পবিত্র রমজানের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে নারীরা হাতে মেহেদি দিয়ে অল্পবয়সী মেয়েদের রোজা পালনে উৎসাহ দেন। এভাবে রমজান মাসকে স্বাগত জানানোর ঐতিহ্য চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। সৌদি আরবের উত্তর সীমান্ত অঞ্চলের এই রীতির কথা এখন সৌদিজুড়ে প্রশংসিত। এমনকি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এটা অনেকেই পালন করে থাকেন।
সৌদি সংবাদ সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, অনেক পরিবার রমজানের প্রথম রাতে তাদের মেয়েদের হাতে মেহেদি লাগানোর ব্যবস্থা করে। মেয়েরা মেহেদির সুন্দর সুন্দর নকশা দিয়ে তাদের হাত সাজায়। এই রীতি কোনো ধরনের চাপ ছাড়া শিশুদের রোজা পালনে সাহায্য করে।
আরার শহরের এক নারী উইজদান আল-আনজি বলেন, গত বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি রমজানের শুরুতে তার মেয়েদের হাতে মেহেদি লাগিয়ে আসছেন। এটি একটি সুন্দর ঐতিহ্য, যা মেয়েদের মনে করিয়ে দেয় যে; তারা প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে রমজানের পরিবেশের অংশবিশেষ।
আরেকজন নারী আফাফ আল-থাওয়াইনি বলেন, এই ঐতিহ্যের প্রভাব কেবল নান্দনিক দিক দিয়েই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি মেয়েদের হৃদয়ে ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধকে উৎসাহিত করে। এই ইতিবাচক পদ্ধতি শিশুদের কোনো চাপ ছাড়া রোজা রাখতে সাহায্য করে, যা তাদের এই বরকতময় মাসে রোজার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত করে।
তিনি আরও বলেন, এই সুন্দর ঐতিহ্য সৌদি আরবের উত্তর সীমান্ত অঞ্চলের মানুষের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিচয়ের অংশ। হাতের মেহেদি মেয়েদের মনে করিয়ে দেয় যে, তারা রোজা রাখছে এবং তারা খাবার বা পানীয়ের জন্য হাত বাড়াতে পারে না।
প্রসঙ্গত একটি মাসয়ালা বলে রাখা ভালো, রোজা অবস্থায় বড়রাও মাথায় মেহেদি ব্যবহার করতে পারবেন। অনেকেই বলেন যে, রোজা অবস্থায় মাথায় ঠান্ডা কোনো কিছু দেওয়া নিষেধ; এতে নাকি রোজা হালকা হয়ে যায়। এগুলো ভিত্তিহীন কথা।
মাসয়ালা হলো, রোজা রেখে মাথায় মেহেদি, তেল, শ্যম্পু ইত্যাদি দেওয়া যাবে। এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত কাতাদাহ (রহ.) বলেন, রোজাদারের তেল ব্যবহার করা উচিত, যাতে রোজার কারণে সৃষ্ট ফ্যাকাশে বর্ণ দূর হয়ে যায়। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক: ৭৯১২