বদনজর মানুষের বড় শত্রু

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বদনজর মানুষের বড় শত্রু, ছবি: সংগৃহীত

বদনজর মানুষের বড় শত্রু, ছবি: সংগৃহীত

যেসব জিনিস মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু, তার মধ্যে একটি হলো বদনজর। বদনজর সত্যিই মানুষের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নবী কারিম (সা.) তার উম্মতদের বদনজরের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো। কেননা বদনজর সত্য বা বাস্তব ব্যাপার।’ -ইবনে মাজাহ: ৩৫০৮

বদনজর এতটাই মারাত্মক ক্ষতিকারক যে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘কোনো জিনিস যদি ভাগ্যকে অতিক্রম করতে পারত, তাহলে বদনজরই তা অতিক্রম করতে পারত।’ -জামে তিরমিজি: ২০৫৯

বিজ্ঞাপন

এ জন্য আমাদের উচিত বদনজর থেকে নিরাপদে থাকতে সর্বদা মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। নিজের ও সন্তানদের ওপর যাতে কারো বদনজর না পড়ে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা এবং অন্য কারো সম্পদে যাতে নিজের বদনজর না পড়ে, সেদিকেও সতর্ক থাকা।

কারো কোনো অর্জন দেখলে তাতে হিংসা না করে তার জন্য বরকতের দোয়া করা। কারণ নবী কারিম (সা.) অন্যের অর্জন, সৌন্দর্য ও সম্পদে বদনজর দেওয়াকে তাকে হত্যা করার সঙ্গে তুলনা করেছেন। কেউ এ রকম করলে তিনি খুব রাগান্বিত হতেন।

বিজ্ঞাপন

হজরত আবু উমামা ইবনে সাহল (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত আমির ইবনে রবিআ সাহল ইবনে হানিফকে গোসল করতে দেখে বলেন, ‘আজ আমি যে-ই সুন্দর মানুষ দেখলাম, এ রকম কাউকেও দেখিনি, এমনকি সুন্দরী যুবতীও এত সুন্দর দেহবিশিষ্ট নয়।’ এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সাহল সেখানে লুটিয়ে পড়লেন।

এক ব্যক্তি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে হাজির হয়ে আরজ করল, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি সাহল ইবনে হুনাইফের কিছু খবর রাখেন কি? আল্লাহর কসম! সে মাথা তুলতে পারছে না।’ তখন রাসুল (সা.) বলেন, ‘তুমি কি মনে করছ যে তাকে কেউ বদনজর দিয়েছে?’ লোকটি বলল, ‘হ্যাঁ, আমির ইবনে রবিআ (বদনজর দিয়েছে)।’

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমিরকে ডেকে ক্রোধান্বিত হয়ে বললেন, ‘তোমাদের কেউ নিজের মুসলমান ভাইকে কেন হত্যা করছে? তুমি ‘বারাকাল্লাহ’ কেন বললে না?’ এরপর আমির তার হাত, মুখ, হাতের কনুই, হাঁটু, পায়ের আশপাশের স্থান এবং লুঙ্গির নিচের আবৃত দেহাংশ ধুয়ে সেই পানি একটি পাত্রে জমা করলেন। সেই পানি সাহলের দেহে ঢেলে দেওয়া হলো। অতঃপর সাহল সুস্থ হয়ে সবাইকে নিয়ে রওনা হলেন। -মুয়াত্তা ইমাম মালেক: ১৬৮৯

আমাদের উচিত মানুষের বদনজর থেকে নিজেদের সন্তান-সন্ততি, ধন-সম্পত্তি ইত্যাদি রক্ষা করতে সর্বদা সতর্ক থাকা। সর্বাবস্থায় আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা এবং এমন কোনো কাজ না করা, যা অন্যের কুদৃষ্টির সুযোগ তৈরি করতে পারে।