সম্পদ উপার্জনে ৫ আমল
-
-
|

শুকরিয়া আদায় করা মানে কেবল মুখে কথা বলা নয়, বরং হৃদয় থেকে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, ছবি: সংগৃহীত
ধনসম্পদ মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইসলাম ধর্ম ধনসম্পদ অর্জনকে নিষেধ করেনি বরং হালাল উপায়ে সম্পদ অর্জনকে উৎসাহিত করেছে। কারণ ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্ম নয়, এটি জীবনের জন্য একটি সম্পূর্ণ পথনির্দেশিকা। তাই ধনসম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে ইসলামের রয়েছে স্পষ্ট নির্দেশনা।
জীবনে আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জনে ইসলাম যেসব পথ ও পদ্ধতি অনুসরণের কথা বলে, সেগুলো হলো-
আল্লাহর শুকরিয়া আদায়: আমাদের যা কিছু আছে, তা সবই আল্লাহর অশেষ অনুগ্রহ। তাই সর্বদা শুকরিয়া আদায় করা। কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের জন্য (আমার নেয়ামত) বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও (তবে জেনে রেখো, অকৃতজ্ঞদের জন্য) আমার শাস্তি অবশ্যই কঠিন।’ -সূরা ইবরাহিম : ৭
শুকরিয়া আদায় করা মানে কেবল মুখে কথা বলা নয়, বরং হৃদয় থেকে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
দান করা: দান করা ইসলামে একটি মহান আমল। দানের মাধ্যমে মন পরিশুদ্ধ হয় এবং আল্লাহতায়ালা আমাদের রিজিক বৃদ্ধি করেন। হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, ‘প্রতিদিনই দুজন ফেরেশতা নেমে আসেন। তাদের একজন দোয়া করেন- আল্লাহ! যে দান করে তাকে আপনি আরও দিন। অপরজন দোয়া করেন- আল্লাহ! যে ধনসম্পদ আঁকড়ে ধরে রাখে, তার সম্পদ ধ্বংস করে দিন। -সহিহ বোখারি : ১৪৪২
দানের মাধ্যমে আমরা না কেবল অন্যকে সাহায্য করি, বরং নিজের আত্মিক উন্নতি ঘটাই।
স্থান পরিবর্তন করা: স্থান পরিবর্তন শুধুমাত্র ভৌগোলিক সীমানা পরিবর্তন নয়, এটি জীবনের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। নতুন পরিবেশে গিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাধারা এবং জীবনযাত্রা বদলে যায়। ইসলামেও স্থান পরিবর্তনের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, নবী কারিম (সা.) যখন মক্কায় ছিলেন তখন তিনি অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন। কিন্তু মদিনায় হিজরত করে তিনি একটি নতুন জীবন শুরু করেন। এই হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, স্থান পরিবর্তন কখনও কখনও জীবনের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।
বিয়ে: বিয়ে একটি সুন্নত আমল। বিয়ের মাধ্যমে পরিবার গঠন হয় এবং সমাজের ভারসাম্য রক্ষা হয়। বিবাহিত জীবন সুখী ও সমৃদ্ধ হলে মানুষের মন শান্ত থাকে এবং সে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। ফলে জীবনে আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জন করতে পারবেন। কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত (তারা পুরুষ হোক বা নারী) তাদের বিবাহ সম্পাদন করো এবং তোমাদের গোলাম ও বাঁদীদের মধ্যে যারা বিয়ের উপযুক্ত, তাদেরও। তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন।’ -সূরা নূর : ৩২
ক্ষমা প্রার্থনা করা: অন্যের প্রতি ক্ষমাশীল হওয়া একটি মহান গুণ। ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে আমাদের মন প্রশান্ত হয় এবং আল্লাহর রহমত লাভ করি। ক্ষমাশীলতা একটি সুন্দর চরিত্রের লক্ষণ এবং এটি আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সুখ শান্তি এনে দেয়।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, তিনি বড়ই ক্ষমাশীল।(তোমরা তা করলে) তিনি অজস্র ধারায় তোমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানাদি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য বাগান সৃষ্টি করবেন এবং তোমাদের জন্য নদীনালা প্রবাহিত করবেন।’ -সূরা নূহ : ১০-১২
ধনী হওয়ার পথে ইসলাম আমাদেরকে এভাবেই সুন্দর ও সহজ পথ দেখিয়েছে। মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা, দান করা, কঠিন পরিশ্রম করা, হালাল উপায়ে রোজগার ও ক্ষমা চাওয়া ইত্যাদি আমাদেরকে সফলতার পাশাপাশি আধ্যাত্মিক উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে- ইনশাআল্লাহ।