ইবাদত ও আমলের অহংকার নিন্দনীয়
-
-
|
ইবাদত ও আমলের অহংকার নিন্দনীয়, ছবি: বার্তা২৪.কম
ইবাদত-বন্দেগি ও আমল নিয়ে অহংকার অত্যন্ত নিন্দনীয়। ইবাদত নিয়ে অহংকার দুইভাবে হয়ে থাকে। এক. ইবাদত করে তা নিয়ে অহমিকা প্রদর্শন করা। দুই. ইবাদত না করার মাধ্যমে অংহকার।
হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ইবাদত করতেন। অথচ তার অতীত-ভবিষ্যতের সব পাপ মাফ করে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হজরত আয়েশা (রা.)-এর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কি কৃতজ্ঞ বান্দা হবো না?’ -সহিহ বোখারি : ৪৮৯৭
ফেরেশতারা দিন-রাত আল্লাহতায়ালার ইবাদত করেন। কিন্তু তারা এ জন্য অহংকার করেন না। যেমন আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই (নৈকট্যশীল ফেরেশতারা) যারা তোমার প্রতিপালকের সান্নিধ্যে থাকে, তারা তার ইবাদতে অহংকার করে না। তারা তার গুণগান করে এবং তার জন্য সিজদা করে।’ -সুরা আরাফ : ২০৬
যারা ইবাদত করা থেকে অহংকার করে, তাদের পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে এবং তা থেকে অহংকার করে, তাদের জন্য আকাশের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যে পর্যন্ত না সুচের ছিদ্রপথে উষ্ট্র প্রবেশ করে। এভাবেই আমরা অপরাধীদের শাস্তি প্রদান করে থাকি।’ -সুরা আরাফ : ৪০
অহংকার দুইভাবে হয়। অন্তরে ও বাইরে। অন্তরের অহংকার আল্লাহ দেখেন। যার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমাকে ডাক। আমি তাতে সাড়া দেব। নিশ্চয়ই যারা আমার ইবাদত থেকে অহংকার করে, তারা সত্বর জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত অবস্থায়।’ -সুরা মুমিন : ৬০
এখানে ইবাদত অর্থ দোয়া। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সব কর্ম নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ -সহিহ বোখারি : ১
বাইরের অহংকার প্রকাশ পায় কথায় ও কর্মে। যেমন- অহংকারীদের বাহ্যিক আচরণ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন তাদের বলা হতো, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তখন তারা ঔদ্ধত্য দেখাত।’ -সুরা সাফফাত : ৩৫
আর কর্মে অহংকারী হলো লোক-দেখানো ইবাদতকারীরা। এদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে প্রতারণা করে। আর তিনিও তাদের ধোঁকায় নিক্ষেপ করেন। যখন তারা নামাজে দাঁড়ায়, তখন অলসভাবে দাঁড়ায়। তারা লোকদের দেখায় এবং আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে। এরা দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছে। না এদিকে, না ওদিকে। আসলে আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি তার জন্য কোনো পথই পাবে না।’ -সুরা নিসা : ১৪২-১৪৩
তিনি বলেন, ‘আর তাদের অর্থ ব্যয় কবুল না হওয়ার এ ছাড়া কোনো কারণ নেই যে তারা আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি অবিশ্বাসী। আর তারা নামাজে আসে অলস অবস্থায় এবং তারা অর্থ ব্যয় করে অনিচ্ছুকভাবে।’ -সুরা তাওবা : ৫৪
বোঝা যায়, আল্লাহর কাছে এদের স্থান কাফেরদেরও নিচে। এসব লোকের নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত সব কিছু বৃথা হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আর আমরা সেদিন তাদের কৃতকর্মের দিকে মনোনিবেশ করব। অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব।’ -সুরা ফুরকান : ২৩
