বাংলাদেশের ঈদ উৎসব সম্পর্কে কিছু কথা

  • সাইমন জাকারিয়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

বাংলাদেশের ঈদ উৎসবের সঙ্গে সম্পর্কিত রয়েছে এদেশের মুসলিম সমাজের রুচি, পোশাক, খাদ্য, পারস্পরিক সৌহার্দ। এছাড়া, আত্মীয়-পরিজনদের মিলিত হবার অনাবিল আনন্দ ঈদ উৎসবের সঙ্গে গ্রথিত রয়েছে। তাই তো দূর-দূরান্ত থেকে এদেশের মানুষ শত কষ্টে হলেও ছুটে যায় আপন বাড়ির ঠিকানায়। ঈদ উৎসবে আবেগের আরেকটি প্রকাশ ঘটে উপহার বিনিময় ও বিচিত্র খাবারে আত্মীয়-পরিজনদের আপ্যায়নে। শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক কালের বাংলাদেশে ঈদ উৎসব কেন্দ্র করে পোশাক-শিল্পের সৃজনশীলতা, শিল্পিত ভাবাদর্শের বিকাশ ও বিস্তার ঘটেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের নারী ও পুরুষ ঈদ উৎসব উপলক্ষে সাজ-সজ্জা ও রূপচর্চা সচেতন হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশে ঈদ

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে কবে, কোথায় প্রথম ঈদ উৎসব উদ্যাপন শুরু হয়েছিল, তা সঠিকভাবে জানা যায় না। গবেষক মতে, সন্দ্বীপ অঞ্চলে প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অন্যদিকে গবেষকদের ধারণা, সুলতানি শাসনামল থেকে ঢাকায় অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে ঈদ উৎসব পালিত হয়ে আসছে।

গোড়া থেকেই ঢাকার ঈদ উৎসব উদ্যাপনে নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। ঢাকার ঈদ উৎসবের প্রাচীন আকর্ষণের মধ্যে ছিল ঈদ মিছিল, যার কিছু দৃশ্য বিভিন্ন চিত্রশিল্পীদের অংকিত চিত্রে প্রত্যক্ষ করা যায়। এক সময় ঢাকা মোগল রাজধানীর গৌরব হারায়। কিন্তু তারপরও নায়েব-নাজিমদের আমলে ঢাকায় ঈদ-উল ফিতরের চাঁদ দেখা, ঈদ-মিছিল, ঈদমেলা; এমনকি ঈদ উপলক্ষ্যে পশুর হাট বসতো। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলেও ঢাকার ঈদ উৎসবের ঐতিহ্যিক ধারাবাহিকতা রক্ষিত হয়েছিল। সেসময় নবাব পরিবারগুলোর কল্যাণে ঢাকার ঈদ উৎসবের ঐতিহ্য চলমান ছিল। তবে, পাকিস্তান আমল থেকে ঢাকার ঈদ উৎসব পালনে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। এ সময় সামাজিক আচারে কিছু পরিবর্তন আসে এবং সমাজের অধিকাংশ মানুষ ব্যক্তি ও পরিবারকেন্দ্রিক হয়ে উঠতে থাকে, এতে বৃহত্তর সামাজিক উৎসব আয়োজনের ঐতিহ্য হ্রাস পেতে শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

সাম্প্রতিক কালে ঢাকার ঈদ উৎসব আয়োজনে অভিনবত্ব এসেছে। ঈদ উৎসবকে ঘিরে ঢাকা শহর জুড়ে প্রিন্ট মিডিয়া থেকে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তথা দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক প্রায় সকল ধরনের সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও, চলচ্চিত্র, অডিও-ভিডিও বাজার, এমনকি মোবাইল ফোনের ঈদ উৎসব আয়োজন ও তৎপরতা চোখে পড়ে। পাশাপাশি গৃহসজ্জার উপকরণ বা ফার্নিসার, পোশাকশিল্প, মেয়েদের রূপসজ্জার উপকরণ ও কসমেটিক শিল্প এবং খাদ্যদ্রব্যের শিল্পিত বিকাশ ঘটেছে। উল্লেখ্য, ঈদ উৎসব বাংলাদেশের বিচিত্র পেশার মানুষের পেশাগত নির্ভরতা দিয়েছে।

