প্রায় ১৮ বছর ধরে বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটে ভরসার নাম ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। লম্বা সময়ের পরে সেই ফরম্যাট থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলেন দেশের হয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথম সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার। সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যাট হাতে অনুজ্জ্বল থাকলেও একসময় দেশের হয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া মাহমুদউল্লাহর ওয়ানডে ক্যারিয়ার বেশ সমৃদ্ধ।
২০২৫ সালের বাংলাদেশে ক্রিকেট বোর্ডের ( বিসিবি) জন্য কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন তিনি। তখন অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে দেশের ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিবেন ৩৯ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার। হলোও তাই, ২০০৭ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডেতে নাম লেখানো এই তারকা গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক ওয়ানডের প্যাড তুলে রাখলেন চিরদিনের জন্য।
ক্যারিয়ারের শেষটাতে এসে ধাক্কা খেলেও ওয়ানডেতে মাহমুদউল্লাহর বেশ কিছু সুখস্মৃতি আছে। ওয়ানডে বিশ্বকাপের মঞ্চে দেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরিটা তার দখলে। ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাডিলেড ওভালে তার সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৭৫ রান তুলে জয় নিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় টাইগাররা। পরের ম্যাচে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় ক্রিযায়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটাও তুলে নেন তিনি। তাতে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিন সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন তার দখলে।
এছাড়া ২০১১, ২০১৫, ২০১৯ ও ২০২৩ বিশ্বকাপ খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। চার বিশ্বকাপে ২২ ম্যাচে ৯৪৪ রান তুলেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপে তার চেয়ে বেশি রান করেছেন কেবল সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। অবশ্য তারা দুজনই একটি বিশ্বকাপ বেশি খেলেছেন। তবে রানের দিক দিয়ে এগিয়ে থাকলেও তাদের দুজনের চেয়ে গড়ে অনেক এগিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
বিশ্বকাপের চার আসর মিলিয়ে ২৫টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। যেখানে আশেপাশে নেই বাংলাদেশি ব্যাটার। ১৫টিও মারতে পারেননি বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যান। ২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসান ৬০৬ রান করেছিলেন। একই আসরে ৩৬৭ রান করেছিলেন সদ্য বিদায় নেওয়া মুশফিকুর রহিম । ২০১৫ বিশ্বকাপে ৩৬৫ রানের পর গত আসরেও ৩২৮ রান করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের আর কোনো ক্রিকেটার বিশ্বকাপের দুই আসরে তিনশ বেশি রান করতে পারেননি।
আর টেস্টেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন তিনি। ২০২১ সালে অবসর নেওয়ার আগে দেশের হয়ে সাদা জার্সিতে ৫০ টেস্টে ৩৩ গড়ে ২ হাজার ৯১৪ রান করেছেন তিনি। যেখানে ১৬ ফিফটির পাশাপাশি আছে ৫ টি সেঞ্চুরি। এছাড়া বল হাতেও ৪৩ উইকেট তুলে দ্যুতি ছড়িয়েছেন। গেল বছর পর্যন্ত লাল-সবুজ জার্সিতে ১৪১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন তিনি । যেখানে প্রায় ২৪ গড়ে করেছেন ২ হাজার ৪৪৪ রান। আর বল হাতে ৪১ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।