপতি
মাননীয় সুবোধ সরকার। ৪ এপ্রিল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. শেখ কামাল উদ্দীন, অধ্যক্ষ- হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয় ও সভাপতি- নজরুল চর্চা কেন্দ্র। তাঁর আলোচনার বিষয় ছিল 'বাংলা সাহিত্যে অভিনবত্বের দিশারী নজরুল'। ৫ এপ্রিল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. শেখ মকবুল ইসলাম (ডি. লিট.), বিভাগীয় প্রধান, বাংলা বিভাগ, সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল মিশন কলেজ, কলকাতা'। কাজী নজরুল ইসলামের ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি তাঁর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণার অনেকখানি অবকাশ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ড. শেখ মকবুল ইসলাম।
একক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন ঊর্মিলা সেন, অতসী নন্দ গোস্বামী, বর্ণালী সরকার, পীতম ভট্টাচার্য, শম্পা দাস,
তাপস চৌধুরী, সুদীপ্ত রায়, শম্পা বটব্যাল, শুভদীপ চক্রবর্তী, নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবযানী বিশ্বাস, ইন্দ্রাণী লাহিড়ী, শাশ্বতী ঘোষ, দেবলীনা চৌধুরী, সৌমিতা নস্কর, মিতালী ভট্টাচার্য্য, সুকন্যা রায়, তৃষিতা সাহা, এরিসা কামিলা, ইনশ্রী নাথ, শতাক্ষী নাথ, সোনালী চট্টোপাধ্যায়, মোনামি সামন্ত, দোয়েল চ্যাটার্জী, চিত্রা সোম বাসু, গোপা ভট্টাচার্য্য রায়, ইন্দ্রাণী নাগ, ডক্টর সৌমিত্র নারায়ণ শূর, মিতালী মুখার্জী, দীপ্তি বর্মন, অন্বেষা মুখার্জী, রাকা দাস, দেবলীনা দাশগুপ্ত, শর্মিলা মাজী, মোনালিসা শীল, অপর্না চক্রবর্তী, দীপিকা গোস্বামী, পাপিয়া ভট্টাচার্য, সৃজিতা ঘোষ, শাশ্বতী বাগচী, প্রাযুক্তা চক্রবর্তী, জয়িতা দত্ত এবং রুনা মুখার্জি।
দলীয় পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন ছায়ানট (কলকাতা), আন্তরিক, বরানগর প্রতিশ্রুতি, নৈহাটি বঙ্কিম স্মৃতি সংঘ, আরশি হরিণঘাটা, প্রেরণা আবৃত্তি অনুশীলন কেন্দ্র, আমরা অ আ ক খ স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ, অন্বেষণ, কাব্যপথিক, শ্রুতিবৃত্ত, আবৃত্তিওয়ালা, শৃণ্বন্তু, বৈখরী, পাঠশালা, অনন্ত উড়ান, অনুরণন, চেতনা, শ্রুতিকথন, যাদবপুর কথাছন্দ এবং প্রতিধ্বনি - এর শিল্পীবৃন্দ।
সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সোমা মুখোপাধ্যায়, অপরাজিতা মল্লিক, দেবলীনা চৌধুরী এবং রাকা দাস।
ছায়ানটের সভাপতি সোমঋতা মল্লিক বলেন, "এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো আমরা 'নজরুল কবিতা উৎসব' - এর আয়োজন করলাম। আমাদের প্রাণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টি নিয়ে ২ দিন ব্যাপী এই বিশেষ আয়োজনে বাচিকশিল্পীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমরা আপ্লুত।
অনেক বাচিক শিল্পীকে আমরা সুযোগ দিতে পারিনি, আমরা সত্যিই ক্ষমাপ্রার্থী, আগামী বছর আরও বেশীদিন ধরে এই আয়োজন করার চেষ্টা করব। কাজী নজরুল ইসলামের লেখা জনপ্রিয় কবিতার পাশাপাশি বেশ কিছু স্বল্পশ্রুত কবিতা আমরা শুনতে পেলাম এই কবিতা উৎসবে - এখানেই আয়োজনের সার্থকতা।"