ঈদের চাঁদ দেখা উৎসব

প্রথম থেকেই ঢাকায় ঈদ-উল ফিতরের চাঁদ দেখা নিয়ে এক ধরনের নিজস্ব ঐতিহ্য গড়ে উঠেছিল। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, মোগল আমলে বর্তমান লালবাগ কেল্লা, সোয়ারিঘাট, চকবাজার প্রভৃতি এলাকায় বিভিন্ন ভবনের ছাদে চাঁদ দেখা উৎসবের মাতামাতি ছিল। এছাড়া, উর্দুরোড, বংশাল, ইসলামপুর, বাবুবাজার, মৌলবীবাজার, নিমতলি প্রভৃতি অঞ্চলেও ঈদের চাঁদ দেখা উৎসব হতো।

প্রথম রমজানের চাঁদ দেখা থেকে শুরু হতো ঈদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি। চাঁদ দেখার পর তা পরিণত হতো উৎসবে। মোগল-সংস্কৃতির এ ধারা ঢাকায় দীর্ঘদিন চালু ছিল। জানা যায়, মোগলদের অবসানের পর নায়েব-নাজিমদের আমলে ঢাকার নিমতলি প্রাসাদকে কেন্দ্র করে চাঁদ দেখা উৎসব এবং ঈদ-মিছিলের আয়োজন করা হতো। মোগল আমলে ঢাকায় ঈদের চাঁদ দেখা নিয়ে সুবাদার ইসলাম খানের সেনাপতি মির্জা নাথান তাঁর ‘বাহারিস্তান-ই-গায়বি’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘সন্ধ্যায় মোমবাতির আলোয় যখন নতুন চাঁদ দেখা গেল, তখন শিবিরে বেজে উঠল শাহি তূর্য। একের পর এক গোলন্দাজ বাহিনী ছুঁড়তে থাকে গুলি, যেন তা আতশবাজি। সন্ধ্যা থেকে মাঝরাত পর্যন্ত চলে এ আতশবাজি। শেষ রাতের দিকে বড় কামান দাগানো হয়; তাতে সৃষ্টি হয় ভূমিকম্পের অবস্থা।’ এই বর্ণনা থেকে ঢাকার ঈদ উৎসবের সূচনার কথা স্পষ্ট জানা যায়।

গবেষকদের অভিমত, ইংরেজ আমলেও ঢাকাতে ঈদের চাঁদ দেখার এই ঐতিহ্যিক রীতির চল ছিল। প্রতিটি ভবনের ছাদে ছোট-বড় সব মানুষই চাঁদ দেখার জন্য অপেক্ষা করত। চাঁদ দেখামাত্র আনন্দ-উৎসব শুরু হয়ে যেত। শিশু-কিশোররা দুই ঈদেই পটকা-আতশবাজি নিয়ে মেতে উঠত।

ঢাকাবাসী ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিল ঘিরে চাঁদ দেখা উৎসব পালন করত। জানা যায়, নবাববাড়ির সদস্যরা আহসান মঞ্জিলের ছাদে বসে চাঁদ দেখতেন এবং চাঁদ দেখামাত্র কামান দাগিয়ে, আতশবাজি পুড়িয়ে নগরবাসীকে ঈদ-উল ফিতরের জানান দিতেন। এরপর শুরু হয়ে যেতো কুশল বিনিময়। কেউ কেউ মনে করেন, নবাব খাজা আব্দুল গনির সময় থেকে চাঁদ দেখা উৎসব, ঈদ-মেলা ও ঈদ-মিছিল ব্যাপক আয়োজনে শুরু হয়। পরে নবাব আহসান উল্লাহ ও নবাব সলিমুল্লাহর সময়ে চাঁদ দেখার উৎসব প্রচলিত ছিল।

নবাবদের আমলে ঈদের চাঁদ দেখার জন্য জনতার ভিড় জমত প্রধানত বুড়িগঙ্গার পাড়ে। নদী-ঘাটে নবাবদের বেশকিছু বজরা বাঁধা থাকত। সেগুলো চাঁদ দেখার জন্য ব্যবহার করা হতো। আহসান মঞ্জিলের সামনেও চাঁদ দেখার জন্য নবাবরা বিশেষ ব্যবস্থা করে দিতেন। পুরুষদের পাশাপাশি নবাববাড়ির নারীরাও চাঁদ দেখা উৎসবে অংশ নিতেন।

সাম্প্রতিক কালে চাঁদ দেখা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আর আগের মতো উৎসাহ নেই। আকাশের পরিবর্তে মানুষের চোখ থাকে টেলিভিশনের পর্দায় বা সোসাল মিডিয়া। সেখান থেকেই তারা জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত জানতে পারে। চাঁদ ওঠার খবর পাওয়া গেলে শিশু-কিশোররা বিচ্ছিন্নভাবে পটকা ও আতশবাজির উৎসব করে। দেশের সব জেলায় আলাদা চাঁদ দেখা কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সারা দেশ থেকে খোঁজখবর নেয়ার পর জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি ঈদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

