অন্য কোনো নারী বা পুরুষ নয়, নারীর প্রতিযোগী সে নিজেই। নিজের ভালো গুণগুলো প্রকাশ করাই হোক প্রত্যেক নারীর লক্ষ্য। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সব নারীর উদ্দেশে এক বিশেষ বার্তায় এমন মন্তব্য করেছেন ‘বলিউড কুইন’খ্যাত অভিনেত্রী ও ভারতীয় সাংসদ কঙ্গনা রানৌত।
চার বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘নারী হিসেবে আপনার মধ্যে অনেক ভালো গুণ রয়েছে। সেগুলো খুঁজে বের করে তার প্রকাশ ঘটান। তবেই আপনি সার্থক নারী।’
অভিনেত্রী ও ভারতীয় সাংসদ কঙ্গনা রানৌত
এরপর পদ্মশ্রী কঙ্গনা বলেন, ‘আরো বেশি দয়ালু হোন। আপনার কথায়, আচরণে যেন আরো বেশি করে ভালোবাসা ঝরে পড়ে। কারণ, পৃথিবীর সব প্রাণী নারীর ভালোবাসা, দয়া, মায়া পাওয়ার অপেক্ষায় থাকে। এ কারণেই একজন শিশুর মাকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’
কঙ্গনার কাছে ‘দেবী’ আর ‘মা’ সমার্থক। তিনি নারীর মধ্যে ‘দেবী’ রূপ দেখতে পান। তার চোখে নারীশক্তিই প্রকৃত দৈবশক্তি।
অভিনেত্রী ও ভারতীয় সাংসদ কঙ্গনা রানৌত
অভিনেত্রীর যুক্তি, নিজেকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে নারীর ‘পুরুষালি’ হওয়ার দরকার নেই। প্রকৃতি নারীর মধ্যে নানা গুণ জন্ম থেকেই সাজিয়ে দেয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেসব গুণের যথাযথ প্রকাশ ঘটলেই নারী ‘সম্পূর্ণা’।
ইতিমধ্যে কঙ্গনার এই বার্তা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল। তার বক্তব্যকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছে নেটিজেনরা।
অভিনেত্রী ও ভারতীয় সাংসদ কঙ্গনা রানৌত
পর পর দেশের অন্যতম বড় দুই নারী তারকার ঠোঁটে কণ্ঠ ছিলেন সুরেলা কণ্ঠের জনপ্রিয় শিল্পী বাঁধন সরকার পূজা।
গেলো ভালোবাসা দিবসে মুক্তি পাওয়া মেহজাবীন চৌধুরীর ‘নীল সুখ’ ওয়েব ফিল্মে পূজা গেয়েছেন ‘বৈরী বাতাস’ শিরোনামের একটি গান। এবার গাইলেন আরেক আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণির জন্য। তবে এটি কোন সিনেমার গান নয়। পরীমণির নতুন বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল গেয়েছেন পূজা।
নতুন বিজ্ঞাপনচিত্রে পরীমণি
এই কাজটি নিয়ে পূজা বলেন, ‘রোজ শাওয়ার জেল-এর নতুন বিজ্ঞাপনচিত্রের জিঙ্গেল এটি। বন্ধু মার্সেল মিউজিক করেছে আর বিজ্ঞাপনচিত্রটিতে দেখা যাবে আমার খুব পছন্দের একজন অভিনেত্রী পরীমণিকে। খুব শীঘ্রই এটি প্রচার শুরু হবে।’
এদিকে ‘বৈরী বাতাস’ গানটি মুক্তির পর থেকে এর সুর ও গায়কীর জন্য প্রশংসা কুড়াচ্ছেন লুৎফর হাসান, শাহরিয়ার মার্সেল ও বাঁধন সরকার পূজা। লুৎফর হাসানের লেখা গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন মার্সেল। আর তাতে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী পূজার সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠ দিয়েছেন শাহরিয়ার মার্সেল।
বাঁধন সরকার পূজা
গানটি নিয়ে পূজা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘‘মানুষের মাঝে দেরীতে এলেও গানটির রেসপন্স আমাকে মুগ্ধ করেছে। ভালো গান হলে দর্শক-শ্রোতার কাছে পৌঁছবেই, সেটা যতো সময়ই লাগুক না কেন। গানটি গাওয়ার সময়ই মনে হয়েছিলো দর্শকের পছন্দ হবে। মার্সেল সাধারনত সুর আর সঙ্গীত করে, গানে কণ্ঠ দেয় না। কিন্তু এই গানটিতে সে গেয়েছে, এবং এতো চমৎকার গেয়েছে যে গানটি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে।’’
মেহজাবীন চৌধুরীর ‘নীল সুখ’ সিনেমার পোস্টার
পূজা আরও বলেন, ‘‘আমি ‘নীল সুখ’ দেখেছি বড়পর্দায়। তবে এখন আর সেই সুযোগ নেই। সবাইকে বলবো ভিকি জাহেদের মতো মেধাবী নির্মাতার কাজ, মেহজাবীনের মতো দক্ষ অভিনেত্রীর অভিনয় দেখতে হলেও আপনারা বিঞ্জে গিয়ে ‘নীল সুখ’ দেখুন।’’
