৯৫ বছর বয়সে স্নাতকোত্তর!
-
-
|

ছবি : সংগৃহীত
ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, এই কথা আবারও প্রমাণ করলেন ৯৫ বছর বয়েসি ডেভিড মার্জট। তার কাণ্ডে হতবাক গোটা নেটপাড়া।
বিবিসি জানিয়েছে, কানাডার ভাঙ্কুভারের সারির বাসিন্দা ডেভিড মার্জট। ৯৫ বছর বয়সে তিনি মাস্টার্স করলেন আর্টসে। কিংস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে মর্ডার্ন ইউরোপিয়ান ফিলোসফির ওপরে স্নাতকোত্তর হন তিনি। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হওয়ার ৭২ বছর পর তিনি আবারও ছুটে যান সেই পড়াশোনার দিকেই। পড়াশোনার সত্যিই কোনো বয়স হয় না। এদিকে, এই ঘটনা চাউর হতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসার ঝড় উঠেছে।
ডেভিড মার্জট কিংস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মর্ডার্ন ইউরোপিয়ান ফিলোসফি বা আধুনিক ইউরোপীয় দর্শনে এমএ বা স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। ডাক্তারি পাস করার ৭২ বছর পর বর্তমানে এই ডিগ্রি প্রাপ্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, মার্জট এখন পার্টটাইম ডক্টরেটের চিন্তা-ভাবনা করছেন, যা সম্পন্ন হতে হতে ১০২ বছর বয়স হবে তার।
মার্জটের ভাষ্য মতে, তার এই ডিগ্রি তার পরিশ্রমের প্রতীক। তিনি বলেন, ‘আমার স্মৃতি আর আগের মতো নেই।’
যারা শিক্ষাকে মাঝপথে ছেড়ে দিয়েছেন এবং এখন নতুন করে আবার পড়াশোনা শুরু করতে চান; তাদের উদ্দেশে মার্জট বলেন, ‘এটি একটি জুয়া খেলার মতো। আপনি বাজি ধরবেন, হয় জিতবেন নয় হারবেন। তবে মোদ্দা কথা হলো এই যে, যদি আপনার ইচ্ছে থাকে, আত্মার থেকে করতে ইচ্ছে করে, তবে এগিয়ে যান। সাফল্য আসতে বাধ্য।’
ডিগ্রি নিয়ে মার্জটকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমি ভাগ্যবান যে, ওয়ার্ল্ড ক্লাস শিক্ষকরা আমাকে তাদের ছাত্র হিসেবে গ্রহণ করেছেন। সেই সঙ্গে আমাকে সবসময়ই উৎসাহ দিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, নিজেকে সবসময় একটা চ্যালেঞ্জ দেওয়া উচিত। সে আপনি যতই বুড়ো হয়ে যান না কেন!’
মার্জটের বিয়ের ৬৫ বছর পর তার স্ত্রীবিয়োগ হয়। তিনি জানান, তার এই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি তার মন মেজাজকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করেছে।
এমন কৃতী ছাত্রের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কিংস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক স্টেলা স্যান্ডফোর্ড বলেন, ‘ডেভিড যখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন, তার কাছে আগাগোড়াই এক অভাবনীয় ক্যারিয়ার ছিল। সেই সঙ্গে ছিল জ্ঞান ও অকল্পনীয় অভিজ্ঞতার সম্পদ।’
তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষক হিসেবে আমরা সবসময় চাই, আমাদের শ্রেণিকক্ষে যেন বৈচিত্র্য বিরাজ করে। তাতে যে উপকারটি হয়, তা হলো, বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন রকমের আলোচনা। এতে পড়ুয়ারা যেমন লাভবান হন, সেই সঙ্গে একজন শিক্ষক হিসেবে আমরাও সমৃদ্ধ হই। আর এই ধরনের আলোচনা শ্রেণিকক্ষকে বৈচিত্র্যময়ের পাশাপাশি আকর্ষণীয় করে তোলে। আমাদের এ কথা ভুলে যাওয়া উচিত নয়, এই বৈচিত্র্যময় তালিকায় প্রজন্মগত বৈচিত্র্য এক অন্যতম নিদর্শন।’