সেহরির সময় মাইকে ডাকা প্রসঙ্গে
রোজার অন্যতম আমল সেহরি করা। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তোমরা সেহরি খাও, কারণ এতে বরকত রয়েছে।’
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেহরি খাওয়া বরকতপূর্ণ কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিত্যাগ করো না। এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সেহরি করো। কারণ যারা সেহরি খায় আল্লাহতায়ালা তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।’
সেহরির এই বরকতময় সময়ে বরকতময় খাবারে অংশগ্রহণের জন্যে আমাদের দেশে মসজিদের মাইক দিয়ে ঘুম থেকে জাগানোর প্রথা অনেক পুরোনো। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে কেউ কেউ এটাকে বেদআত বলার চেষ্টা করছেন, কেউ এ কাজকে বাড়াবাড়ি বলে অভিহিত করে তা থেকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করছেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে দেশের বরেণ্য কয়েকজন আলেমের সঙ্গে কথা হয়। এ বিষয়ে তাদের অভিমত হলো- সেহরির সময় ডাকার এই প্রথা একটি ব্যবস্থাপনাগত বিষয়। মানুষ মারা গেলে যেভাবে মসজিদে ঘোষণা করা হয় এটা তেমনি একটি ঘোষণা। এটাকে যেহেতু স্বতন্ত্র একটি ইবাদত হিসাবে কেউ করে না তাই এটাকে বেদআত বলা যায় না।
তারা আরও জানান, তবে সেহরি সময় ডাকার ক্ষেত্রে শরিয়তের কিছু নিয়মনীতি ও আদব রয়েছে, যা অনুসরণ করা উচিত। সে সবের কয়েকটি হলো- ‘স্বাভাবিক সময়ের অনেক আগে থেকে সেহরির জন্য না ডাকা। ডাকার সময় ওয়াজ না করা, এ ছাড়া মসজিদের মাইকে গজল-হামদ-নাত ছেড়ে দেওয়া ইত্যাদি কাজ শরিয়ত সমর্থন করে না।’
প্রসঙ্গত, সুবহে সাদেকের কাছাকাছি সময় সেহরি খাওয়া মোস্তাহাব। তবে এত দেরি করা মাকরূহ যে, সুবহে সাদেক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘সব নবীকে সময় হওয়ার পরপরই ইফতার তাড়াতাড়ি করতে এবং সেহরি শেষ সময়ে খেতে আদেশ করা হয়েছে।’ -আল মুজামুল আওসাত : ২/৫২৬
হজরত আমর ইবনে মায়মুন আলআওদি বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম দ্রুত ইফতার করতেন আর বিলম্বে সেহরি খেতেন।’ -মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ৭৫৯১