ঈদের চিরপরিচিত এক দৃশ্য। সৌহার্দ্যের কোলাকুলিতে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করছে দুই শিশু। ছবি: লেখক
 

চাঁদ-রাত

আবহমানকাল ধরে বাংলাদেশের ইসলামপন্থী মানুষ ঈদের ঠিকের আগের রাতকে ‘চাঁদ-রাত’ বলে। ঐতিহ্য অনুসারী ইসলামপন্থী মহিলা-শিশু-কিশোর-যুবা-যুবতী সবার কাছে এই রাতটি অপার্থিব আনন্দের। শিশু-কিশোর-তরুণ বয়সের ছেলে-মেয়েরা সারা রাত জেগে হাতে মেহেদি লাগিয়ে ঈদের আনন্দে রাঙিয়ে তোলে। এছাড়া, নানা ভাবে গান গেয়ে, নেচে আনন্দ-ফুর্তিতে রাতটি পার করে। শুধু তাই নয়, বয়স্ক মহিলারা ঈদের নানা রকম খাবার তৈরি প্রস্তুতির কাজে এই রাতে ব্যস্ত থাকে।

ঈদের জামাত

ইতিহাস পাঠে জানা যায়, ১৪৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার নারিন্দার বিনত বিবির মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিকে ঢাকার প্রথম মসজিদ মনে করা হয়। ঐতিহাসিকরা মনে করেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এখানে ঈদ উৎসবের প্রথম জামাত হতো। এছাড়া, অনেকের ধারণা, বাংলার সুলতান ইউসুফ শাহের আমলে মিরপুর এলাকায় নির্মিত হয়েছিল একটি মসজিদ [বর্তমানে যেখানে শাহ আলী (র.)-এর মাজার]। এখানেও কয়েক শ বছর ধরে ঈদ উৎসবের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ইতিহাসে পাওয়া যায়, পলাশির যুদ্ধের ৪০ বছর আগে সুবাদার মুরশিদ কুলি খাঁর উদ্যোগে লালবাগ শাহি মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। সব শ্রেণীর মুসল্লি এখানে ঈদের জামাত আদায় করতেন, যা আজও চালু আছে।

ঢাকার প্রথম পরিকল্পিত ঈদগাহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, ১৬৪০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ধানমন্ডি ঈদগাহকে। এখানেও বড় ঈদের জামাত হতো। এছাড়া, শায়েস্তা খাঁ ১৬৭৫ খ্রিষ্টাব্দে (১০৮৬ হিজরি) চকবাজার মসজিদ নির্মাণ করেন। এ মসজিদে সুবাদার-আমির-উমরাহ-নাজিমরা, এমনকি তাঁদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ঈদের জামাত আদায় করতেন। পাশাপাশি, ঢাকার গেন্ডারিয়া ধুপখোলা ময়দান, আরমানিটোলা ময়দানে ঈদের বড় জামাত হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মহিলাদের ঈদের জামাতও হতো। জানা যায়, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ এখানে অনুষ্ঠিত এক ঈদ-জামাতে মহিলাদের ইমামতি করেছিলেন।

সাম্প্রতিক কালে ঢাকা শহরে ঈদের নামাজের সবচেয়ে বড় জামাত হয় সুপ্রিম কোর্ট এলাকার জাতীয় ঈদগাহে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমেও বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় ঈদগাহে জামাত শেষে মুসল্লিরা। ছবি: লেখক

ঈদ মেলা

ঢাকাতে ঈদ উৎসব আয়োজনের শুরু থেকেই নানা স্থানে মেলা বসত। এর মধ্যে চকবাজার, ধানমন্ডি ঈদগাহ প্রাঙ্গণ, কমলাপুর, রমনা ময়দান ও পুরানা পল্টনে মেলা জমত বেশি। ওই মেলায় বাঁশি, ঢোল, খেলনা, পুতুল, পুঁতির মালা, মাটির তৈজসপত্র, বাঁশের সামগ্রী ছাড়াও বিন্নি ধানের খই, ময়দা ও ছানার খাবারের পসরা বসত। সময়ের ব্যবধানে এসবের সঙ্গে যুক্ত হয় নাচ-গান, পুতুলনাচ ও সার্কাস। এ মেলা শুধু ঢাকাবাসীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, ঢাকার আশপাশের লোকজনও অংশ নিত।

