নেপালে আবারও কোরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আরব
দ্বিতীয়বারের মতো নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে পবিত্র কোরআন হেফজ (মুখস্থ) প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আরব।
সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, আগামী ২১-২২ ডিসেম্বর কাঠমান্ডুতে পবিত্র কোরআন হেফজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাওয়া ও গাইডেন্স মন্ত্রণালয়।
নেপালের বিভিন্ন রাজ্য ও গভর্নরেট থেকে চার শতাধিক প্রতিযোগী প্রাথমিক বাছাইপর্বে অংশ নেবেন।
আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিযোগিতাটি বিশ্বজুড়ে তরুণ মুসলমানদের মধ্যে কোরআনে কারিমের শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার সৌদি আরবের প্রচেষ্টার অংশ।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের পুরষ্কার প্রদান করা হবে। নেপালজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কাঠমান্ডুতে সৌদি দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে নেপালের মুসলিম কমিশনের সমন্বয়ে প্রথমবারের মতো কোরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
২০২৩ সালে প্রকাশিত নেপালের সর্বশেষ আদমশুমারির তথ্য মতে, প্রায় ১৫ লাখ মুসলমান রয়েছে বলে জানা গেছে। যা মোট জনসংখ্যার ৫.০৯ শতাংশ এবং দেশটিতে ইসলাম তৃতীয় সর্বাধিক অনুসরণ করা ধর্ম। দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায়ই মুসলমানরা বসবাস করেন।
নেপালের ইতিহাস থেকে জানা যায়, হিজরি পঞ্চম শতকে আরব দেশ থেকে বাণিজ্য কাফেলার আগমনের মধ্য দিয়ে হিমালয় কন্যা নেপালে মুসলমানদের আগমন ঘটে। বর্তমানে নেপালে ৪৩০টির মতো মসজিদ রয়েছে। রাজধানী কাঠমান্ডুর রত্নাপার্ক সংলগ্ন এলাকায় দেশটির ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় মসজিদ অবস্থিত। এই মসজিদ ইসলাম ও মুসলমানদের ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। দেশটিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি মাদরাসা।
২০০৮ সালে নেপালে রাজতন্ত্র বিলোপ এবং মাওবাদিদের নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মুসলমানের ধর্মীয় দিবসগুলোতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। এখন নেপালের মুসলিমরা প্রকাশ্যে ধর্মীয় উৎসব পালন করছে।
আশার কথা হলো, গণতান্ত্রিক নেপালের সরকারগুলো মুসলিমদের সমস্যাগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং তাদের উন্নয়নের লক্ষে কাজ করছে। নেপালি মুসলিমরা ভবিষ্যতের ব্যাপারে প্রচণ্ড আশাবাদী। কেননা নেপালের রাষ্ট্র ও সংবিধান দিনদিন তাদের অধিকারগুলোর স্বীকৃতি দিচ্ছে।
২০১৫ সালে গৃহীত সংবিধান প্রথমবারের মতো মুসলিমদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সংখ্যালঘু হিসেবে সরকারি চাকরিতে মুসলিমদের কোটা অধিকার দিয়েছে। যদিও নেপালের সরকারি চাকরিতে মুসলমানের প্রতিনিধিত্ব এক শতাংশের চেয়ে কম।