গুনাহ ঢোকার দরজাগুলো বন্ধ করুন

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গুনাহের দরজা যদি বন্ধ করা যা, তাহলে গুনাহ থেকে বাঁচা সহজ, ছবি: সংগৃহীত

গুনাহের দরজা যদি বন্ধ করা যা, তাহলে গুনাহ থেকে বাঁচা সহজ, ছবি: সংগৃহীত

একটু ভেবে দেখুন, কোন্ কোন্ পথে গুনাহগুলো যাচ্ছে। কোন্ কোন্ দরজা দিয়ে গুনাহ প্রবেশ করছে। ঘরের দরজা বন্ধ না করলে যেমন চোর ঢুকবে, তেমনি গুনাহর দরজা বন্ধ না করলেও অনিচ্ছায় মানুষ গুনাহে জড়িয়ে পড়ে। সুতরাং গুনাহের দরজা যদি বন্ধ করতে পারেন, তাহলে গুনাহ থেকে বাঁচা সহজ হয়ে যাবে।

যেসব পথে গুনাহ হয়, সেগুলো নিয়ে ভাবলে দেখা যায়- তালিকার প্রথমেই আসবে মোবাইল ও কম্পিউটার, এর সঙ্গে ইন্টারনেট। এগুলো ভালো কাজেও ব্যবহার করা যায়, আবার এগুলো দিয়ে গুনাহও হয়ে যায়। প্রয়োজনের কথা বলে এগুলো হাতে আসে, আর তা দিয়ে প্রযুক্তির তুলনায় গুনাহই বেশি প্রবেশ করে।

বিজ্ঞাপন

সুতরাং বাস্তবেই যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে এগুলোর নিরাপদ ব্যবহার করবেন। বিশেষ করে কম্পিউটারের বাস্তব প্রয়োজন হলে সেটা বাড়ির এমন স্থানে স্থাপন করবেন- যেন সবার নজরে পড়ে, আর আপনি গুনাহ থেকে বাঁচতে পারেন।

গুনাহ থেকে বাঁচতে বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করুন। কেননা, জিকির শয়তান থেকে আত্মরক্ষার শক্তিশালী দুর্গ। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘শয়তান তাদেরকে বশীভূত করে নিয়েছে, অতঃপর আল্লাহর জিকির ভুলিয়ে দিয়েছে। তারা শয়তানের দল। সাবধান, শয়তানের দলই ক্ষতিগ্রস্ত।’ -সূরা মুজাদালাহ : ১৯

বিজ্ঞাপন

নিয়মিত জিকির করতে পারলে, ধীরে ধীরে আল্লাহর সান্নিধ্যের সার্বক্ষণিক অনুভূতি অন্তরে বসে যাবে এবং গুনাহর চিন্তা থেকে বের হওয়া সহজ হয়ে যাবে।

বুজুর্গ আলেমরা তো বলেন, রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময়ও জিকিরের গুরুত্ব দিন। যখনই শয়তান মনে কোনো কুমন্ত্রণা সৃষ্টি করবে, মনে মন্দ কাজের কথার উদ্রেক ঘটাবে- তখন জিকিরের অস্ত্র ব্যবহার করে তা প্রতিহত করা। এ জন্য রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় জিকিরের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সম্ভব হলে তাসবিহ রাখা, অন্যথায় মনে মনে জিকির করা।

অলসতা গুনাহর অন্যতম কারণ। জিকির দ্বারা অলসতা দূর করুন। জিকিরের আলো অন্তরে অপার্থিব প্রশান্তির জন্ম দেয়। তখন নিষিদ্ধস্থানে চোখ তুলতে মন চায় না। মনে রাখতে হবে, আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ হলে ব্যক্তির ওপর শয়তানের প্রভাব বাড়ে। ইরশাদ হয়েছে, ‘শয়তান তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে, ফলে তাদেরকে ভুলিয়ে দিয়েছে আল্লাহর স্মরণ।’ -সুরা মুজাদালা : ১৯

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সময়ের মূল্য দেওয়া। আলেমরা বলেন, সময়কে গুনাহর মধ্য দিয়ে কাটানোর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করা। কখনও অবসর সময় না কাটানো। যখনই নির্জনে থাকবেন, অবসর থাকবেন তখনই নিজেকে কোনো কাজে ব্যস্ত রাখবেন। কাজটি দুনিয়ার বৈধ কাজ হলেও অসুবিধা নেই। তবুও আল্লাহর নাফরমানির ভেতর সময় নষ্ট না করা। আর যদি কাজটি হয় ভালো বই পড়া, জিকির-মোরাকাবা করা, কোরআন মাজিদ তেলাওয়াত করা- তাহলে তো আরও ভালো।

হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দুটো নেয়ামত এমন যে, দুটোর বিষয়ে বহু লোক ধোঁকায় নিপতিত- স্বাস্থ্য এবং অবসর।’ -জামে তিরমিজি : ২৩০৭