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা বরাবরই চলমান ঘটনা নিয়ে নিজের মতামত দিয়ে থাকেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিয়মিত পোস্ট দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দেন এই অভিনেত্রী। এমনকি সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে স্ট্যাটাস দিতে দেখা যায় তাকে। সম্প্রতি দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে হঠাৎ করেই।
এরমধ্যেই এক ধর্ষকের জামিন পাওয়ার ঘটনায় ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিনেত্রী। এবার নারী দিবসের পোস্টেও নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন তিনি।
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা । ছবি: ফেসবুক
মিথিলা আজ সন্ধ্যা ৭টার সময় একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে। তিনি লিখেছেন, ‘ধর্ষণের শিকার ৮ বছর বয়সী কন্যা শিশু! কিন্তু এটি নতুন কোন ঘটনা নয়। এই অভাগা দেশে প্রতি বছর গড়ে ছ'শো থেকে হাজার খানেক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা মানে না বয়স, পোশাক, সামাজিক অবস্থান, ধর্ম, বর্ণ, জাত, পরিচয়। কখনো মানেনি, মানবেও না।‘
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা । ছবি: ফেসবুক
তিনি আরও লিখেছেন, ‘কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতার পালাবদলে কখনোই শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেনি, এখনো করে না। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচকের কাছে, ধর্ষণের সূচক অত্যন্ত নগন্য। তাই পিতৃতান্ত্রিকতার পতাকার তলে নারী দিবসকে প্রহসন মনে হয়। ধর্ষকের মৃত্যু চাই! ধর্ষণের বিচার চাই...‘
কর্মক্ষেত্রে অপি করিম একজন সফল নারী। অন্যান্য নারীদের পক্ষে কথা বলতে তিনি সবসময়ই সোচ্চার। তেমনি আন্তর্জাতিক নারী দিবসে পৃথিবীর সকল নারীর পক্ষে আবারও কথা বললেন তিনি।
একটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান তৈরি হওয়া একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে নারীদের নিয়ে কিছু ‘না-বলা সত্য’ বলেছেন এই অভিনেত্রী। তবে এটি প্রচলিত বিজ্ঞাপনচিত্র নয়। এখানে অপি শুধু মঞ্চে দাঁড়িয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীদের সঙ্গে ঘটে চলা বিভিন্ন সত্য তুলে ধরেছেন।
একইসঙ্গে এই বিজ্ঞাপনে অপি করিম সমাজের মানুষের কাছে ছুড়ে দিয়েছেন ৩টি প্রশ্ন!
অপি করিম । ছবি: ফেসবুক
১ম প্রশ্ন: নারী বললে প্রথমেই কী মাথায় আসে? সুপারওম্যান?
এরপর অপি বলেন, একজন নারী দক্ষ হাতে সামলান সংসার, মানুষ করেন সন্তান। অন্যদিকে চাকরির পাশাপাশি সামাজিকতাও রক্ষা করেন সমানতালে। নারীদের বিশেষকিছু তকমা দেওয়া হয়, যেমন- সুপারওম্যান, স্ট্রং, আনব্রেকেবল! এমনকি বলা হয়, সংসারে নারী আনে শান্তি। এমনকি পুরুষের তুলনায় দ্বিগুণ কাজ করেও তাদের শরীরে ক্লান্তি আসে না, এসব অহেতুক বোঝা কেন চাপিয়ে দেওয়া হয় নারীর কাঁধে? এমনকি সমাজের হাজারটা বোঝা চাপিয়ে দিয়ে বলা হয়, ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে।’
অপি করিম । ছবি: ফেসবুক
অপির ২য় প্রশ্ন: পুরুষদের কাজকে কেন এত আয়োজন করে বিশেষায়িত করা হয় না?
অপি বলেন, পুরুষের কাজ কেবল ঘরের বাইরে। অথচ ঘরে এত কাজ থাকে, সেটি পুরুষ বোঝেই না! পুরুষের মত ছুটির দিনে নারীদেরও একটু ঘুমাতে ইচ্ছে করে আরাম করে।
৩য় প্রশ্ন: জব, পরিবার, সংসারের দায়িত্ব, সঙ্গে আবার সবকিছু হতে হবে নির্ভুল! সব মিললে তবেই আদর্শ নারী! কেন নারীদেরকেই হতে হবে এতোটা যোগ্য? যে নারী শুধু ঘরের কাজ করেন, তার কেনো কোন গুরুত্ব নেই?
অপি নারীদের প্রতি যে বিশেষ বার্তা দেন সেটি হলো, ‘নারী বলেই, তোমাকে দুই হাতে সব সামলাতে হবে, এর কোনও মানে নেই। সুপারওম্যান হওয়ার দরকার নেই তোমার। তুমি হও তোমার মতো।’
অপি করিম । ছবি: ফেসবুক
সবশেষে অপি নারীদের প্রতি বলেন, “নারী মানেই এই না যে, সব কাজকে টিক মার্ক দিয়ে যেতে হবে। নারীর পাশে বসিয়ে দেওয়া সব স্ট্যান্ডার্ডকে ছুড়ে ফেলে তোমাকে ‘তুমি; হতে হবে।”