চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা থানা এলাকা থেকে চার বছরের এক শিশুকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির মামলায় মো. সাখাওয়াত হোসেন (২৯) নামে এক পোশাক শ্রমিককে পৃথক ধারায় দুবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে তার স্ত্রী মোসাম্মৎ কমলা বেগমকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে তার মা-ভাইসহ তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে উভয় সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত সাখাওয়াত কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার হরিপুর গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাখাওয়াত নগরীর পতেঙ্গার খেজুরতলা এলাকায় মো. সোহেলের বাসায় সাবলেট থাকতেন। ভাড়া পরিশোধ না করায় সোহেল তাকে বাসা ছাড়তে বললে ২০১৮ সালের ১৩ জুন সন্ধ্যায় চিপস কিনে দেওয়ার কথা বলে সোহেলের চার বছরের মেয়ে সায়মা আক্তারকে নিয়ে যান সাখাওয়াত। পরে ফোনে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
পরদিন সোহেল বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে। তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। পরে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলায় পাঁচজন সাক্ষ্য দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানান, সাখাওয়াতকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর ৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই আইনের ৮ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে আরও একবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। উভয় সাজা একত্রে কার্যকর হবে।
সাখাওয়াতের স্ত্রী কমলা বেগমকে ৭/৩০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এ মামলায় সাখাওয়াতের মা আনোয়ারা বেগম, ভাই জাকির হোসেন এবং মো. বশির আহম্মেদকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার পর উপস্থিত আসামিদের সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।