কাবার ইমাম হিসেবে ৪২ বছর পূর্ণ করলেন শায়খ সুদাইস
-
-
|

শায়খ ড. আবদুর রহমান আস-সুদাইস, ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর গত বোরবার (২ ফেব্রুয়ারি) মক্কার মসজিদে হারামে আসারের নামাজের ইমামতি করেন শায়খ আবদুর রহমান আস সুদাইস। তিনি সাধারণত মাগরিব, এশা ও জুমার নামাজের ইমামতি বেশি করেন। ওই দিন আসরের নামাজ পড়ানোর মধ্য দিয়ে কাবার ইমাম হিসেবে ৪২ বছর পূরণ করলেন।
১৪০৪ হিজরি অর্থাৎ ১৯৮৪ সালের তিনি মসজিদে হারামে প্রথমবারের মতো আসরের নামাজের ইমামতি করেন।
বিশ্বজুড়ে মসজিদে হারামের ইমামদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত নাম শায়খ ড. আবদুর রহমান আস-সুদাইস। পবিত্র কোরআনের সুললিত তেলাওয়াতের জন্য বিশ্বের মুসলিমদের কাছে তিনি পরিচিত। সুদীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় ধরে ইসলামের প্রধান সম্মানিত এই স্থানের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
শায়খ সুদাইস মাত্র ২২ বয়সে ১৪০৪ হিজরি মোতাবেক ১৯৮৪ সালের মে মাসে মসজিদে হারামের খতিব ও ইমাম হিসেবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে তিনি প্রধান ইমাম হন। সৌদি আরবের তৎকালীন বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজের এক রাজকীয় নির্দেশনায় তাকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। মসজিদে হারামের সবচেয়ে কম বয়সী ইমাম হিসেবে সর্বপ্রথম তিনি আসর নামাজের ইমামতি করেন।

২০১২ সাল মোতাবেক ১৪৩৩ হিজরিতে সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা পরিষদের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। পবিত্র দুই মসজিদ পরিচালনা পরিষদের প্রধান হিসেবে ২০১৪ সালে তিনি মসজিদে নববিতে প্রথম বার ইমামতি করেন। ২০২০ সালে মসজিদে হারামে তার ইমামতিতে তারাবির নামাজে কোরআন খতমের ৩০তম বছর পূর্ণ হয়। কোরআন খতম উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো তখনও সুন্দর কণ্ঠে দীর্ঘ সময় দোয়া করেন।
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস ১৩৭৯ হিজরি মোতাবেক ১৯৬০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের কাসিম অঞ্চলের বুকাইরায় জন্মগ্রহণ করেন। বনু আসাদ বিন রবিয়া বিন নাজার গোত্রের আনজা শাখার সন্তান তিনি। তার বাবার নাম আবদুল আজিজ ও মায়ের নাম ফাহদা রউফ। কাসিমে বেড়ে উঠলেও পরবর্তীতে রিয়াদে পাড়ি জমান তিনি। শৈশব থেকেই উত্তম আচার-ব্যবহারের জন্য পরিচিত ছিলেন তিনি।
শায়খ সুদাইস বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় মাত্র ১২ বছর বয়সে পবিত্র কোরআন হেফজ সম্পন্ন করেন। এরপর রিয়াদের মুসান্না বিন হারেসা ইবতেদায়ি মাদরাসায় প্রাথমিক পড়াশোনা করেন। ১৯৭৯ সালে তিনি মাহাদ আল-রিয়াদ আল-ইলমি থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।
১৯৮৭ সালে ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুলুল ফিকাহ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া বিভাগ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডের বর্ষসেরা ইসলামি ব্যক্তিত্ব হিসেবে সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে তিনি হজের খুতবা প্রদান করেন।