বিশ্বজুড়ে চাহিদার শীর্ষে যে জাতের খেজুর
-
-
|

বিশ্বে চাহিদার শীর্ষে সৌদি আরবের খেজুর, ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র রমজান মাসে ইফতারের প্রধান উপকরণ খেজুর। সৌদি আরবে বিভিন্ন জাতের খেজুরের প্রতিটির রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ, আকৃতি ও রং। মিষ্টতায় রয়েছে বৈচিত্র। সরাসরি খাওয়া ছাড়াও খেজুরের রয়েছে বৈচিত্রময় ব্যবহার। খেজুরকে আরবরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
নবী কারিম (সা.) খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। ফলে রমজান মাসে খেজুর খাওয়া হাজার বছরের মুসলিম ঐতিহ্য। নবী কারিম (সা.)-এর সুন্নত হিসেবে বিশ্বব্যাপী রোজাদারেরা এটি পালন করেন। এ কারণে রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা বেড়ে যায়।
সৌদি আরবের কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘দেশটির রিয়াদ অঞ্চল খেজুর উৎপাদনে শীর্ষে, যেখানে বার্ষিক ৪৩৬ হাজার টন খেজুর উৎপাদন হয়। আল কাসিম অঞ্চল ৩৯১ হাজার টন খেজুর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, আর মদিনা ২৬৩ হাজার টন খেজুর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, সৌদি আরবে ৩৭ মিলিয়ন খেজুর গাছ রয়েছে, যা মোট তিন বিলিয়ন টন খেজুর উৎপাদন করে।

বা থেকে আজওয়া, আনবারা ও সাফাওয়ি খেজুর, ছবি: সংগৃহীত
সৌদি আরবে সাধারণত তিন ধরনের খেজুর পাওয়া যায়। এর মধ্যে শুকনা, আধা শুকনা ও নরম। দেশটির নানা প্রকারের খেজুর থাকলেও বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছয় জাতের খেজুর। সেগুলো হলো-
আজওয়া: দেশটির সব থেকে জনপ্রিয় খেজুর হচ্ছে আজওয়া। বলা হয়, এটি মদিনা শরিফের সর্বোত্তম খেজুর। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইফতার করতেন এই খেজুর দিয়ে। দেখতে কালো, বিচি ছোট এবং খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। তা ছাড়া এই খেজুরের দামও অন্যান্য খেজুরের চেয়ে বেশি। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি খেজুর। সৌদি আরবে প্রতি কেজি আজওয়া খেজুরের দাম পড়ে ৫০ থেকে ১০০ সৌদি রিয়াল। তবে সুপারশপের বাইরে থেকে ক্রয় করলে খরচ আরেকটু কম পড়ে।
আনবারা: এই খেজুর আজওয়ার মতো ছোট নয়। আনবারা খেজুরের আকার বেশ বড়। রং লালচে বাদামি ও পুরু মাংসল এই খেজুরের বিচি খুব ছোট হয়। সৌদির বাজারে এটিও অত্যন্ত দামি।
সাফাওয়ি: এই খেজুর নরম, লম্বাটে। গাঢ় কালচে বাদামি রঙের এটি খেতে মোটামুটি মিষ্টি। এর রয়েছে উচ্চমাত্রার মিনারেল।
বা থেকে বারহি, সেগাই ও খালাস খেজুর, ছবি: সংগৃহীত
বারহি: এই জাতের খেজুর দেখতে ছোট ও গোলাকার হয়ে থাকে। পাকলেও কিছুটা শক্ত ভাব থেকেই যায়। রং হয় বাদামি ও হলদেটে। এর হলদে অংশ একটু টকভাব থাকলেও বাদামি অংশ বেশ মিষ্টি স্বাদের। এ জাতের খেজুর থোকা ধরেই বিক্রি করা হয় সাধারণত। হলদে খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আয়রন, পটাশিয়াম। যখন এই খেজুর পাকার মৌসুম শুরু হয় তখন দেশটির স্থানীয় বাজারে প্রচুর পরিমাণে কিনতে পাওয়া যায়। যারা কি না খুব মিষ্টিজাতীয় খেজুর পছন্দ করেন না, তাদের জন্য উত্তম এই জাতের খেজুর।
সেগাই: সাধারণত রিয়াদের আশপাশে এই খেজুর চাষ হয় এবং রিয়াদে পাওয়া যায় বেশি পরিমাণে। এর দামও অনেক বেশি। শুকনো জাতের এই খেজুর হালকা মিষ্টি স্বাদের। এটা একটু শক্ত বলে মাঝে মাঝে ক্রিসপি বা কুড়মুড়ে ভাব চলে আসে খাওয়ার সময়। রং হয় হালকা হলুদ ও বাদামি বর্ণের সংমিশ্রণ।
খালাস: খালাস খেজুর সৌদি আরবের অভিজাত জাতের খেজুরগুলোর একটি। এটি গাঢ় বাদামি, মিষ্টি মাখনের গন্ধসমৃদ্ধ ডিম্বাকৃতির একটি খেজুর। তা ছাড়া বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সৌদি আরবের খেজুর। কেউ সৌদি আরবে গেলে আর কিছু আনুক বা নাই আনুক খেজুর আনবেই।