বছর ঘুরে আমাদের মাঝে আবার এসেছে আত্মশুদ্ধির মাস পবিত্র রমজান। এই মাসটি শুধু ধর্মীয় দিক দিয়ে নয়, সামাজিক দিক দিয়েও সমান গুরুত্বপূর্ণ। দিনব্যাপী রোজা রাখার পর ইফতার করার সময়টি এক অদ্ভুত আনন্দ দেয়, বিশেষত যখন পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে বসে ইফতার করেন।
কিন্তু ঢাকার ব্যস্ত জীবনযাত্রায় অফিস শেষে বাড়ি ফিরতে গেলে সাধারণভাবে যে বিপত্তি থাকে, পবিত্র রমজান মাসে সেটি অনেক গুণ বেড়ে যায়। যানজট এবং গণপরিবহনের অভাবে অনেকেই বিপদে পড়েন। বিশেষ করে ইফতারের সময় ঘরে ফেরার চাপ আরও বেশি হয়ে ওঠে। এ সময়ে রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলো শুধু আর্থিক লাভই দেয় না, বরং মানবতার একটি সুন্দর উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়।
রাইড-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম উবার-এ এমন একটি ফিচার রয়েছে যা রাইডারদের তাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যাওয়া যাত্রী খোঁজার সুযোগ করে দেয়। উবারের ‘ডেস্টিনেশন ফিল্টার’ ফিচারটি ব্যবহার করে নির্দিষ্ট গন্তব্য সেট করা যায়। এতে রাইডাররা এমন যাত্রীদের ট্রিপ রিকোয়েস্ট পান যারা একই দিকে যাচ্ছেন। অনেক চাকুরীজীবী অফিস শেষে এই ফিচারটি ব্যবহার করে থাকেন। রমজানের বিকেলের মতো ব্যস্ত সময়ে এতে যাত্রী ও চালক উভয়েরই সুবিধা হয়।
নিকেতনের একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করা তানভীর সেলিমের রাইড শেয়ারিং-এর গল্পটি ঠিক তেমনই। পুরান ঢাকার বাসিন্দা ও ভিনটেজ স্কুটারপ্রেমী সেলিম প্রতিদিন নিজের ভেসপা স্কুটারে অফিসে যাতায়াত করেন। প্রথম রোজার দিন অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঘরে ফেরা কোন মানুষকে সহায়তার উদ্দেশ্যে তিনি ‘উবার ড্রাইভ’ অ্যাপটি ইনস্টল করেন। গন্তব্য হিসেবে ঠিকানা দেন তার আবাসস্থল পুরান ঢাকা। মুহূর্তের মধ্যেই তিনি যাত্রী হিসে্বে পেয়ে যান মোহাম্মদ বিলালকে যিনি নিকেতনের আরেকটি অফিসে কাজ করেন এবং পুরান ঢাকায় থাকেন।
বিলাল রমজানের প্রথম ইফতার ঘরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বিকেলের শেষ সময়ে যানজট এবং গণপরিবহন সংকটের কারণে তিনি চিন্তিত ছিলেন। সেলিমের সাহায্য পেয়ে, তিনি দ্রুত এবং নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে পারলেন। সেলিমের এই সহানুভূতি শুধু একটি আর্থিক লাভের ব্যাপার ছিল না, এটি ছিল একটি মানবিক উদ্যোগ। রমজান মাসে যেখানে অনেকেই শুধুমাত্র নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত, সেখানে সেলিমের মতো একজন মানুষ তার সময়ে অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসেন।
উবারের ‘ডেস্টিনেশন ফিল্টার’ ফিচারটি বিশেষভাবে রমজান মাসে অত্যন্ত উপকারী। এই ফিচারের মাধ্যমে রাইডাররা তাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যাত্রা করার জন্য এমন যাত্রীদের খুঁজে পান যারা একই পথ ধরে যাচ্ছেন। এতে যাত্রী এবং চালক উভয়ের জন্য সময় ও খরচের সাশ্রয় হয়। বিশেষ করে রমজান মাসে, যখন রাস্তায় যানজট এবং গণপরিবহন সংকট একে অপরকে আরও বাড়িয়ে দেয়, তখন এই ফিচারটি নিরাপদ এবং দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর উপায় হয়ে দাঁড়ায়।
তাছাড়া, রাইড শেয়ারিং অ্যাপগুলোর নিরাপত্তা ফিচারগুলো যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করে। উবারের মতো অ্যাপগুলোর লাইভ লোকেশন শেয়ারিং, ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট এবং ভেরিফায়েড চালকদের মাধ্যমে যাত্রীরা একটি নিরাপদ রাইড নিশ্চিত করতে পারেন। রাস্তায় রাইড নেওয়ার চেয়ে এই অ্যাপগুলোর মাধ্যমে রাইড বুক করা অনেক বেশি নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য। বিশেষ করে রমজান মাসে যখন সন্ধ্যার দিকে অনেকেই বাড়ি ফিরতে তাড়া করেন, তখন এই সিস্টেমটি নিশ্চিত করে যে তারা নিরাপদে এবং সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।