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে প্রাচীন ঢাকার চকবাজারের ঈদ-মেলার চারটি ছবি রয়েছে। একটি ছবিতে মেলার ভিড়ের মধ্যে এক জায়গায় আছে মীর জুমলার কামান। ঐতিহাসিক ছবি ও তথ্য থেকে জানা যায়, ঢাকার প্রাচীন ঈদ-মেলা হচ্ছে চকবাজারের ঈদমেলা। এই মেলার প্রাচীন ছবিগুলো দেখে বোঝা যায়, এতে সব শ্রেণীর মানুষ অংশ নিত।

ঢাকার পুরানা পল্টন মাঠেও একসময় ঈদের দিন মেলা বসত। স্টেডিয়ামের পরিধি বাড়ার পর একসময় মেলা বন্ধ হয়ে যায়। ঈদ উৎসবের নানা ঐতিহ্য বিলুপ্ত হয়ে গেলেও এখনও কিছু ঐতিহ্য টিকে রয়েছে, যেমন- মেহেদি উৎসব, ঘুড়ি উৎসব প্রভৃতি।

ঈদ-মিছিল

খ্রিষ্টীয় আঠারো-উনিশ শতকের দিকে ঢাকায় ঈদ আনন্দের প্রধান অনুষঙ্গ ছিল ঈদ-মিছিল। এ ধরনের মিছিলের আয়োজক বা পৃষ্ঠপোষক থাকতেন ঢাকার নায়েব-নাজিমরা। সাধারণ ঈদের পরের দিন ঈদ-মিছিলের আয়োজন করা হতো বলে জানা যায়। হাকিম হাবিবুর রহমান, নাট্যকার সাঈদ আহমেদ, আশরাফ-উজ-জামানের স্মৃতিকথা থেকে গত শতাব্দীর বিশ-ত্রিশ দশকে যেসব ঈদ-মিছিল বের হয়েছে, তার বিবরণ পাওয়া যায়।

এ সময়ের ঈদ-মিছিলের বেশকিছু ছবি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। ঢাকায় ঈদ-মিছিলে গাড়ির সমারোহ থাকত। এগুলো সাজানো হতো জাহাজ, ময়ূর, উড়োজাহাজ, নৌকা প্রভৃতির আদলে। এতে থাকত পুরানো ঢাকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কাসিদা পাঠ, সামা ও কাওয়ালি।

ঈদ-মিছিল ঢাকা থেকে এখনো একেবারে হারিয়ে যায়নি। সাম্প্রতিক কালে ঢাকাবাসী নামের একটি সংগঠন ছোট পরিসরে হলেও ঈদ-মিছিলের আয়োজন করে থাকে। এই ঈদ মিছিলটি বাংলাদেশ শিশু একাডেমি থেকে হাইকোর্ট, প্রেসক্লাব হয়ে হাজারিবাগ পর্যন্ত গিয়ে থাকে। জানা যায়, এই ঈদ-মিছিলটি মোগল আমলের ঐতিহ্যের অনুসরণে নতুন করে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে চালু করা হয়।

শেষ কথা

সময়ের পরিবর্তনে বাংলাদেশের ঈদ উৎসবের তো বটেই স্মৃতি-বিস্মৃতির ঢাকা শহরের ঈদ উৎসবের নানা ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। কিন্তু ইসলামপন্থী মানুষের ধর্ম ও সাংস্কৃতিক প্রেমের সংকরে ঈদ উৎসবের ঐতিহ্য এখন টিকে আছে। সাম্প্রতিক কালে ঈদ উৎসবের ঐতিহ্যের সঙ্গে এখন মেগাসপিংমলগুলোয় বহু মাত্রিক ঈদ বাজারের নতুন সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।

পাশাপাশি, ঈদ উপলক্ষ্যে পশুর হাটের সংখ্যাধিক্য ও কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। রূপসজ্জা, পোশাক পরিধান ও খাবার-দাবারের পাশাপাশি বিনোদনের সংস্কৃতিতে সোসাল মিডিয়া ও টিভি চ্যানেলগুলোতে ভরে উঠেছে ঈদের নানা আয়োজন। বন্ধুমহলে বা পাড়ায় পাড়ায় গানের কনসার্টে হতে শুরু করেছে। সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে ঈদের নতুন ছবি। এ পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক কালের ঈদ উৎসবকে নতুন সংস্কৃতির আবাহন হিসেবেও অভিহিত করা যায়।

লেখক: বিশিষ্ট লোক-সংস্কৃতি গবেষক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক ও উপপরিচালক, লোকসংস্কৃতি উপ-বিভাগ, বাংলা একাডেমি।